• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৯, ০৮:১৩ পিএম

জেনে নিন ভারতের সামরিক সক্ষমতা

জেনে নিন ভারতের সামরিক সক্ষমতা

 

পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা ভারতকে। গোটা ভারত এখন পাকিস্তান বিরোধী ক্ষোভে উত্তাল। অবিলম্বে প্রত্যাঘাতের দাবি উঠেছে দেশে। কিন্তু প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের প্রত্যাঘাত ঠেকানোর নানা প্রস্তুতি পাকিস্তান নিয়ে রেখেছে এখন। এক ঝলকে দেখে নিন, ভারতীয় বাহিনীর কোন কোন সক্ষমতার কোনো জবাব নেই পাকিস্তানের কাছে।

নরেন্দ্র মোদী সরকার আসার পর থেকে সেনাবাহিনীর শক্তির ওপর বিশেষ জোরও দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি সামরিক শক্তির দিক থেকে কোন দেশ কতটা এগিয়ে তা নিয়ে ১০টা সেরা দেশের সেনাবাহিনীর নাম প্রকাশিত হয়েছে। এক্ষেত্রে আমেরিকা সব থেকে এগিয়ে রয়েছে। আমেরিকা দেশ সামরিক ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি (প্রায় ৪০ লাখ কোটি টাকা) টাকা খরচ করে এবং আমেরিকার কাছে প্রায় ১৫ হাজার মতো যুদ্ধ বিমানও রয়েছে। এরপরেই দ্বিতীয় সবচেয়ে বেশি সামরিক শক্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে রাশিয়া। ১৪৫০০ ট্যাংক ও ৮৫০০ পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার পর তৃতীয় স্থানে রয়েছে চীন। যাদের রয়েছে ২২ লাখ সীমান্ত বাহিনী ও ২৪ লাখ রিজার্ভ বাহিনী নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্থল বাহিনী ও তৃতীয় শক্তিশালী সামরিক সেনা গঠন করেছে চীন। ভারত রয়েছে চতুর্থ স্থানে। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে প্রায় ৩৫০০ ট্যাংক এবং ১৭৮৫ টি যুদ্ধবিমান এবং ৩৫ লাখ সেনা রয়েছে। সবচেয়ে বড়ো ব্যাপার ভারতের কাছে আধুনিক মিসাইলের ভাণ্ডার রয়েছে। ভারতের পর যথাক্রমে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, তুর্কি, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান রয়েছে। তবে, প্রথম ১০ পাকিস্তানের কোনো অবস্থানই লক্ষ করা যায়নি।

ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে এই মুহূর্তে রয়েছে সুখোই-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান। এই টুইন ইঞ্জিন, মাল্টিরোল ফাইটার জেটটি পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষিপ্র এবং বিধ্বংসী ফাইটার জেটের অন্যতম। মূলত রাশিয়াতেই তৈরি এটি। এই যুদ্ধবিমান থেকে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার বন্দোবস্তের পর যুদ্ধবিমানটি গোটা বিশ্বের কাছেই সমীহের বিষয় হয়ে উঠেছে।

পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগামী ক্রুজ মিসাইল ব্রহ্মস রয়েছে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে। ব্রহ্মস— ভারত ও রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি। বাতাসে শব্দের যা গতিবেগ তার চার গুণ বেগে লক্ষ্যবস্তুর দিকে ছুটে যেতে সক্ষম ব্রহ্মস। ফলে র‌্যাডারে ধরা পড়লেও মাঝ পথে তাকে রোখা খুব কঠিন।

ভারতীয় নৌসেনায় রয়েছে পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ আইএনএস চক্র। রাশিয়ার কাছ থেকে ভারত লিজে নিয়েছিল এই নিউক্লিয়ার সাবমেরিন। এতে সংযুক্ত আছে জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ও টর্পেডো। এ ছাড়া শত্রুপক্ষের জলসীমায় গোপনে হানা দেওয়া, নজরদারি চালানো, অতর্কিতে হামলা চালানো এবং মাইন রেখে আসার সক্ষমতাও রয়েছে এই ডুবোজাহাজের।

ভারতীয় নৌ সেনায় রয়েছে পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ আইএনএস চক্র। রাশিয়ার কাছ থেকে ভারত লিজে নিয়েছিল এই নিউক্লিয়ার সাবমেরিন। এতে সংযুক্ত আছে জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ও টর্পেডো। এ ছাড়া শত্রুপক্ষের জলসীমায় গোপনে হানা দেওয়া, নজরদারি চালানো, অতর্কিতে হামলা চালানো এবং মাইন রেখে আসার সক্ষমতাও রয়েছে এই ডুবোজাহাজের।

