• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০১৯, ০৭:৩০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৫, ২০১৯, ০৮:১৫ পিএম

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সভায় তৃণমূল নেতাদের ক্ষোভ

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সভায় তৃণমূল নেতাদের ক্ষোভ
ঢাকা বিভাগের বিশেষ সাংগঠনিক সভায় আওয়ামী লীগ তুণমূলের নেতারা- ছবি: জাগরণ

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরলেন আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় জেলা পর্য়ায়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা। 

শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের ঢাকা বিভাগের বিশেষ সাংগঠনিক সভায় তুণমূলের নেতারা এমন অভিযোগ তোলে ধরেন।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। 

ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সঞ্চালনায় সভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-  আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন,শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। 

সভায় মুন্সিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক শেখ লুৎফর রহমান, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ, নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বীরপ্রতীক, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি রহমত উল্যাহ, সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাত, সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার, কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ আফজল বক্তব্য রাখেন। 

এ সময় নেতারা নিজ নিজ জেলা/মহানগর কমিটির সাংগঠনিক রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে উপস্থাপন করেন।

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান ফারুক বলেন- ঘাটাইল ও ভুয়াপুরে আমরা কমিটি করতে পারিনি। এই সংকট থেকে আমাদের মুক্তি দিতে হবে। আমরা আপনাদের নিয়েই এই সমস্যা সমাধান করতে চাই। তিনি আরও বলেন, আমাদের আরও কিছু সমস্যা আছে। যা এখানে বলতে পারছি না। তবে আমার মনে হয় আপনারা সবাই বিজ্ঞ মানুষ। আপনারা তার সবই জানেন। কারণ আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দল ঠিক থাকলেই এমপি-মন্ত্রী ঠিক থাকবে। তাই সেই বিষয়গুলোও সমাধান করতে হবে।

রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিল্লুর হাকিম বলেন,  যারা সংগঠন বিরোধী কাজ করেন তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় আমরা ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ কেন্দ্রে পাঠাই। কিন্তু এগুলোর ব্যাপারে কেন্দ্র থেকে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি। আমাদের সাংগঠনিক কাঠামোতে একটা বিষয় আছে জেলা-উপজেলার সুপারিশ ৯০ দিনের মধ্যে যদি কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত না দেয় তাহলে সেটা বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু আমি মনে করি এটা উল্টো হওয়া উচিত। তৃণমূলের সুপারিশ ৯০ দিনের মধ্যে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত না দিলে সুপারিশ কার্যকর হয়ে যাবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, আমাদের ৬ থানার ১২ জনের মধ্যে ৬ জনই ভারপ্রাপ্ত। এগুলো আমরা ভারমুক্ত করতে চাই। তিনি আরও বলেন, তূণমূলের প্রশাসন এমপি-মন্ত্রীদের বেশি গুরুত্ব দেয়। আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে সেভাবে গুরুত্ব দেয়া হয় না। এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায় কি না বা নির্দেশনা দেওয়া যায় কী না সে বিষয়ে ভেবে দেখতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার এলাকায় সহযোগী সংগঠনগুলো আমাদের কোন সহযোগিতাই করে না। যারা কোনো দিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না তাদের নিয়ে এসব কমিটি করা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি। কিন্তু এখনও আমরা কেন্দ্র থেকে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি।    

গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হক বলেন,   যুবলীগ ও ছাত্রলীগ বাদে অন্য সহযোগী সংগঠন নিয়ে আমাদের বিভ্রান্তির মধ্যে পড়তে হয়। আর সে সব সংগঠন  নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্রের কমিটি। আমাদের সঙ্গে তারা অনেক সময় যোগাযোগও রাখে না।  আর যে সকল মানুষের আওয়ামী লীগ করার যোগ্যতা নেই, রাজনৈতিক পরিচয় নেই, তাদেরকে নিয়ে এই সহযোগী সংগঠনগুলোতে কেন্দ্রে থেকে নিয়ে আসা হয়। ফলে এসব কমিটি করতে যাতে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটির সঙ্গে পরামর্শ করা হয়।    

রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী কেরামত আলী বলেন, আমি সহযোগী সংগঠনের বিষয়ে একটা কথা বলতে চাই। যা নিয়ে আমরা খুবই সমস্যার মধ্যে রয়েছি। আমাদের এখানে ১৪ বছর ধরে যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি রয়েছে। এজন্য তা  মুখ থুবরে পড়েছে। আবার ডিও লেটারের মাধ্যমে কমিটি দেয়া হয়। ডিও লেটারের মাধ্যমে কমিটি হলে খুবই খারাপ হয়। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। 

শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে বলেন,  আমাদের এখানে সহযোগী সংগঠনগুলোর অবস্থা ভালো না। দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি সহযোগী সংগঠনের আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলছে। আমাদের আরও অনেক কথা আছে। তবে সব কথা প্রকাশ্যে বলা যায় না। আমাদের এভাবে মাঝেমধ্যে ডাকলে আমরা আমাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা বলতে পারবো।

এএইচএস/বিএস