• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৯, ০৮:৫৭ এএম

‘রাজনৈতিক জটিলতায়’ হচ্ছে না শাবি ছাত্রসংসদ নির্বাচন

‘রাজনৈতিক জটিলতায়’ হচ্ছে না শাবি ছাত্রসংসদ নির্বাচন
শাকসু নির্বাচনের দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফন্টের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ


প্রায় দুই যুগ সময়েও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি  বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (শাকসু) নির্বাচন হয়নি। ফলে প্রযুক্তিগত দিকে এগিয়ে থাকলেও বেরিয়ে আসছে না যোগ্য নেতৃত্ব । রাজনীতিতে আসছে না মেধাবীরা। ছাত্রদের কল্যাণে এখন আর স্লোগান হয় না। জাতীয় রাজনীতিতে যোগ হচ্ছে না শাবি শিক্ষার্থীদের নাম। তুখোড় রাজনীতিবিদ তৈরির এই প্লাটফর্মকে সচল করতে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়ে আসলেও কোন সুফল পাওয়া যায়নি। হচ্ছে হবে করেই দুই যুগ পার হয়ে গেছে। তবে এবার ডাকসু নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় শাকসু নির্বাচনেরও জোর দাবি উঠেছে।

তবে শাবি কর্তৃপক্ষ বলেছে, ডাকসু নির্বাচন শেষ হলে আমরাও নির্বাচনের উদ্যোগ নেবো। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ ও প্রস্তুতি দুটোই আছে। যেকোনো সময় নির্বাচন হতে পারে। সিলেট অঞ্চলের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ২২ বছর আগে ১৯৯৭ সালের ২৫ আগস্ট ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছিলো। এই নির্বাচনে ছাত্রদলের পূর্ণ প্যানেল বিজয়ী হয়। ভিপি নির্বাচিত হন কামরুল হাসান কাবেরী ও জিএস নির্বাচিত হন আব্দুল্লাহ আল মামুন। নির্বাচনের পর বেশি দিন সচল থাকেনি ছাত্র সংসদ। দায়িত্বশীলদের শিক্ষাজীবনের সমাপ্তি ও কর্মজীবনে প্রবেশের কারণে বছর দুয়েক পরেই ঝিমিয়ে পড়ে রাজনীতিবিদ তৈরি হওয়ার এই প্লাটফর্ম। এরপর আর নির্বাচনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ার পেছনে কারণ হিসেবে রয়েছে দুই প্রধান ছাত্র সংগঠনের অন্তর্কোন্দল। 

সূত্র জানায়, শাবি ক্যাম্পাস ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিপর্যস্ত। এছাড়াও রয়েছে গ্রুপিং। দুই বছর আগে যেখানে শুধু ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপ ছিল, বর্তমানে সেখানে ছাত্রলীগের সাতটি গ্রুপ আছে। ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে শাবি প্রশাসনও দিশেহারা। 

সর্বশেষ ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০০২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। এই কমিটির মধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রাজু ব্যাতিত কারোরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব নেই। এরপর কাউন্সিলের মাধ্যমে আর কেউ নির্বাচিত হননি। পরবর্তীতে যে কমিটিগুলো এসেছে সে গুলোই কেন্দ্র থেকেই ঘোষিত। 

এদিকে শাবি ছাত্রদল বিভিন্ন গ্রুপ-উপগ্রুপের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিপর্যস্ত। সংঘাত সহিংসতায় ছাত্র রাজনীতির বলি হয়েছেন অনেকেই। ফলে দুই প্রধান ছাত্র সংগঠনের অস্থিতিশীলতার কারণে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কোনো পরিবেশ ছিল না। 

শাবিপ্রবির ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ বলেন, দীর্ঘদিন ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ার ফলে যোগ্য নেতৃত্বের সংকট রয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের স্বার্থে ছাত্র সংসদ নির্বাচন খুবই জরুরি।এই সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। সরকারের আমলে সিলেটের মন্ত্রী এমপিদের প্রচেষ্ঠায় শাবিতে অনেক উন্নতি হয়েছে । তবে ছাত্র সংসদ থাকলে বিভিন্ন কার্যক্রমে আরও গতিশীলতা বৃদ্ধি পেত। ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি দাওয়াগুলো পূরণের অন্যতম মাধ্যম ছাত্র সংসদ নির্বাচন এখন সময়ের দাবি। 
শাবি ছাত্রদলের সভাপতি এম এ রাকিব বলেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় ও আগামীর নেতৃত্বের কথা চিন্তা করে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়া জরুরি। তবে তার চেয়ে বেশি দরকার রাজনীতিতে সহাবস্থান ও সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করা। সহাবস্থান তৈরির পরে ছাত্র সংসদ গঠিত হলে এটি শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজে লাগবে। 

এ ব্যাপারে শাবি ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরাও চাই ছাত্র সংসদ নির্বাচন হোক। নির্বাচন না হওয়ায় যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে না। রাজনীতিতে মেধাবী ছাত্ররা আসছে না। দুঃখজনক হলেও সত্যি, এখন আর  ছাত্রদের কল্যাণে স্লোগান হয়না। স্লোগান হয় দলীয় স্বার্থ আদায়ে।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের সার্বিক প্রেক্ষাপটের কারণে নির্বাচন হচ্ছে না। তবে, ডাকসু নির্বাচনের পরে আমাদের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের একটা দাবি উঠেছে। আমাদের প্রস্ততিও আছে। যে কোনো সময় নির্বাচন হতে পারে।   
বিএস