আইএনএস চক্রেই অবশ্য শেষ নয়। তার চেয়েও অনেক শক্তিশালী এবং আধুনিক নিউক্লিয়ার সাবমেরিন এখন ভারতীয় নৌ সেনার হাতে রয়েছে। সেটির নাম হল আইএনএস অরিহন্ত। ভারতে তৈরি এই পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ হল ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন। শুধু টর্পেডো নয়, কে-৪-এর মতো সাবমেরিন লঞ্চড ব্যালিস্টিক মিসাইল দিয়ে ৩৫০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে পরমাণু আক্রমণ চালাতে সক্ষম অরিহন্ত।

ফ্যালকন রাডার ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর অন্যতম উল্লেখযোগ্য সক্ষমতা। ইজরায়েলে তৈরি এই ফ্যালকন রাডার সিস্টেম পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী বা সক্ষম রাডারগুলির মধ্যে অন্যতম। ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাক্টিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যানিং অ্যারে হল এই রাডারের অন্যতম বৈশিষ্ট। আকাশপথে প্রতিপক্ষের হামলা যে দিক থেকেই আসুক, এই রাডারের নজর এড়ানো কঠিন।

বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রমাদিত্য শত্রুপক্ষকে সহজেই ঘায়েল করতে সক্ষম। বিক্রমাদিত্যের মতো সুবিশাল রণতরী থেকে আক্রমণ চালিয়ে করাচির মতো বিরাট বন্দরকে অচল করে দিতে বেশ সময় লাগে না। এই রণতরীর এয়ার উইং গঠিত হয়েছে মিগ-২৯ এবং তেজসের মতো যুদ্ধবিমান নিয়ে। অ্যান্টি-সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার হেলিকপ্টারও থাকে আইএনএস বিক্রমাদিত্যে। এই রণতরী থেকে ক্ষেপণাস্ত্রও ছোড়া যায়।

আইএনএস কলকাতার মতো ডেস্ট্রয়ার গোত্রের রণতরী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে আরও পারদর্শী। অ্যান্টি এয়ার, অ্যান্টি শিপ এবং অ্যান্টি সাবমেরিন মিসাইলে সুসজ্জিত কলকাতা ক্লাস ডেস্ট্রয়ারগুলি প্রতিপক্ষের যুদ্ধবিমান বা হেলিকপ্টারকে, প্রতিপক্ষের যুদ্ধজাহাজকে এবং প্রতিপক্ষের ডুবোজাহাজকে ধ্বংস করতে সক্ষম।

নাগ মিসাইল ক্যারিয়ার : বিশাল মরুপ্রান্তর দিয়ে যদি হানা দেয় শত্রুপক্ষের ট্যাঙ্ক, তা হলে রুখে দেবে নাগ। অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল (এটিজিএম) নাগকে ভূমি এবং আকাশ, দুই জায়গা থেকেই ছোড়া যায়। প্রতিপক্ষের ট্যাঙ্কই মূলত এই ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্য। লঞ্চিং প্যাড থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে থাকা ট্যাঙ্ককেও নিমেষে গুঁড়িয়ে দিতে পারে নাগ।

ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম 'পৃথ্বী' হল ভারতের অন্যতম সক্ষমতা। আকাশপথে আসা যে কোনও ধরনের হামলার আগাম খবর রাডারে ধরা পড়া মাত্র এই মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম সক্রিয় হয়। যুদ্ধবিমান বা হেলিকপ্টার বা ক্ষেপণাস্ত্র, যে কোনও লক্ষ্যবস্তুকে আকাশেই ধ্বংস করে পৃথ্বী।

পিনাকা এমএলআরএস : ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) তৈরি করেছে একাধিক রকেট উৎক্ষেপক পিনাকা। এর পাল্লা ৭০ কিলোমিটার। এই রকেটের দাম ৪০ কোটি টাকা। পিনাকা মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চার সিস্টেম দেশীয় অস্ত্র। ডিআরডিওর সঙ্গে যৌথ ভাবে এটি তৈরি করেছে পুণের আর্মামেন্ট রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এস্ট্যাব্লিশমেন্ট।


এএইচ ৬৪ অ্যাপাশে হেলিকপ্টার : গেরিলা যোদ্ধাদের ওপর হামলায় মোক্ষম অস্ত্র এই কপ্টার। এটি ঘণ্টায় ১৭১ মাইল গতিতে ওড়ে,পাহাড়ি এলাকায় অভিযানে পারদর্শী। এতে আছে ১২.৭ মিমি মেশিনগান, গোলা থেকে সুরক্ষিত ককপিট। রাডার সিস্টেম মুহূর্তে ১৬টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করতে পারে। এক সঙ্গে চারটি ‘হেলফায়ার মিসাইল’ নিক্ষেপেও সক্ষম।

সূত্র : আনন্দবাজার 

জাহো/এসএমএম