• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০১৯, ০৬:১২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৯, ২০১৯, ১২:১৮ এএম

ঢাবির টিএসসিতে বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ ছবি সংরক্ষণ

ঢাবির টিএসসিতে বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ ছবি সংরক্ষণ

১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশের পরমবন্ধু ফরাসি লেখক-দার্শনিক এবং দ্য গল সরকারের মন্ত্রী ‘আঁদ্রে মার্লো’র সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি দূর্লভ ফটো উত্তোলন করা হয়েছে। ইতিহাসের ধারাবাহিকতা বজায় ও টিএসসিতে বঙ্গবন্ধুর শুভ পদার্পণ স্মরণ করার সেই ফটো বৃহস্পতিবার (১৮ই এপ্রিল) টিএসসির উপদেষ্টার অফিস কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করা হয়। উত্তোলন করেন টিএসসির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর।
 
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিএসসির উপ-পরিচালক ফারজানা বাসার, সহকারী পরিচালক সুস্মিত জামান, সহকারী পরিচালক নজীর আহমদ সিমাব, সহকারী পরিচালক(হিসাব) আতাউর রহমান আখন্দ, সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ মিয়া, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম, সেকশন অফিসার মো. মহিউজ্জামান, সহকারী পরিচালক (গ্রেড-২) ফুড সাদিয়া সবুর প্রমুখ। এ ছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। 
 
উত্তোলন পর্যায়ে সৌমিত্র শেখর বলেন, জাতির পিতা আমাদের চেতনার ধ্রুব তারকা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে যে স্থানে বিচরণ করেছেন তা ইতিহাসের অংশ। সেই স্থান স্মারকের মাধ্যমে অবশ্যই সংরক্ষিত হওয়া প্রয়োজন। টিএসসিতে বঙ্গবন্ধুর আগমনে আমরা গর্বিত। এই গর্ব প্রকাশ এবং ইতিহাস স্মরণ করার জন্য আজ আমরা টিএসসিতে বঙ্গবন্ধুর আগমনের ফটো আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করলাম। এতে টিএসসিতে যারা আসবে, সেই সব শিক্ষার্থী ও অন্যরা অনুধাবন করতে পারবেন, বঙ্গবন্ধুর পদধুলিতে পবিত্র অঙ্গনে তারা এসেছেন। এটিও গর্বের।
 
উল্লেখ্য, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের অনাবাসিক ছাত্রও ছিলেন। তবে রাজনৈতিকভাবে ফজলুল হক মুসলিম হলে তিনি অনেক সময় কাটিয়েছিলেন। রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামে রত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবন ও প্রান্তে ছাত্র ও যুব নেতা শেখ মুজিবুর রহমান বিচরণ ছিল অবারিত। 

দেশ স্বাধীন হবার পর ডাকসুর আমন্ত্রণে ১৯৭২ সালের ৬ই মে বঙ্গবন্ধু প্রথমবারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনে চ্যান্সেলর হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপস্থিত হবার কথা ছিল। কিন্তু ঘাতকের হাতে নির্মমভাবে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিহত হবার কারণে বঙ্গবন্ধুর ওইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হওয়া হয় নি। সেদিন কর্মসূচির মধ্যে টিএসসি মিলনায়তনে এসে বঙ্গবন্ধুর ছাত্র-শিক্ষকদের উদ্দেশে বক্তব্য প্রদানের কথা ছিল। তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর আবদুল মতিন চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশে মানপত্র পাঠ করবেন বলেও ঠিক ছিল। বঙ্গবন্ধু টিএসসি-তে এসে যে চেয়ারে উপবেশন করবেন তা বিশেষভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল। চেয়ারটি এখনো টিএসসিতে সংরক্ষিত আছে। 

১৯৭২ সালের পর একাধিকবার টিএসসিতে কর্মসূচি দিয়ে বা না-দিয়ে বঙ্গবন্ধু টিএসসিতে আসেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। কিন্তু তার দিনক্ষণ ইতিহাসে লিপিবদ্ধ নেই। বঙ্গবন্ধু টিএসসিতে আসার কোনো স্মৃতিময় ফটো টিএসসির কোথাও দেশনায়ক হিসেবে তাঁর প্রথম আগমনের (১৯৭২) পর এই ৪৭ বছরে রক্ষিত ছিল না। 

বঙ্গবন্ধু টিএসসিতে ১৯৭৩ সালে এসেছিলেন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশের পরমবন্ধু ফরাসি লেখক-দার্শনিক এবং দ্য গল সরকারের মন্ত্রী ‘আঁদ্রে মার্লো’র সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমন্ত্রণে তিনি বাংলাদেশ সফরে এলে তাঁকে টিএসসিতে বীরোচিত সংবর্ধনা দেয়া হয়। এসময় বঙ্গবন্ধু টিএসসিতে আসেন। অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের আগে টিএসসি প্রাঙ্গণে হেঁটে অগ্রসরমান বঙ্গবন্ধু, পাশে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী, ছাত্রনেতৃবৃন্দের একটি ফটো পাওয়া যায়। 

 এমআইআর/এসএইচএস