• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৮, ২০১৯, ০১:৩২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৮, ২০১৯, ০৭:৪৮ পিএম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় 

ঝুলে আছে শিক্ষার্থীদের ছাত্র সংসদের স্বপ্ন

ঝুলে আছে শিক্ষার্থীদের ছাত্র সংসদের স্বপ্ন

ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়ার পর থেকেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরাও স্বপ্ন দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের নানামুখী সমস্যা নিরসনসহ তাদের প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভূমিকা পালন করবেন এমনটাই শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন। কিন্তু দুঃখের বিষয় কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হলেও বর্তমান জবি আইনে ছাত্র সংসদের (জকসু) কোনো বিধানই রাখা হয়নি।

ডাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জোরালো হয়েছে। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়াও শুরু করেছে। সেই সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও আইন করে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেয়ার জোরালো দাবি জানায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানোর রহমান বলেন, যেহেতু অনেক বছর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে কোনো সংসদ ছিল না। আর নির্বাচনের যে প্রক্রিয়া তা অনেক বিস্তৃত। এ কারণে আমরা দেখতে চাচ্ছি ডাকসু নির্বাচনটা কেমন হয়, কী ধরনের সমস্যা হয় সবকিছু বুঝে শুনে আমরাও ডাকসুর আদলেই একটা ছাত্র সংসদ নীতিমালা আয়োজন করব। বিশেষ করে ডাকসু নির্বাচন হয়ে গেলে আমরাও একই আদলে গঠনতন্ত্র তৈরি করে তা একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে এটি পাস করে অনুমোদনের জন্য জাতীয় সংসদে পাঠাব।
 
গত ২১ মার্চ সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জবি শাখার নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে উপাচার্য জানায় জকসুর খড়সা প্রণয়নের কাজ চলছে। আগামী ১৬ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ তম সিন্ডিকেট সভায় ছাত্র সংসদ (জকসু) নিবাচনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।

গত বৃহস্পতিবার ১৬ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ তম সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয় । সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক পদে নিয়োগ ও পদোন্নতির জন্য পি এইচ ডি ডিগ্রি বাধ্যতামূলক করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদোন্নতির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার/ পরিচালক বা সমমানের পদে পদান্নতির মাধ্যমে কার্যকর হবে না। এছাড়া শিক্ষক শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৯ কোটি ব্যয়ে ১৪টি বাস ক্রয়ের প্রস্তাবসহ আরও কয়েকটি বিষয়ের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের বিষয়ে কোন আলোচনা হয়নি বলে জানান সিন্ডিকেট সভার এক সদস্য।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে জগন্নাথ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ১৮ বছর জগন্নাথ কলেজ ছাত্রসংসদ নির্বাচন হয়নি। সর্বপ্রথম ১৯৫৪ সালে জগন্নাথ কলেজ ছাত্রসংসদ (জকসু) এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে ভিপি এ.আর.ইউসুফ আর জিএস সালাউদ্দিন আহমেদ নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত জগন্নাথ কলেজ ছাত্রসংসদের ১০টি কমিটি নির্বাচিত হয়। স্বাধীনতার পরে ১৯৭২, ১৯৭৯, ১৯৮৬, ১৯৮৭ সালে আরও ৪টি ছাত্রসংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ১৯৮৭ সালের নির্বাচনে নির্বাচনে আলমগীর সিকদার লোটন ও জাহাঙ্গীর সিকদার জোটন নামে দুই ভাই ভিপি ও জিএস নির্বাচিত হন।

এর আগে জগন্নাথ কলেজ ছাত্রসংসদের ভিপি হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজু, ঢাকা-৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ এবং জিএস নির্বাচিত হন ঢাকা ৭ আসনের সাবেক সাংসদ ও ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন প্রমুখ।

জকসুর ব্যাপারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, আমরা চিন্তা করেছিলাম ঢাকসুর আদলে নীতিমালা করে নির্বাচন দেয়ার কিন্তু এমন করে যদি নির্বাচন দেই তাহলে কোন প্রার্থী পরাজিত হয়ে যদি মামলা করে তাহলে নির্বাচন বাতিল হয়ে যাবে। আমাদের যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্র সংসদের বিধান নেই তাই আগে ছাত্র সংসদের আইন করে নির্বাচন দেবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০তম সিন্ডিকেট সভায় জকসু নিয়ে আলোচনার ব্যাপারে তিনি বলেন সিন্ডিকেট সভায় জকসু নিয়ে আলোচনা হয়নি কারণ জকসুর খসড়া এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

একেএস