• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০১৯, ০৬:০৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১৩, ২০১৯, ০৬:০৫ পিএম

ফাহাদ হত্যা

চার্জশিটে বুয়েট শিক্ষার্থীদের সন্তোষ প্রকাশ

চার্জশিটে বুয়েট শিক্ষার্থীদের সন্তোষ প্রকাশ
আবরার ফাহাদ - ফাইল ছবি
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি
ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাসহ শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় আদালতে দাখিলকৃত চার্জশিটে শিক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। গোয়েন্দাদের ধন্যবাদ জানিয়ে তারা পলাতক ৪ জনকে শিগগিরই গ্রেফতার করে কাঠগড়ার দাড় করানো দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মামলার চার্জশিটভুক্ত সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য বুয়েট প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন। আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে আদালতে চার্জশিট দাখিলের পর বিকালে বুয়েট ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের এমন তথ্য দিয়েছেন বুয়েটের মেকানিক্যাল বিভাগের শিক্ষার্থী আল দাইয়ান। 

শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কোনো রকম উচ্ছৃঙ্খল বা মাস্তানি মেনে নেয়া হবে না। আবরার হত্যা মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা আজ অথবা কাল বৃহস্পতিবার সকালে আলোচনায় বসব। আলোচনা শেষে আমরা গণমাধ্যমকর্মীদের আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি জানিয়ে দিব। 

সাংবাদিকদের উদ্দেশে আল দাইয়ান বলেন, আপনারা আমাদের জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। আমরা আপনাদের আহ্বান করব, দয়া করে কাল আপনার একটু ক্যম্পাসে আসবেন। 

তবে আবরার হত্যার চার্জশিট দাখিলের পর বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাসিমুখ দেখা গেছে। চার্জশিট নিরপেক্ষ হয়েছে। এ মামলাটি নিয়ে গোয়েন্দারা কাজ করেছে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। 

উপস্থিত একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা আপনাদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি, মামলাটি যেন দ্রুত বিচার আইনে নিয়ে তিনি দ্রুত নিষ্পত্তি করার ব্যবস্থা করেন।  

এদিকে দুপুরে আদালতে ফাহাদ হত্যামামলার চার্জশিট দাখিল করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপরই ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় মোট ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামি ১৯ জনের বাইরে ঘটনার তথ্য-প্রমাণে আরও ৬ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।

এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জন এবং এজাহার বহির্ভূত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অর্থাৎ, এ হত্যামামলায় অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং পলাতক রয়েছেন ৪ জন।

গ্রেফতার ২১ জনের মধ্যে ৮ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের জবানবন্দি, সাক্ষ্য-প্রমাণ, সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ২৫ জনের নামে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। চার্জশিটে ৩১ জনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে। এর মধ্যে শেরেবাংলা হলের ক্যান্টিনবয়, মৃত ঘোষণাকারী চিকিৎসক, সিকিউরিটি গার্ড, ফাহাদকে হাসপাতালে যারা নিয়ে গেছেন তারা, হল প্রভোস্ট এবং হলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অন্যতম।

এ মামলায় পলাতক ৪ জন হলেন, ট্রিপল-ই ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী জিসান, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ১৭ ব্যাচের তানিম, মেকানিক্যাল ১৭ ব্যাচের মোর্শেদ ও কেমিক্যাল ১৬ ব্যাচের মুজতবা রাফিদ।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ, তথ্যপ্রমাণ ও সাক্ষ্যের ভিত্তিতে ফাহাদকে মারধরের সঙ্গে সরাসরি ১১ জন জড়িত ছিলেন। বাকিরা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ঘটনার পরিকল্পনা এবং নির্দেশনার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে সম্পৃক্ত।

তদন্ত সংশ্লিষ্টদের তথ্য অনুযায়ী, আবরার ফাহাদকে সরাসরি মারধরে যে ১১ জন অংশ নেন তারা হচ্ছেন, বুয়েট ছাত্রলীগের সেক্রেটারি ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৩ ব্যাচের মেহেদী হাসান রাসেল, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৪ ব্যাচের মুহতাসিম ফুয়াদ, ১৫ ব্যাচের অনিক সরকার, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫ ব্যাচের মেহেদী হাসান রবিন, বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬ ব্যাচের ইফতি মোশারফ হোসেন সকাল, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫ ব্যাচের মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, ট্রিপল-ই বিভাগের ১৬ ব্যাচের মো. জিসান, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭ ব্যাচের শামীম বিল্লাহ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭ ব্যাচের তানিম, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭ ব্যাচের শামসুল আরেফিন রাফাত ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মুনতাসির আল জেমি। এই ১১ জনের মধ্যে জিসান ও তানিম পলাতক।

এইচ এম/ এফসি

আরও পড়ুন