• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০১৯, ০৯:৫৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৮, ২০১৯, ০১:১৭ এএম

আগামী সম্মেলনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নতুন মুখ

আগামী সম্মেলনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নতুন মুখ

সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী অক্টোবরে হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন। নেতৃত্বে কারা আসতে পারে এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনার অন্ত নেই। জল্পনা-কল্পনার সঙ্গে চলছে চুলচেড়া বিশ্লেষণ। জানা গেছে, দলীয় বেশ কিছু কেন্দ্রীয় পদে আসতে যাচ্ছে বেশ কিছু নতুন মুখ। দলে এবার বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে নবীন নেতৃত্ব আনতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ, সেই হিসাবে এবার দলীয় সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে ব্যাপক রদবদল হতে যাচ্ছে। সাবেক ছাত্রনেতা ও তরুণ আওয়ামী লীগ নেতাদের সেই স্থানে আনা হচ্ছে।  

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ৭০ বছর পার হওয়া আওয়ামী লীগ দলের সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যে তরুণ ও যোগ্য নেতৃত্ব আনার চিন্তা-ভাবনা এখন থেকেই শুরু করেছে। দলের আগামী জাতীয় সম্মেলনের আগে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ের ইউনিটের কমিটি গঠন করে সম্মেলন করতে চায় আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড। আর এসব ইউনিট পর্যায়ের নেতৃত্ব তুলে দিতে অপেক্ষাকৃত তরুণদের খোঁজে রয়েছেন তারা। সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছে দলটি। একইসঙ্গে কেন্দ্রে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতৃত্ব আনতে চলেছে আওয়ামী লীগ। 

দলের নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি আদর্শিক দল। আওয়ামী লীগ করতে গেলে সবাইকে আদর্শিক হতে হবে। আদর্শ ধারণ করে লালন এবং পালন করতে হবে। দলে যারা নতুন আসবে তাদের উচিত দেশকে ভালবেশে মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করা।

দলীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের আগামী সম্মেলনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসতে পারে বেশ কিছু নতুন মুখ। দলের গত তিনটি জাতীয় সম্মেলনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নতুনদের নেতৃত্বে নিয়ে আসা হয়েছে ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয়। সেই হিসাব মতো, দলের আগামী ২১তম সম্মেলনে নতুন বেশ কিছু নেতৃত্ব আনার সম্ভাবনা রয়েছে দলটির। দলের তৃণমূল থেকে ত্যাগী নেতাদের কেন্দ্রের দায়িত্বে এনে পুরস্কৃত করা হবে।    
   
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী অক্টোবরের সম্মেলনে দলের যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদের প্রায় সবগুলোয় আসতে পারে নতুন মুখ। পরিবর্তন আসতে পারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদেও। যারা দলের যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে যারা টানা তিন সম্মেলনে একই পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের ক্ষেত্রে এ পরিবর্তনের সম্ভাবনা বেশি। সেক্ষেত্রে দলীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে অন্তত দুজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন। আর ৮ সাংগঠনিক সম্পাদক পদের বেশিরভাগেই নতুন মুখ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। 

সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির অন্তত দুজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবার দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হতে পারেন। এ ছাড়া বাকি দুজন একই পদে বহাল কিংবা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হতে পারেন। শূন্য থাকা দলের কয়েকটি সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পদে এবার জেলা পর্যায়ের সিনিয়র, ত্যাগী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব আনা হতে পারে। জানা গেছে, বর্তমান কমিটির বেশ কয়েকজন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নিয়ে দলে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে, যারা দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অনুপস্থিত। এদের অনেকেরই বয়স হয়েছে। তেমন কয়েকজন এবার সভাপতিমণ্ডলীর পদ হারাতে যাচ্ছেন। তাদের জায়গা হবে দলের উপদেষ্টা পরিষদে।    

২০০৯ সালের ২৪ জুলাই আওয়ামী লীগের ১৮তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তারপর আরও দুটি সম্মেলনে মোট ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে যারা একই পদে দায়িত্ব পালন করছেন এর মধ্যে রয়েছেন দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি ও জাহাঙ্গীর কবীর নানক। ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন আহমদ হোসেন, অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। 

জানা গেছে, এবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদায়ন করা হতে পারে দলীয় কর্মকাণ্ডে যারা বিতর্কের ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করে গেছেন এমন বর্তমান কমিটির কয়েকজন নেতৃত্বকে। এর মধ্যে দলের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্বশীল বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসাইন ও আমিনুল ইসলাম আমিন বেশ এগিয়ে রয়েছেন। তার সঙ্গে যুক্ত হবেন বেশ কয়েকজন সাবেক ছাত্রনেতা ও আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে ও বর্তমান সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, সাবেক ছাত্রনেতা মাহমুদ হাসান রিপন, সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, আয়েন উদ্দিন, বলরাম পোদ্দার, আজিজুস সামাদ আজাদ ডন ও মসিউর রহমান হুমায়ুন, সাবেক ছাত্রনেতা রবিউল হোসেন রবি (চট্টগ্রাম), হেমায়েত উদ্দিন (ভোলা) আলোচনায় রয়েছেন।

দলের জাতীয় সম্মেলন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত ১৫ জুন দলের এক সভায় বলেন, আমাদের জাতীয় সম্মেলন করতে হবে। আমাদের নেত্রী এবং আমারও ইচ্ছা যথাযথ সময়ে সম্মেলনের কাজ সমাপ্ত করা। আওয়ামী লীগ কোনো বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া কখনও সম্মেলন করতে গিয়ে নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করেনি। 

দলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অসুস্থ থাকাকালেও কয়েকবার প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনের প্রস্তুতির বিষয়ে তাগাদা দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। আগামী সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য দলের ভেতরে আলোচনায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, আবদুর রহমান, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

এএইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন