• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০১৯, ১১:৪৫ এএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২১, ২০১৯, ১১:৪৭ এএম

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা

‘সেই দিন নেত্রী না বাঁচলে, আমরা কেউ বাঁচতাম না’

‘সেই দিন নেত্রী না বাঁচলে, আমরা কেউ বাঁচতাম না’

ইতিহাসের বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলাটি ঘটে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। ওই গ্রেনেড হামলার ভয়াবহ স্মৃতি স্মরণ করে এখনও আঁতকে উঠেন সেই সময়ে হামলার শিকার আহতরা। ভয়াবহ সেই গ্রেনেড হামলার আঘাত এখনও তারা নিজ শরীরে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন। সেই স্লেন্টারের যন্ত্রণায় এখন প্রতি রাতে যন্ত্রণা দেয় তাদের। ২১ আগস্টেও স্মৃতি স্মরণ এলেই তারা এখনো আঁতকে ওঠেন, কান্নায় চোখমুখ ভিজে যায় তাদের। তাদের দুইজন কান্না ভেজা কণ্ঠে জানালেন, সেই দিন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা বেঁচে যাওয়াতেই আহতরা বেঁচে থাকতে পারছেন। কারণ তিনি প্রত্যেকের যথাযোগ্য চিকিৎসা করিয়েছেন। তারা বলেন, ২০০৪ সাল থেকে আমাদের নেত্রী আমাদের চিকিৎসা করে যাচ্ছেন। নেত্রী ব্যতিত অন্য কোনো মানুষ কখনও আমাদের খোঁজ খবর নেন নি। 

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত সাভারের মাহবুবা পারভীন। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে গ্রেনেডের স্পিন্টার দেহের মধ্যে নিয়ে আর্থিক ও মানসিক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন পারভীন। সে সময়ের বিরোধী দল আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় নৃশংস গ্রেনেড হামলায় ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবা পারভীন প্রয়াত আইভি রহমানের পাশেই ছিলেন। সে দিন গ্রেনেড হামলায় পারভীন বেঁচে আছে, না মৃত কেউ বুঝতেই পারেনি। আইভি রহমানের পাশে যে তিনজন মহিলা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন তাদেরই একজন সাভারের মাহবুবা পারভীন। মাহবুবা গুরুতর আহত হয়ে অজ্ঞান অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশ ঘরে পড়ে থাকেন, দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা পর স্বেচ্ছাসেবকলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আশিষ কুমার মজুমদার সেখানে লাশ শনাক্ত করতে গিয়ে মাহবুবা পারভীনকে তিনি জীবিত দেখতে পান। ৭২ ঘণ্টা পর তার জ্ঞান ফিরে আসে। 

দেশে চিকিৎসায় ভালো না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাকে ভারতের কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতালে পাঠান। মাহবুবা পারভীনের দেহে এখনো রয়েছে ১ হাজার ৮শ স্লিন্টার। মাঝে মধ্যেই তিনি পাগলের মতো হয়ে যান। নিজ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগ থেকে তার কোন খোঁজ-খবর নেয়া হয় না বলে আক্ষেপ করলেন তিনি। তবে তখনকার বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এখনও তাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন বলেও জানালেন তিনি। 

কান্না ভেজা কণ্ঠে মাহবুবা পারভীন বলেন, সেই দিন যদি নেত্রী বেঁচে না যেতেন, আমরা (যারা হামলায় আহত) বেঁচে থাকতাম না। ২০০৪ সাল থেকে আমাদের নেত্রী আমাদের চিকিৎসা করে যাচ্ছেন। আমার নেত্রী ব্যতিত অন্য একজন মানুষ কখনও আমাদের খোঁজ খবর নেন নি। 

ওই দিনের ঘটনার স্মৃতি স্মরণ করে মাহবুবা পারভীন বলেন, ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট। বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে সন্ত্রাস বিরোধী জনসভা সে দিন ছিল। তখন খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। আমাদেরকে কোন জায়গায় মিটিং-মিছিল কোন কিছুই করতে দেয় না। এই বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে একটা ট্রাকের ওপরে মঞ্চ তৈরি করে সন্ত্রাস বিরোধী জনসভা আয়োজন করা হয়। আমরা দেখেছিলাম, যদি এই দেশ থেকে সন্ত্রাস মুক্ত করতে পারি, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মা নিশ্চিন্তে ঘুমাবে। তিনি সে সময় ঢাকা জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক। আমাদের সভাপতি ছিলেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাধারণ সম্পাদক ছিলেন পঙ্কজ দেব নাথ। 
আমি আশ্বর্য হয়ে গেলাম, স্বাধীন বাংলাদেশে সরকার ক্ষমতায় থাকতেই বিরোধী দলীয় নেত্রী এভাবে আক্রমনের শিকার হন। যখন আমি সাভার থেকে এই বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে এসে পৌঁছাই তখন আনুমানিক বিকেল ৫টা বাজে। অস্থায়ী ট্রাকে করা হয়েছিল মঞ্চ। সেই মঞ্চের ডান চাকায় আমি দাঁড়িয়ে, আমার পাশে আইভি আন্টি (২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত নারী নেত্রী আইভি রহমান)। আইভি আন্টি সব সময় ভালবাসা দিয়ে রাজনীতি শেখানোর জন্য কর্মীদের মাঝে থাকতে পছন্দ করতেন। আমি অস্থায়ী যে মঞ্চ করা হয়েছিল, সেই ট্রাকের পেছনের চাকা সেই চাকার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম, কারণ ওখানে দাঁড়ালে নেত্রীকে সরাসরি দেখতে পাওয়া যেত।

শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা একের পর এক বক্তব্য দিলেন। বক্তব্য শেষে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য শেষে ‘জয় বাংলা’ বলার সাথে সাথে বিকট একটা শব্দ হয়ে এলাকা অন্ধকার হয়ে যায়। তখন কাউকে দেখা যাচ্ছিল না। শুধু চিৎকার আর চিৎকার, বাঁচাও বাচাঁও বলছেন মানুষ। আমি দাঁড়ানো অবস্থা থেকে মাটিতে পরে গেলাম, এরপর আমার আর কিছু মনে নেই। শুনেছি, সেই গ্রেনেডের শব্দে আমি হার্ট এ্যাটাক করেছি। সে সময় টিভি মিডিয়ায় আপনারা সবাই দেখেছেন আমাকে ব্যানারে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কারণ আমার এক সাইড (বাম সাইড) অবশ হয়ে গিয়েছিল। আমার দুইটা কানের পর্দা ফেটে রক্ত ঝরছিল।তখনকার আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রচার সম্পাদক আশিষ কুমার মজুমদার আমাকে সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে যান। আমার কিন্তু কিছু মনে নেই। আমি ৭২ ঘণ্টা আইসিইউ’তে ছিলাম। ডাক্তার তখন বলেছিল- সে বেঁচে আছে না, মারা গেছে ৭২ ঘণ্টা পর আমরা বলতে পারবো। আমার বাড়ি সাভার। আমার পরিবারের সকলেই আমাকে খুঁজতে ঢাকায় চলে আসেন। এক এক জন এক এক হাসপাতালে আমাকে খুঁজেন। অনেক খোঁজার পর আমাকে তারা পেয়ে যান। আমার অবস্থার যখন অবনতি হতে থাকে তখন স্বেচ্ছাসেবক লীগের তখনকার সভাপতি বাহাউদ্দিন নাসিম ভাই জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আমার বিষয়টি জানায়। তখন নেত্রী সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. রুহুল হককে আমার দায়িত্ব দেন। আমার নেত্রীর ভালবাসায় আমি সত্যিই মুগ্ধ। আপনাদের মত যারা গণমাধ্যম কর্মী আছেন সকলের প্রতি আমি অশেষ কৃতজ্ঞ।

