• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৬, ২০২১, ১০:০৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৭, ২০২১, ০২:১৯ পিএম

হামাসের পরিচয় ও উদ্দেশ্য কী?

হামাসের পরিচয় ও উদ্দেশ্য কী?

২০০৭ সাল থেকে ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে গাজা উপত্যকাকে নিয়ন্ত্রণ করছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। ইসলামপন্থী এই গোষ্ঠীর মূল নাম ‘হরকাত আল-মুকাওয়ামা আল-ইসলামিয়া’ তথা হামাস। আরবি ভাষায় ‘হামাস’ শব্দের আভিধানিক অর্থ সাহস বা উদ্যম।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা দেশগুলো হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করে। তবে অনেক সংবাদমাধ্যম একে ‘ইসলামী সংগঠন’, ‘বিদ্রোহী গোষ্ঠী’ ও ‘স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র বাহিনী’ হিসেবে উল্লেখ করে। এদিকে নরওয়ে এবং সুইজারল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশ ইসরায়েল ইস্যুতে নিরপেক্ষ অবস্থানে নেয় এবং হামাসের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখে। কাতার, তুরস্ক, ইরানসহ মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গেও হামাসের কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে।

হামাসের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
৮০’র দশকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় আত্মপ্রকাশ করে হামাস। নীতিগতভাবে শুরু থেকেই প্রয়াত ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতের স্বাধীনতাপন্থী সংস্থা, পিএলও এর বিরোধিতা করে আসছে দলটি। জেরুজালেমের আল- হারাম শরিফের গম্বুজ আর তরবারির প্রতীকসহ পতাকায় ইসরায়ালের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগ্রামের নেতৃত্ব দেয় হামাস। এমনকি ইসরায়েলের অধিকৃত সকল অঞ্চল, গাজা এবং পশ্চিম তীরের ভূখণ্ডকে একক ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হিসাবেও দাবি করে থাকে দলটির নেতারা।

প্রথম দিকে পিএলওকে দুর্বল করতে ইসরায়েল হামাসকে অর্থায়ন করছে এমন অভিযোগ উঠলেও তা অস্বীকার করে তারা। পিএলও অনেক ক্ষেত্রে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সহাবস্থানের পক্ষে সমর্থন জানালেও, শুরু থেকেই ইসরায়েলের অস্তিত্বকে অস্বীকার করছে হামাস। ১৯৯৩ সালে প্রেসিডেন্ট আরাফাত ইসরালের সঙ্গে অসলো চুক্তির মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিলে হামাস সেটি প্রত্যাখ্যান করে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।

 

তেল আবিবে হামাসের সাম্প্রতিক হামলার ছবি

হামাসের মূল উদ্দেশ্য কী?
২০০৬ সালে গাজার সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে হামাস। ২০০৭ সালে গোটা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ পায় দলটি। সেসময় পশ্চিম তীরের একটি অংশ প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মাঝারি ফাতাহ দলের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, সমগ্র গাজা অঞ্চল হামাসের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এরপর থেকে ফিলিস্তিনিদের ‘আত্মরক্ষা’ ও ‘স্বাধীনতার’ দাবিতে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ অব্যহত রেখেছে হামাস। ২০০৮-০৯, ২০১২ এবং ২০১৪ সালে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র যুদ্ধে জড়ায় দলটি। ২০২১ সালের মে মাসে পূর্ব জেরুজালেমে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে আবারও সংঘাতে জড়িয়েছে দুপক্ষ।

হামাসের পৃষ্ঠপোষক কারা?
হামাসের সবচেয়ে প্রধান সমর্থক, অর্থের যোগানদাতা এবং মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের দেশ কাতার। ২০১২ সালে প্রথম রাষ্ট্রনেতা হিসেবে হামাসের সঙ্গে বৈঠক করেন কাতারি আমির শেখ হামাদ বিন খলিফা আল-থানি। এ পর্যন্ত হামাসকে প্রায় ২০০ কোটি ডলার অর্থায়ন করেছে দেশটি। যদিও আরব আমিরাতের কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় আব্রাহাম অ্যাকর্ডের মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে।

এছাড়াও হামাসের আরেক সমর্থক তুরস্ক। সম্প্রতি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের রকেট হামলারও সমর্থন জানান তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। জার্মানির পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের ফিলিস্তিনি সংগঠন ও অনান্য গোষ্ঠী হামাসকে অনুদান দিয়ে থাকে। এছাড়াও হামাসকে ক্ষেপণাস্ত্রসহ, সমরাস্ত্র প্রযুক্তি দিয়ে সহায়তা করে ইরান। ফিলিস্তিনের অনান্য গোষ্ঠীগুলোও হামাসকে অস্ত্র সহায়তা দেয়। সুদান এবং মিশরের মাধ্যমেও গাজায় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র পাচার হয়ে থাকে।

তথ্যসূত্র: ডয়চে ভেলে, বিবিসি ও ইন্টারনেট

আরও পড়ুন