• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০১৯, ০৯:৪২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ৯, ২০১৯, ০৯:৪৩ এএম

৮ দফা দাবির বেশিরভাগ পূরণ, তবু কেন আন্দোলন?

৮ দফা দাবির বেশিরভাগ পূরণ, তবু কেন আন্দোলন?
আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ-ছবি : সংগৃহীত

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে ৮ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন শুরু করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে দাবিগুলোর বেশিরভাগ পূরণ হলেও কেন কমছে না শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ? সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত বুয়েটের ভিসি সাইফুল ইসলামের ধীরে চলো নীতিই পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে।

শিক্ষার্থীদের ৮ দফা দাবিগুলোর মধ্যে ছিল-

১. খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

২. ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের শনাক্ত করে সবার ছাত্রত্ব আজীবন বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

৩. দায়েরকৃত মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি করতে হবে।

৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কেন ৩০ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় নি, তা তাকে সশরীরে ক্যাম্পাসে এসে মঙ্গলবার বিকাল ৫টার মধ্যে জবাবদিহি করতে হবে। একই সঙ্গে ডিএসডব্লিউ স্যারকেও একই দিন বিকাল ৫টার মধ্যে সবার সামনে জবাবদিহি করতে হবে।

৫. আবাসিক হলগুলোতে র‍্যাগের নামে ও ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর সকল প্রকার শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনকে জড়িত সকলের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে আহসানউল্লাহ হল এবং সোহরাওয়ার্দী হলের পূর্বের ঘটনাগুলোতে জড়িত সকলের ছাত্রত্ব বাতিল আগামী ১১ অক্টোবর বিকাল ৫টার মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে।

৬. রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে আবাসিক হল থেকে ছাত্র উৎখাতের ব্যাপারে অজ্ঞ থাকা এবং ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হওয়ায় শেরেবাংলা হলের প্রভোস্টকে ১১ অক্টোবর বিকাল ৫টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে।

৭. মামলা চলাকালে সকল খরচ এবং আবরারের পরিবারের সকল ক্ষতিপূরণ বুয়েট প্রশাসনকে বহন করতে হবে।

৮. ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।

৮ দফা দাবির মধ্যে অন্তত ৫ দফা এরই মধ্যে পূরণ হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারও করা হয়েছে। এমনকি আদালতের মাধ্যমে তাদের রিমান্ডেও নেয়া হয়েছে। লুকোচুরি শেষে বুয়েট ভিসি বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সামনে এসে দাবি পূরণে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ডিএসডব্লিউ স্যারও শিক্ষার্থীদের সামনে এসে একই ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

অভিযুক্ত শিক্ষার্ঘীদের ছাত্রত্ব বাতিলের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে বুয়েট প্রশাসন থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। আবরার ফাহাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়টি মেনে নেয়ার ঘোষণা যে কোনও সময় আসবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

জানা গেছে, আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য ছাত্রদেরই একটি অংশ ‘ছাত্র রাজনীতি বন্ধ ও সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠন’ নিষিদ্ধের দাবি সামনে নিয়ে আসার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আন্দোলনকারী ছাত্রদের এই অংশটি ‘সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠন’ হিসেবে কোনও ছাত্র সংগঠনের নাম নির্দেশ না করেই আন্দোলনের শুরুতে ঘোষিত ৮ দফার বাইরে নতুন নতুন দাবি যোগ করার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে।

রোববার (৬ অক্টোবর) রাত ৩টার দিকে বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই রাতেই হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, ফাহাদের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে সোমবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহত আবরারের বাবা বরকতউল্লাহ।

এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে এনেছে পুলিশ।

এইচএস/টিএফ/এসএমএম

আরও পড়ুন