• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯, ০৯:২৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯, ০৯:২৪ এএম

‘উপাচার্যের পদত্যাগ’ দাবিতে প্রতিবাদমুখর তিন বিশ্ববিদ্যালয়

‘উপাচার্যের পদত্যাগ’ দাবিতে প্রতিবাদমুখর তিন বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পদত্যাগ দাবিতে ক্যাম্পাসে মিছিল - ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন করতে সুযোগ দেয়ায় পরীক্ষা ছাড়া চিরকুটে ভর্তি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণ নিয়ে ঘুষ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ফেসবুকে নিজের মতামত প্রকাশ করায় এক ছাত্রীকে বহিষ্কার করায় প্রতিবাদমুখর তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, উপাচার্যদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তাতে আর তারা ওই পদে থাকার অধিকার রাখেন না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেছে, কোনো ছাত্রকে পরীক্ষা ছাড়া চিরকুটের মাধ্যমে ভর্তি করা হয়নি। ছাত্রদের আন্দোলন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। উপাচার্যের পদত্যাগ করার মতো কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘুষ-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পদত্যাগের দাবিকে অমূলক আখ্যায়িত করে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বলেছেন, পদত্যাগর মতো কোনো অপরাধ তিনি করেননি।

আর গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিনের পদত্যাগের দাবির বিষয়ে তিনি শুক্রবার গণমাধ্যমকে বলেছেন, শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর কখনো কোনো শিক্ষার্থীর ফেসবুক বা ব্যক্তিগত মতামত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে না। তবে পদত্যাগের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে রাষ্ট্রপতি এবং শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় :
পরীক্ষা ছাড়াই ছাত্রলীগ নেতাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ দেয়ার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়াকে অনিয়ম ও দুর্নীতিগ্রস্ত করার অভিযোগে উপাচার্য ও ব্যবসায় অনুষদের ডিনের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা শুক্রবার বিকালে টিএসসি মোড়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করেছেন। তাদের দাবি- যারা অবৈধভাবে ভর্তি হয়েছেন তাদের ছাত্রত্ব ও ডাকসুর পদ বাতিল করে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে খালি পদগুলোতে দ্রুত উপনির্বাচন দেয়া এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম ও বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের পদত্যাগ করা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় :
উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এসময় সমাবেশ থেকে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পদত্যাগের দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোপালগঞ্জ) :
উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে কয়েকদিনের মতো শুক্রবারও জুমার নামাজের পর আন্দোলনকারী হাজারো শিক্ষার্থীর শ্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু চত্বরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, উপাচার্য পদত্যাগপত্র না করা পর্যন্ত তারা কোনোভাবেই আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াবেন না। শিক্ষার্থীরা জানান, এর আগেও কয়েকবার উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে তারা আন্দোলন করেছিলেন। প্রতিবারই আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েকজনকে বিভিন্নভাবে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৪টি সিদ্ধান্ত নিয়ে তা রেজিস্ট্রার মো. নুরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি আদেশে প্রকাশ করে। ওই আদেশের ৪ নম্বরে বলা হয়েছে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হবে এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ ছাড়া বহিষ্কার করা হবে না। আর সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে এনে অপমান করা হবে না। যে ফেসবুকে লেখালেখিকে কেন্দ্র করে এত কিছু, সে বিষয়ে আদেশের ১২ নম্বরে বলা হয়েছে, ফেসবুকে স্ট্যাটাস ও কমেন্টকে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হবে না।

এমএএম/ এফসি

আরও পড়ুন