আশ্রু সিক্ত নয়নে তিনি বলেন, আমার শরীরে ১৮’শ স্পিন্টার রয়েছে। এই ১৮’শ স্পিন্টার যখন জ্বলে ওঠে তখন সারা শরীরে আগুন জ্বলে ওঠে। প্রতি রাতেই এই গুলো জ্বলে ওঠে, কামড় দিয়ে ওঠে। এর যে তীব্র যন্ত্রণা তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। ওই ঘটনার তিন বছর আমি রাত তিনটার সময় যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে আমার শরীরে ব্লেড দিয়ে স্লিন্টার বের করার চেষ্টা করেছিলাম। যার কারণে আমার পায়ে পঁচন ধরে গিয়েছিল। আসলে যখন ওই স্লিন্টারগুলো কষ্ট দেয় তা সহ্য করার মত না। ওই ঘটনার পরে থেকে আমি ভেবেছিলাম আমি হয়তো পঙ্গু হয়ে যাব। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে পা দুটো বেঁচে যায়। যার জন্য আমাকে নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়। এরপর আর কোন দিন স্লিন্টার বের করার চেষ্টা করি নি। কারণ ওই ঘটনার পর আমাকে ৩ বছর ভুগতে হয়েছিল। আমি সেই থেকে আমার স্লিন্টার যন্ত্রণা যতই হোক সহ্য করার চেষ্টা করতাম। আমাকে ডাক্তার বলতো, আপনি একটার বেশি ঘুমের ওষুধ খাবেন না। কিন্তু ৩টা ওষুধ না হলে আমার ঘুম আসতো না, এত যন্ত্রণা ওই স্লিন্টারগুলোর। আর ঘুমাতে না পারলে তো শরীর খারাপ হয়ে যায়। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৩টা হাসপাতালে আমার চিকিৎসা হয়েছে, তখন আমি কানে শুনতাম কিন্তু চোখে কিছু দেখতাম না। আমার যখন পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান ফেরে তখন আমি কোলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতালে। প্রায় ২৫ দিন পর আমার জ্ঞান এসেছিল।

তখন সিস্টাররা আমাকে বললো, আপনি কোলকাতায়। আপনার স্বামী-সন্তানরা বাংলাদেশে। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। আমাকে এখানে কে নিয়ে গেল। তখন আমি সেখানে চিৎকার শুরু করলাম। সে সময় শুনি আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক উম্মে রাজিয়া কাজল ওই হাসপাতালে। তখন আমি উনার পাশে বেডে আমাকে সিফট করতে আবেদন করলাম। আমাকে তার পাশের বেডে দিয়ে দেয়া হলো। তখন আমার মনে হতো ফ্রিজের পানি দিয়ে যদি সারা শরীরটা ভিজিয়ে রাখতো তাহলে শান্তি লাগতো।

তিনি জানান, ‘কোলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতালে থেকে যখন আমি দেশে ফিরে আসি তখন আমার বাড়ি সংবাদপত্র দিয়ে ভরে গিয়েছিল। যেন মনে হচ্ছে, ওইটা একটা সংবাদপত্রের অফিস।’ 

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় নিয়ে তিনি বলেন, ওই রায়ে আমি আরও একটু সন্তুষ্ট হতাম যদি আসল মূল নায়ক তারেক রহমানের (বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে) যদি ফাঁসি হতো। যারা এটা নির্দেশদাতা তাদের প্রত্যেককের শাস্তি যেন হয় আমি এটাই দেখে যেতে চাই। তারেক রহমানের যদি ফাঁসি হয়, সারা বিশ্বে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না।  

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার পরে তখনকার ক্ষমতাশীন বিএনপি সরকারের পক্ষ থেকে কোন হুমকি চেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে দুই একটা ফোন আসতো। আমি কিন্তু গ্রেনেড হামলার সাক্ষী। অনেক সময় ফোন আসতো, ফোনে আমাকে অনেক সময় বলা হতো, সাক্ষীটা না দিতে। তবে সেই ফোনে কোন নাম উল্লেখ করা হতো না। বলতো আপনি সাক্ষী দিতে যাবেন না। আমি জিজ্ঞেস করি কে আপনি, বলতো আপনার তো নাম শোনা লাগবে না।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন। ওই ঘটনায় তার খাদ্য নালীর ৬ ইঞ্চি কেটে ফেলতে হয়েছিল। বর্বরোচিত সে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় নেতা এখনও ১০ থেকে ১২টি স্লিন্টার শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছেন।

