• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০১৯, ০৯:০৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৩১, ২০১৯, ০৯:০৩ পিএম

ছাত্রলীগকে প্রধানমন্ত্রী

আদর্শ ও নীতি না থাকলে নেতা হওয়া যায় না 

আদর্শ ও নীতি না থাকলে নেতা হওয়া যায় না 
গণভবনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা - ছবি : পিআইডি

বাংলাদেশের প্রতিটি সংগ্রাম ইতিহাসে ছাত্রলীগের নাম জড়িত রয়েছে উল্লেখ করে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আদর্শ ও নীতি না থাকলে নেতা হওয়া যায় না। সবকিছু ত্যাগ করে আদর্শ নিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারাই একজন রাজনৈতিক নেতার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। যেটা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান করেছিলেন।’ 

শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে গণভবনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এই সভায় ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদর্শ ও নীতি না থাকলে কখনও নেতা হওয়া যায় না। আর সাময়িকভাবে নেতা হওয়া গেলেও সেই নেতৃত্ব দেশ ও জাতিকে কিছু দিতে পারবে না। সবকিছু ত্যাগ করে নিজের আদর্শ নিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারলে, মানুষের ভালবাসা ও আস্থা অর্জন করতে পারলে, এই ভালবাসা ও আস্থা অর্জন করাই হচ্ছে এক রাজনৈতিক নেতার জীবনে অমূল্য সম্পদ।

দেশকে উন্নত বিশ্বের কাতারে নিতে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে কাজ করছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জানি বাবা এই দেশটাকে কীভাবে গড়তে চেয়েছিলেন। তাই আমার জিদ ছিল- বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়তে হবে যাতে বিশ্ববাসী অবাক হয়ে দেখে। স্বাধীনতাবিরোধী পরাজিত শক্তিদের পদলেহন যারা করে তারা দেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়তে দেবে না। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বে দেয়া দল আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকতে হবে তাহলেই দেশ উন্নত হবে।’

নিজের আর পরিবারের কথা চিন্তা না করে বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষের জন্য সারাজীবন কাজ করেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাবা এদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে সবসময় চিন্তা করতেন। নিজের চাওয়া-পাওয়া ত্যাগ করে এদেশের মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছেন।’

এসময় বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসার অবদান স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আমার মা কখনো প্রকাশ্য রাজনীতিতে আসেননি। কিন্তু বাবার পাশে থেকে নীরবে নিভৃতে কাজ করে গেছেন। কারাগারে দেখা করতে গিয়ে তিনি কখনো হতাশার কথা বলেননি। সাহস যুগিয়েছেন। এই যে পাশে থেকে শক্তি জোগানো, এই দৃঢ় মনোবল সবসময় মায়ের ছিল। প্রতিটি সংগ্রামে মা পাশে থেকে বাবাকে সহযোগিতা করেছেন। তিনি নিজে জীবনে কখনো কোনো কিছুই চাননি বাবার কাছে। সংসারের খরচ চালাতেও বাবাকে কখনো বিরক্ত করেননি। নিজেই সামাল দিয়েছেন। বাবাকে বলতেন, সংসারের কথা চিন্তা কোরো না, তুমি দেশের কথা চিন্তা করো। প্রতিটি সংগ্রামে মা দৃঢ় মনোবল দেখিয়েছেন। বাবা যখন কারাগারে থেকেছেন বা পরিস্থিতিতে পড়েছেন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনাগুলো ছদ্মবেশে গিয়ে নেতাকর্মীদের কাছে পৌঁছে দিতেন।

দেশকে অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু বাকশালের ডাক দিয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা বিষয়টিকে নেতিবাচকভাবে উপাস্থাপন করেছিল। বাকশাল হচ্ছে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ। এর মাধ্যমে পুরো দেশকে একত্রিত করে অর্থনৈতিক মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯টি জেলাকে তিনি ৬০টি জেলায় রূপান্তরিত করেন। অর্থাৎ অর্থনৈতিক উন্নয়নের এক একটি কেন্দ্র হিসেবে যেন এর সুফল তৃণমূল মানুষের কাছে পৌঁছায়। ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করে একেবারে তৃণমূলে গণতান্ত্রিক ধারা নিয়ে গিয়েছিলেন। কৃষককে সম্পৃক্ত করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু যে পরিকল্পনা নিয়েছিলেন সেটা যদি তিনি বাস্তবায়ন করতে পারতেন বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত রাষ্ট্র হয়ে যেত। তিনি যখনই এসব পরিকল্পনা নিলেন তখনই অপপ্রচার শুরু হল। আর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো।’

তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের পর সাড়ে ৩ বছর বঙ্গবন্ধু সময় পেয়েছিলেন। এই কম সময়ে তিনি একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ যেভাবে গড়ে তুলেছিলেন তা অভাবনীয়।

এএইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন