• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৯, ০২:৩৬ পিএম

তারেক রহমানকে ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্টে জিজ্ঞাসাবাদ

তারেক রহমানকে ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্টে জিজ্ঞাসাবাদ
তারেক রহমান-ফাইল ছবি

 

বাংলাদেশে আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে লন্ডনে ৪ ঘণ্টাব্যাপী জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যুক্তরাজ্য পররাষ্ট্র দফতরের সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমানকে বাংলাদেশে ফেরানোর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তাকে এই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার দণ্ডিত তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ব্রিটিশ সরকারের কাছে একাধিকবার আবেদন করেছে এবং এ নিয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য পররাষ্ট্র দফতরের কূটনৈতিক তৎপরতা নতুন করে জোরদার হয়েছে। 

ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্টে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও নবগঠিত পররাষ্ট্র বিষয়ক ফোরাম ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জাগরণকে বলেন, এসব হচ্ছে বর্তমান সরকারের মিথ্যা অপপ্রচার ও প্রপাগান্ডা। এ সব বিষয়ের কোনো ভিত্তি নেই।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দফতরের প্রত্যাশা, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া আরও অগ্রগতি হয়েছে। যে কোনো সময় তাকে দেশে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকারের ইতিবাচক সম্মতিরও প্রত্যাশা আওয়ামী লীগ সরকারের। তারই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) তারেক রহমানকে ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা ৪ ঘণ্টাব্যাপী জিজ্ঞাসাবাদ করেন। 

সূত্রে জানা গেছে, ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্টের জিজ্ঞাসাবাদে ৪টি বিষয়কে সামনে রাখা হয়। এর মধ্যে তারেক রহমান লন্ডনে কীভাবে চলছেন, তার টাকার উৎস কি, কোথা থেকে আসছে? 

২০০৭ সালে তারেক রহমান উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য যান। তখন থেকেই তিনি লন্ডনে অবস্থান করছেন। লন্ডনে তার জ্ঞাত আয়ের কোনো উৎস নেই। কিন্তু তিনি বিলাসি জীবনযাপন করছেন বলে মনে করা হয়। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতরের জিজ্ঞাসা, একজন রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে তিনি কীভাবে আয়েশি জীবনযাপন করেন? জবাবে তারেক কি বলেছেন সে ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।  

তারেকের কাছে জানতে চাওয়া হয়, একজন রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা ব্যক্তি হয়ে তিনি ( তারেক) কেনো রাজনৈতিক তৎপরতায় জড়িয়ে পড়েছেন। বাংলাদেশে বিগত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিনি রাজনীতিতে প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা রেখেছেন। তিনি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রক্রিয়া মনিটর করেছেন। স্কাইপের মাধ্যমে মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। মনোনয়ন বোর্ডের সভায়ও তিনি একই প্রক্রিয়ায় লন্ডন থেকে সভাপতিত্ব করেছেন। নির্বাচনের পরও তিনি দলের নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে এবং স্কাইপে কথা বলছেন। 

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে তারেক রহমানই বিএনপিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। একজন রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী অন্যদেশের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে রাজনৈতিক তৎপরতায় ভূমিকা কিভাবে রাখে সেটা নিয়ে ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্ট প্রশ্ন তুলেছে। 

তৃতীয়ত, তারেক রহমানকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশ সরকার যে আবেদন  করেছে, সেখানে সরকার সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে, উপমহাদেশীয় জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে তারেক রহমানের সম্পর্ক রয়েছে। এ ব্যাপারে কিছু তথ্য প্রমাণ সরকারের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতরে দেয়াও হয়েছে। ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্ট তারেকের কাছে এ ব্যাপারেও জানতে চেয়েছেন। 

তারেক রহমানের সঙ্গে পাকিস্তান দূতাবাসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে বাংলাদেশ সরকারের এমন অভিযোগ সম্পর্কেও ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্ট জানতে চেয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছেন। হোম ডিপার্টমেন্টের প্রশ্ন বাংলাদেশের একজন নাগরিক লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থেকে পাকিস্তান দূতাবাসের সঙ্গে কী বিষয়ে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকেন। 

সূত্র জানায়, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য সরকারের চেষ্টার এটা দ্বিতীয় ধাপ।জিজ্ঞাসাবাদের পর তারেক রহমানের বক্তব্যগুলো ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তাদের কাছে সন্তোষজনক না হয় তাহলে তাকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার আনুষ্ঠানিক তৎপরতা শুরু হবে বলে জানা গেছে।

টিএস/এসএমএম