• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২১, ০৮:০৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৮, ২০২১, ০৮:১৬ এএম

নেইমার নৈপুণ্যে উড়ন্ত ব্রাজিল 

নেইমার নৈপুণ্যে উড়ন্ত ব্রাজিল 
পেরুর বিপক্ষে প্রথম গোলের পর ব্রাজিলের ফুটবলারদের উদযাপন। গেটি ইমেজ

নতুন স্টাইলে আবির্ভূত হওয়াটা নেইমারের জন্য মোটেও নতুন নয়। চুলের রঙ করাতে তার জুড়ি মেলা ভার। রূপালী রঙ ধারণ করে নেমেছিলেন মাঠে, হয়তো সেটাই তার জন্য হয়ে উঠল লাকি হেয়ার স্টাইল। তা না হলে পুরো ম্যাচজুড়ে কি দাপটটাই না দেখালেন, আর তাতেই যেন প্রতিপক্ষ পেরু হয়েছে দিশেহারা। মাঠের বাইরের বিশৃঙ্খল জীবনের জন্য মাঝে মাঝে আলোচনায় আসা নাম্বার টেন নিজের পারফর্মম্যান্স নিয়ে কতটা সিরিয়াস সেটি তিনি আবারো দর্শকদের রিও ডি জেরেইনোতে দেখালেন। একইসঙ্গে দেখাল পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। পেরুকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে কোপা আমেরিকার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা এবারো যেন শিরোপা জেতার পথেই এগিয়ে চলেছে দুরন্ত গতিতে।

যারা গোটা ম্যাচটি দেখেছেন তারা এক কথায় স্বীকার করতে বাধ্য, ৪-০ নয়, স্কোরলাইন হওয়ার কথা আরও অনেক বড়! সুযোগ বারবার হাতছাড়া না হলে নেইমারের হ্যাটট্রিক হতেই পারতো।  

শুক্রবার (১৮ জুন) বাংলাদেশ সময় সকালে শুরু হওয়া ম্যাচের ১১ মিনিটে এভারটনের অ্যাসিস্টে বল পেয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে পোস্টের থেকে বেশ উঁচুতে শট মেরে সুযোগ নষ্ট করেন ফ্রেড। পরের মিনিটেই অবশ্য সেলেসাওরা কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়ে যায়। গ্যাব্রিয়েল জেসুসের পাসে বল পেয়ে ডি বক্সে থাকা জটলার ভেতরেই ডান পায়ের শটে বল জালে জড়িয়ে নিজের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক গোল পান অ্যালেক্স সান্দ্রো।  

২৫ মিনিটে ব্রাজিল তাদের দ্বিতীয় গোলের দেখা পেয়েই গিয়েছিল। কর্নার কিক থেকে বল পেয়ে ফ্যাবিহোর নেয়া কিক এক ইঞ্চির ব্যবধানে পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। ২৭ মিনিটে প্রথম উল্লেখযোগ্য সুযোগ পায় পেরু। আলদো কোরজোর নেয়া কিক সেভ করেন ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এডারসন। তিন মিনিট পর এডারসন আবারো সেভ করেন। এ যাত্রায় তিনি মার্কস লোপেজের পাসে বল নিয়ে রেনাতো তাপিয়ার নেয়া ৩৫ গজ দূর থেকে নেয়া শট ঠেকিয়ে দেন।  

৩৯ ম্নিনিটে পেরু ম্যাচে সমতা এনেই ফেলছিল। গ্যাব্রিয়েল জেসুস প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের নেয়া কিকে বল নিজের বুক দিয়ে রিসিভ করে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন। কর্নার কিক থেকেও গতবারের রানার্সআপরা সুযোগ সৃষ্টি করেছিল ক্রিস্তিয়ান রামোসের হেড পোস্টের খুব কাছ দিয়ে চলে যায়।  নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা আরেকটি গোলের কাছাকাছি চলে গিয়েছিল। নেইমারের পাসে বল পাওয়া সান্দ্রোর শট অনেক উঁচু দিয়ে মাঠ পেরিয়ে যায়।  

বিরতির পর ৫২ মিনিটে স্বাগতিকরা দারুণ একটি গোলের দেখা পেয়ে যেতে পারতো। জেসুসের পাসে ডি বক্সের একদম কাছে দানিলো বল পেলেও তিনি উঁচুতে শট মেরে বসেন। আট মিনিট পর ডি বক্সের ভেতর তাপিয়ার সঙ্গে হালকা ধাক্কা লেগে নেইমার পড়ে গেলে রেফারি ব্রাজিলের পক্ষে পেনাল্টির সংকেত দেন। পরে অবশ্য ভিএআরের সাহায্য নিয়ে রেফারি পেনাল্টি বাতিল করেন, কারণ টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় তাপিয়া আসলে নেইমারকে ধরার চেষ্টা করেছিল। আর তাতেই নেইমার পড়ে যান! 

পেনাল্টি আদায়ের ব্যর্থ চেষ্টা করলেও নেইমার তার ডান পায়ের ঝলক দেখিয়ে ঠিকই লক্ষ্যভেদ করেন। ৬৮ মিনিটে ফ্রেডের বাড়িয়ে দেয়া বল নিয়ে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের কড়া মার্কিং থাকা অবস্থাতেই ডি বক্সের বাইরে থেকে নেয়া প্লেসিং শটে বল জালে জড়িয়ে ব্রাজিলিয়ান ওয়ান্ডার বয় নিজের জাত আবারো দেখিয়ে দেন।  

পাঁচ মিনিট পর নেইমারের বানিয়ে দেয়া বলে বাঁ প্রান্ত দিয়ে রিচার্লিসনের শট পেরুর গোলরক্ষক প্রতিহত করেন। দুই মিনিট পর নেইমার আরেকটি গোল পেতেই পারতেন। দানিলোর কাছ থেকে বল আদায় করে তার নেয়া শট পোস্টের একদম পাশ দিয়ে গড়িয়ে যায়। ৭৮ মিনিটে তাপিয়ার নেয়া হেড সেভ করেন ব্রাজিলিয়ান স্টার এডারসন। 

ম্যাচের ৮৪ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে নেয়া নেইমারের ফ্রি কিক আবারো অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। তিন মিনিট পর আবারো গোল মিসের দৃশ্য, এবার 
রিচার্লিসনের পাসে বল পেয়ে রবের্তো ফিরমিনোর শট পেরুর গোলরক্ষক বাধাগ্রস্ত করেন। 

ব্রাজিলের শেষের ঝড় প্রতিপক্ষ আর রুখতে পারেনি। ৮৯ মিনিটে রিচার্লিসনের পাসে বল পেয়ে ব্রাজিলের জার্সিতে প্রথম গোলের দেখা পেয়ে যান এভারটন রিবেইরো। চার মিনিট পর ফিরমিনোর নেয়া শট পেরুর গোলরক্ষক ঠেকালেও ফিরতি বলে টোকা মারেন রিচার্লিসন। সেটিও ফিরে আসলে কিছুটা শুয়ে পড়ে ডান পায়ে এবার ঠিকই রিচার্লিসন গোলের দেখা পান। 

এর আগে দিনের প্রথম ম্যাচে কলম্বিয়ার সঙ্গে গোলশুন্য ড্র করেছে ভেনেজুয়েলা।