• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০, ০৩:০৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০, ০৩:০৯ পিএম

আদনান তাসিন হত্যাকাণ্ড 

আসামীদের অব্যাহতি আদেশ ১৭ই সেপ্টেম্বর

আসামীদের অব্যাহতি আদেশ ১৭ই সেপ্টেম্বর
সেন্টজোসেফ ইংলিশ ভার্সন সায়েন্সের একাদশ শ্রেণীর মেধাবী শিক্ষার্থী আদনান তাসিন । ফাইল ছবি

আজ ১৫ই সেপ্টেম্বর ২০২০, আমার প্রান প্রিয় সন্তান সেন্টজোসেফ ইংলিশ ভার্সন সায়েন্স এর একাদশ শ্রেণীর মেধাবী শিক্ষার্থী আদনান তাসিন হত্যাকাণ্ডের বিচারহীনতার ৫৮০তম দিন। এই ৫০০ দিনে ঘাতকদের ধরা হলোনা, বিচারও হলনা! ভাইরাল না হওয়ায় আন্দোলন না হওয়ায় আজ পর্যন্ত জাস্টিজ পেলাম না, আর পাবো বলে মনে হয় না! আদনান তাসিন বিচারহীনতার প্রতিক। 

আমার প্রানপ্রিয় সন্তান আদনান তাসিন হত্যা পুলিশ মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে ঘাতকরা আবেদন করেছে, রায় ১৭ই সেপ্টেম্বর। তার মানে ঘাতকরা অব্যাহতি পেয়ে যাচ্ছে। কারণ, আমার তো কোটি কোটি টাকা নেই বছরের পর বছর মামলার পিছে দৌড়াদৌড়ি করে সন্তান বাচাঁতে পারলাম না চিকিৎসা দিতে পারলাম না বন্ধু সহপাঠীদের সহানুভূতি পেলো না প্রতিবাদ হলো না এখন শেষ পর্যন্ত বিচারটাও পেলাম না।

এটা একটা হত্যাকাণ্ড। তাকে শিক্ষার্থী পোশাকে দেখে "জেব্রা ক্রসিং" এর উপর হত্যা করে, ব্রেক করলেও বাসের নীচে থেকেও বেচে যেত, (২) বিকল্প না করে ফুটোভারব্রীজ সরিয়ে নিল, রস্তার মাঝখানের অংশ রোড ডিভাইডার সরিয়ে দেয়, সাদা রংঙের আলপনা আঁকে "জেব্রা ক্রসিং" নামে কোন পুলিশ নেই, সিগন্যাল নেই, স্পিড ব্রেকার নেই, শুধু রয়েছে মরণ ফাঁদ।

উল্লেখ্য, অন্যান্য দিনের মতো ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সকালে ফজরের নামাজের আযানের সাথে সাথে ঘুম থেকে উঠে ফযরের নামাজ পড়ে কোরআন তেলওয়াত করে কলেজের উদ্দেশে যাত্রা করে আদনান তাসিন। কিভাবে সেই অবুঝ শিশু বুঝবে এই যাওয়া শেষ যাওয়া। আদনান তাসিন সেন্ট জোসেফ থেকে ফেরার পথে দ্রুতগামি ব্রাম্মণবাড়িয়ার “উত্তরা পরিবহন” নামের ঘাতক বাস তাকে জেব্রা ক্রসিংয়ের উপর ঢাকা বিমান বন্দর সড়ক শেওড়া বাস স্ট্যান্ড (বর্তমান প্রস্তাবিত আদনান চত্বর) শিক্ষার্থীর পোশাকে দেখে ২৯শে জুলাই রমিজউদ্দিনে দিয়া-করিম আন্দোলনের কারণে ক্রোধে আক্রোশে ঘাতক তাকে ঠাণ্ডা মাথায় চাকায় পিষ্ট করে নৃশংস ভাবে হত্যা করে।

২০১৭ সালে হটাৎ করে আমি জিবিএস ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পুরো শরীর পারালাসেস হয়ে যায়। আমি শয্যাশায়ী, ডাক্তার , ঔষধ , ফিজিও, তার পরও মনোবল ভাঙ্গেনি, দুই সন্তানের কাঁধে ভর দিয়ে দাড়াঁতে শিখেছি, দুই সন্তানের উপর ভর করে হাটঁতে শিখছি, দুই সন্তানের উপর ভর দিয়ে নতুন করে বাঁচতে শিখছিলাম, বাবার হাত ধরে দাঁড়ানোর সৌভাগ্য অনেক সন্তানের হয় – কিন্তু, সন্তানের হাত ধরে দাঁড়ানোর সৌভাগ্য আমার হয়েছে। কিন্তু, হায়না শকুন ঘাতক আমার আদরের নিস্পাপ ছোট্টো সন্তানকে নির্মমভাবে খুন করে, যে সন্তান মানুষকে বাঁচতে শেখায়- সে নিজেই পৃথিবীতে থাকতে পারলো না। 

আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া করিতে পারিনি চিৎকার, আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া করিতে পারিনি চিৎকার বুকের ব্যথা বুকে চাপায়ে নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার। আমার কলিজার টুকরো নির্মমভাবে হত্যা হবার পর এখন পর্যন্ত নিত্যরাতে তার নিষ্পাপ আদুরী মধুমাখা বার বার চোখে ভেসে উঠে। ইছা হয় এখনি তাকে বুকে নিয়ে ঘুমাই। আর তার গর্ভধারিণী মা বার বার আঁচল দিয়ে চোখ মুছে- কোরআন তেলওয়াত নামাজ পড়ে নিষ্পাপ সন্তানের জন্য প্রাথনা করে ।

জাগরণ/এমএইচ

আরও পড়ুন