• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০১৯, ০৯:০২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ৩০, ২০১৯, ০৩:৫৫ এএম

সংসদে খালেদার মুক্তি চাইলেন এমপি হারুন

সংসদে খালেদার মুক্তি চাইলেন এমপি হারুন
সংসদে এমপি হারুন উর রশিদ

সংসদে অধিবেশনে যোগ দিয়েই  বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইলেন দলের সংসদ সদস্য হারুন উর রশিদ। তিনি বলেন, 'আমার নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) অনুরোধ করব, অবিলম্বে বিষয়টার (খালেদার মুক্তি) কার্যকরের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। আমরা আশা করি আদালত যদি স্বাধীনভাবে চলতে পারে, ওখানে যারা আছেন তারা যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন, তাহলে আমাদের প্রিয় নেত্রী  খালেদা জিয়া কালই জামিন পাবেন। আপনি (শেখ হাসিনা) দ্রুত ব্যবস্থা নিন।
 
সোমবার (২৯ এপ্রিল)  রাতে সংসদে কার্যপ্রণালী-বিধির ১৪৭ বিধির আওতায়  আনা প্রস্তাব (সাধারণ) এর ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। প্রস্তাবটি শ্রীলংকা, নিউজিল্যান্ডে হামলা ও নূসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার বিষয়ে প্রস্তাবটি আনা হয়।

এর আগে সন্ধ্যার আগে হারুন উর রশিদসহ বিএনপির চার নির্বাচিত প্রার্থী শপথ গ্রহণ করেন। সন্ধ্যার পর বিএনপির শপথ নেয়া পাঁচজনই সংসদ অধিবেশনে যোগ দেন।

প্রস্তাবের বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখার পর তিনি বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন নিয়ে সারাদেশে নিঃসন্দেহে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছ্। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মানুষের ভোটাধিকারকে হরণ করা হয়েছে।  আমরা যেভাবেই  বলি না যেন, ৩০ তারিখে নির্বাচন হয়নি। এখানে আজকে আমরা বিএনপি থেকে শপথ গ্রহণ করে আজকে ৫ জন এসেছি। ঐক্যফ্রন্ট থেকে আরো দুইজন শপথ নিয়েছেন।  আজকে নব্বই দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার শেষ দিনে এই সংসদে প্রবেশ করার জন্য আমাকে ব্যক্তিগতভাবে এবং আমার সঙ্গে যারা এসেছেন এজন্য আমার দলকে সম্মত করাতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে, অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। সারাদেশের  মানুষ  এতে বিক্ষুব্দ, অসন্তুষ্ট। তার কারণ  জনগণের ভোটের মধ্য দিয়ে  সরকার গঠিত হোক- এটিই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। জনগণের ভোটের মধ্য দিয়ে সরকার গঠিত হোক। দেশে আইনের  শাসন  থাকবে, দেখে সুশাসন থাকবে, দেশের জনগণের প্রতিনিধি দ্বারা দেশ শাসিত হবে- এটি আমরা প্রত্যাশা করি, দেশের মানুষ প্রত্যাশা করে। সংসদ নেতা অনেক ক্ষেত্রেই সাফল্য অর্জন করেছেন। আমি আশা করবো  আজকে আমরা সংসদে প্রথম এসেছি, এতো তাড়াতাড়ি অস্থির হয়েন না। 

তিনি সংসদে প্রবেশের সময় কোরআনের সুরা বাকারাহর ৪২ নং আয়াত চোখে পড়ার কথা উল্লেখ করে তা উদ্ধৃত করে বলেন,  আমি অনুরোধ করবো, আপনাদের কাছে আহবান জানাবো, আমরা যারা মুসলমান  বাস্তব অবস্থা দেশে যে সংকট এ বিষয়ে সংসদ নেতাকে অনুরোধ করবো এই বিষয়ে আপনি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।  দেশের মানুষ তাকিয়ে  আছে। যাই বলেন না কেনো, আমরা সংখ্যায় কম হতে পারি তবে  বাস্তব যে কথা আজকে কিন্তু দেশের ১৭ কোটি মানুষ জিম্মি। আজকে  সারাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে যে নির্বাচন হয়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দল  বর্জন করেছে। ৫ শতাংশ লোকও ভোট কেন্দ্রে যায়নি। 

বক্তব্যের শুরুতেই  তিনি নির্বাচনি এলাকার জনগণেকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আজকে অনেক চড়াই উৎরাই পার হয়ে  এই  মহান সংসদে প্রবেশ করতে পেরেছি।  দেশ ও জাতির চরম  সংকট মূহূর্তে  আজকে যে প্রস্তাবটি আনা হয়েছে নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। সংসদ সদস্য শেখ সেলিমসহ ওয়ান ইলেভেনের সময় কারাগারে এক সাথেই ছিলাম। আমি যখন  তার নাতির ছবিটি দেখলাম যে শ্রীলংকায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। তার  আগে নিউজিল্যান্ডে  একজন বন্দুকধারীর গুলিতে ৫০ জনের বেশি মুসলমান নামাজরত অবস্থায় শাহাদাত বরণ করেছে। তারপরই এই  ঘটনাটি ঘটেছে। আন্তজাতিক বিশ্বে সন্ত্রাসীদের কোনো স্থানকাল পাত্র নেই।   বাংলাদেশ  সেই জায়গা থেকে মুক্ত নয়।  বাংলাদেশেও  বিভিন্ন সময় ঘটছে। তিনি প্রস্তাবটি আনার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশকে সন্ত্রামুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশকে অবশ্যই জঙ্গিমুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশকে অবশ্যই মাদকমুক্ত করতে হবে।  দলমত নির্বিশেষে এই পদেক্ষপ গ্রহণ করতে পারি  তাহলে  আমরা সাফল্য অর্জন করতে পারবো।

আজকে নুসরাত হত্যাকাণ্ড নিয়ে যে ঘটনাগুলো পত্র-পত্রিকায় এসেছে তাতে আমরা দেখতে পাই যে, সরকার দলের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা  এর  সাথে জড়িত ছিলেন। আজকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে এজন্য  আমি সংসদ নেতাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।   যদি এই দৃষ্টান্তগুলো সমস্ত জায়গাতে যেমন সন্ত্রাস দমন , বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণ-নির্যাতন হচ্ছে সেখানে যদি এই দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয় তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশে সন্ত্রাস দমনের  ক্ষেত্রে আমরা একটা সন্তোষজনক জায়গায় যেতে পারবো। 

এইচএস/বিএস