• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৯, ০১:৫৮ পিএম

গ্যাস সিলিন্ডার বন্ধের ব্যাপারে অচিরেই সিদ্ধান্ত

গ্যাস সিলিন্ডার বন্ধের ব্যাপারে অচিরেই সিদ্ধান্ত
ওবায়দুল কাদের- ফাইল ছবি


দুর্ঘটনা এড়াতে গ্যাস সিলিন্ডার বন্ধের ব্যাপারে অচিরেই সিদ্ধান্ত আসছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে আহতদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা জানান ওবায়দুল কাদের।

সিলিন্ডার ব্যবহারের বিষয়ে সরকারের কোনো নির্দেশনা আছে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, সিলিন্ডারের ব্যাপারে আমি আমার মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পরামর্শ দিয়েছি। এই বিষয়টিতে একটা সমাধানে পৌঁছার জন্য। আমি এটাও বলেছি সিলিন্ডার যেহেতু এতো বিপদজনক অবস্থায় পৌঁছেছে সুতরাং এই সিলিন্ডার ব্যবহার না করাই ভালো। আমার মনে হয় অচিরেই একটা ব্যবস্থা হবে।

সিলিন্ডার বন্ধ হলে এর কোনো বিকল্প থাকছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বিকল্প নিয়েই আমি ভাবতে বলেছি। বন্ধ করে বিকল্প কি করা যায়, সেটার একটা প্রপোজাল নিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলেছি।

কাল বিলম্ব না করে কেমিক্যাল ফ্যাক্টরি বন্ধ করার নির্দেশনা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা চলে গেছে এবং ক্ষয়ক্ষতি যা হয়ে গেছে সেটা তো আর ফেরত দেয়া যাবে না। এখন ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে।

একটু মনিটরিং করলে হয়তো এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেতো উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এটা আরও আগে করা উচিৎ ছিল, করা হয়নি, তবে চেষ্টা ছিল। কিন্তু এটি ঘনবসতিপূর্ণ ঘিঞ্জি এলাকা, এখানের কেমিক্যাল গোডাউনগুলো আবার ভেতরে ভেতরে এসে জায়গা নিয়ে ফেলেছে। এখন প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব কেমিক্যাল গোডাউনগুলো সরিয়ে নেয়ার জন্য। মেয়র এ ব্যপারে পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছেন।

তিনি আরো বলেন, এখানে যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবার-পরিজনদের অনেকে সামর্থ্যবান ব্যক্তি, টাকা-পয়সা দিয়ে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে না। তারপরেও এ ব্যাপারে সরকার মানবিক। আর্থিক সাহায্য বা পুনর্বাসন এর ব্যপারে যা যা করনীয় প্রধানমন্ত্রী তার ব্যবস্থা নিয়েছেন।

কবে নাগাদ কেমিক্যাল গোডাউন বন্ধ হতে পারে এবং কোন কোন কেমিক্যালের গোডাউন বন্ধ হচ্ছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এখানে কেমিক্যালের যে গোডাউনগুলো আছে দ্রুত সেগুলো সরিয়ে নিতে হবে। এ ব্যপারে কোনো প্রকার গাফিলতি আরও বড় ক্ষতি ডেকে আনবে। দিনক্ষণ এভাবে বলা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী যেখানে নির্দেশ দিয়েছেন সেখানে দিনক্ষণের কি আছে। কোন কেমিক্যাল ক্ষতিকর কোনটা না সেটা মেয়র দেখবেন, ঝুঁকিপূর্ণ বা ক্ষতিকর কেমিক্যাল কী আছে সেটা বিশেষজ্ঞরা জানেন।

সরকার এই দূর্ঘটনার দায় এড়াতে পারে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুর কাদের বলেন, সরকার নাকে তেল দিয়ে ঘুমায় না, সরকার প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু কিছু গোডাউন সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে গোপনে এসে অনেকে জেঁকে বসেছেন। এটার ক্লোজ মনিটরিংটা হলে হয়তবা এমনটা হতো না, সেটা ঠিক আছে। যেহেতু সরকার ক্ষমতায় আছে, দেশে কিছু ঘটলে তার দায়তো সরকার এড়াতে পারবে না। কিন্তু জনসাধারণ যারা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তাদেরও সচেতনতার দরকার। কারণ তাদের এখানে জীবিকার চেয়ে জীবনের ঝুঁকি বেশি। সেখানে আরও সচেতনতার, সতর্কতার ব্যাপার ছিল।

এসময় হাসপাতালে দর্শনার্থীদের ভিড় না করার পরামর্শ দেন ওবায়দুল কাদের।

কেমিক্যাল থেকে আগুন ছড়ায়নি শিল্পমন্ত্রীর এমন বক্তব্যকে কিভাবে নিচ্ছেন জানতে চাইলে ওবায়দুর কাদের বলেন, আমি পত্রিকার যা দেখেছি তিনি বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত সিলিন্ডার থেকে হয়েছে। তিনি বলেননি যে কেমিক্যালের কারণে আগুন ছড়ায়নি।

সরকারের দায়িত্বহীনতায় চকবাজারে অগ্নিকাণ্ড বিএনপি মহাসচিবে এমন বক্তব্যের জবাব জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির মহাসচিব কি বলেছেন সেটা না বলে আমি একটা কথা বলতে চাই, যে দুর্ঘটনা হয়ে গেছে এটা নিয়ে প্রত্যেকেরই দায়-দায়িত্ব আছে, নাগরিক হিসেবে সবাইকে পজেটিভ কিছু করতে বলবো। রাজনৈতিক দল হিসেবে এতগুলো লোকের প্রাণহানিকে পুঁজি করে আমাদের কারও রাজনীতি করা উচিত না। আর যাই করুন এটিকে রাজনীতিতে নিয়ে আসবেন না।

এএইচএস/সাইসে