ওই দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমি শুধু নয় আহতরা সবাই কৃতজ্ঞ। আমাদের উনি চিকিৎসা করিয়েছেন। এ জন্য আমরা ওনার জন্য দোয়া করি, শুকরিয়া আদায় করি আল্লাহর কাছে। উনি আছে বলেই তো এখনও বাংলাদেশ আছে।’ ‘আল্লাহ উনাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন বলে আজকে বিশ্বেও দরবারে আবারও প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে বাংলাদেশ, আজকে অর্থনৈতিকভাবে দাঁড়িয়েছে। আল্লাহ ওই দিন জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেককে রক্ষা করেছে। এটা মূলত আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য করা হয়েছিল। এটা মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই করা হয়েছিল। বাংলাদেশকে আবার ৭৫ পরবর্তী অবস্থায় নিয়ে যাওয়াই ছিল এর মূল উদ্দেশ্য।’                   
তিনি বলেন, আজও আমাকে স্লিন্টারের যন্ত্রণা সহ্য করেই রাজনীতি করে যাচ্ছি। এটা রাত্রে খুব যন্ত্রণা দেয়, কামরায়। এই যন্ত্রাকে যারা ভুক্তভোগী নয় তারা বুঝতে পারবে না। এটা ঘুমের খুব ব্যাঘাত ঘটায়।

ওই দিনের ঘটনার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, সেদিন ছিল গোপালগঞ্জের তুষার হত্যাকাণ্ড ও সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজারে বৃটিশ রাষ্ট্রদূত আনোয়ার হোসেনের হামলার প্রতিবাদে সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি মিছিল। সেই শান্তি মিছিলে যোগ দিতে তখনকার বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এসেছিলেন। ওই সমাবেশটা ছিল ট্র্যাকের ওপরে। ট্রাক একটা অস্থায়ী মঞ্চ ছিল। যখন আপার (শেখ হাসিনা) বক্তব্য শেষ উনি নামতে যাবেন, ঠিক সেই মূহুর্তে আমরা একটি বিকট আওয়াজের শব্দ শুনতে পেলাম। আমি তখন ট্রাকের সিড়ির কাছে ছিলাম। 

সেখানে আমার পাশে আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদের, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আমিনুল ইসলাম আমিন, এ কে এম এনামুল হক শামীম, ইসহাক হোসেন পান্নাসহ অনেক সাবেক ছাত্রনেতা ছিলেন। কারণ সমাবেশ শেষে আপাকে  (শেখ হাসিনা) নিয়ে আমরা মিছিল হবে এমন সিদ্ধান্ত ছিল। সেই সময় এই আওয়াজটা শোনার পর আমি পরে গেলাম। প্রথম গ্রেনেডেই আমি আহত হয়েছিলাম। এরপর আরও কয়েকটি গ্রেনেড বিস্ফোরণ হয়। তবে আমার জ্ঞান ছিল। এরপর বিকট আওয়াজ শুরু হলো। পরে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

আপার (শেখ হাসিনা) ড্রাইভার আলী হোসেন ও শাহজাহান। আপার গাড়িতে আমাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। আমার তখন পর্যন্ত জ্ঞান ছিল, আমার সারা শরীর রক্তে ভেজা, শরীরে প্রচণ্ড যন্ত্রণা। ঢাকা মেডিকেলে কোন ওষুধ নাই, ডাক্তার নাই তখন আমার কয়েকজন শুভাকাঙ্ক্ষি আমাকে ধানমন্ডি ডেলটা ক্লিনিকে নিয়ে গেল। এরপরে আমার আর কোন জ্ঞান ছিল না। পরের দিন আমার অপারেশন করা হয়। শুনেছি, আমার খাদ্য নালীর ৬ ইঞ্চি কেটে ফেলতে হয়েছিল। এরপর জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে উচ্চ চিকিৎসার জন্য ভারতে পাঠায়।

এএইচএস/টিএফ 

আরও পড়ুন