• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৯, ০৩:৪৮ পিএম

প্রবাসে-পার্বণ

প্রবাসে-পার্বণ
‘মোহনা’র পিঠা উৎসব

 

জীবিকার সন্ধানে সোনালী আঁশের বাংলাদেশ ছেড়ে বহুদূরে দেশ-দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়েছেন বাঙালিরা। তাদের ভেতরে আমিও বাংলাদেশি। স্বামী রেজা হায়াত আর মেয়ে জয়ী হায়াতকে নিয়ে বাস করি ইউএসএ-র ওকলাহোমা প্রদেশের ছোট শহর ‘তালসায়’।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি ‘মোহনা’ নামের ছোট একটা জনগোষ্ঠীর আয়োজনে ছিল পিঠা উৎসব। সব সময় না পারলেও প্রবাসী বাঙালিরা চেষ্টা করেন বারো মাসে তেরো পার্বণের কিছুটা পালন করতে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পহেলা বৈশাখ, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা, একুশে ফেব্রুয়ারি ও পিঠা-পুলি উৎসব।

দেশ ছেড়ে যোজন-যোজন ভৌগলিক দূরত্বে বাস করলেও নিঃশ্বাসে বিশ্বাসে বাঙালি লালন করে বাঙালি কৃষ্টি কালচার। নামের বাহারে, রঙের আড়ম্বরে, শৈল্পিক সুবিন্যস্ত সৌন্দর্য্যে অনবদ্য ছিল ‘মোহনার’ পৌষ উৎসব।

রাত-দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে সব আমন্ত্রিতদের মুখে পিঠা তুলে দিয়েছেন রাশিদা আন্টি, নাজমা আন্টি ও তাদের দুই সুযোগ্য কন্যা নাহিদা সুলতানা পপি আর সুমা নাসরিন লিজা। পিঠা বানিয়ে আন্তরিক সহযোগিতা করেছেন মুন্নি ভাবী।

পিঠার তালিকায় ছিল- রসের পুলি, ভাপা পিঠা, বিবিখানা, মুগপাকান, হৃদয়হরণ, তেলের পিঠা, সন্দেশ, খেজুর পিঠা, ঝিলিমিলি, ফুলকুরি, ডিমের পিঠা, পানতোয়া, গজা, মনোহরণ ও নারকেল পুলি।

নিপুণ শৈল্পিক দক্ষতায় ‘মোহনা পিঠা উৎসব’ প্রচ্ছদ করেছিলেন মোহনার সদস্য জাকির হোসেন ও লিজা। জনসংযোগ ও নিমন্ত্রিতের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন সদাহাস্যময় দুই দম্পত্তি হাসান ইমাম শামীম ও তার স্ত্রী পপি এবং জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী লিজা।

পিঠাতেই শেষ নয়। রসনা বিলাসী বাঙালির উৎসব মহৎ হয় মাছে-ভাতে। ভাত-মাছ,ডাল,মাংস আর ডিম ভুনার আয়োজনে ছিলেন শাম্মী, লিজা, মুন, রুনি, সারমিন, মুন্নি, সাহানা, সেলি, শুক্লা, মিনি, তনুজা, লিথি আর লিপি।

রসনার তৃপ্তি শেষে মনোরঞ্জন। বাংলা গানে মুখরিত ছিলো শেষের ঘণ্টা। চিরাচরিত বাংলা লোকসংগীত পরিবেশনায় ছিলেন রবিউল ইসলাম। অন্যান্য গানে ছিলেন হিমেল, মোহন, শামীম, জাকির। আরিফ-মুনের মেয়ে ছোট পাখি ‘পূর্ণতার’ মোহনীয় মূর্ছনায় রবীন্দ্রসংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হয়েছে।

বিদেশের মাটিতে বসেও এ ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে সত্যিই পাওয়া যায় ভিন্ন স্বাদের আনন্দ। বুকভরে নিঃশ্বাস নিয়ে বলতে ইচ্ছে করে, বাংলা মাগো বিদেশের মাটিতে বসেও ভুলতে চাই না তোমার কোল-তোমার কোল। কাজের শেষে ক্লান্তদেহে ঘরে ফিরে- নিত্যই চাই মোটা ভাতের মাছের ঝোল!!


তালসা, ওকলাহোমা

 

 

  • প্রবাস এর আরও খবর