• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৩, ১২:০৬ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ১৩, ২০২৩, ১২:০৬ এএম

খালেদার সাজা স্থগিতের মেয়াদ ফের বাড়ল

খালেদার সাজা স্থগিতের মেয়াদ ফের বাড়ল
ছবি ● ফাইল ফটো

আগের দুই শর্তসাপেক্ষে অর্থাৎ বিদেশে না গিয়ে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেয়ার শর্তে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর বিষয়ে মতামত দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। 

রোববার (১২ মার্চ) বিকেল সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এই কথা জানান। পাশাপাশি নির্বাচনের বছরে খালেদা জিয়া বাসায় থেকে রাজনীতিতে অংশ নিতে পারবেন কিনা, সে সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে সরাসরি কিছু বলেননি আইনমন্ত্রী।

গেলো ৬ মার্চ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করেন। বরাবরের মতো এই আবেদনেও তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তির পাশাপাশি তাঁকে বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ দেয়ার আবেদন জানান। 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে জমা দেয়া সেই আবেদন আইনমন্ত্রীর মতামতের জন্য গেলো ৯ মার্চ আইন মন্ত্রনালয়ে পাঠান হয়। সে আবেদনের প্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ৬ মাসের জন্য বাড়ানোর সুপারিশ করে চিঠিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। 

সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, খালেদা জিয়াকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়া হয়েছিল। সেটার সময় শেষ হয়ে আসছিল জন্য তারা আবেদন করেছিলেন। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাকে আগের মতো দুটি শর্ত সাপেক্ষে মুক্তির মেয়াদ ৬ মাসের জন্য বৃদ্ধি করেছি।

তিনি মনে করিয়ে দেন, সেই শর্তগুলো হলো- তিনি ঢাকাস্থ নিজ বাসায় থেকে তার চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। তিনি হাসপাতালে যেতে পারবেন না-তা নয়, তিনি হাসপাতালে যেতে পারবেন এবং উক্ত সময় তিনি দেশের বাইরে গমন করতে পারবেন না। 

সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে, নাকি বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে, জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা সুপারিশ করেছি। অতীতেও আমাদের সুপারিশের ভিত্তিতে সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে, আমার বিশ্বাস এবারও তেমনই হবে।

তিনি উল্লেখ করেন,  প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতায় তিনি কারাগারে না থেকে বাসায় থাকতে পারছেন। তবে খালেদা জিয়া বাসায় থেকে রাজনীতিতে অংশ নিতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নের সরাসরি কোনও জবাব না দিয়ে এড়িয়ে যান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। 

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে যে দরখাস্ত এসেছে, তাতে বলা হয়েছে যে তিনি গুরুতর অসুস্থ। সে ক্ষেত্রে রাজনীতি করার প্রশ্নটা তো অবান্তর। তিনি মুক্ত, তিনি অসুস্থ, তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখানে রাজনীতির কথা আসাটা আমার মনে হয় কোনও প্রয়োজন নেই।’

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘একজন অসুস্থ মানুষ কী করতে পারবে, কী করতে পারবেন না আমি সেই নির্দেশনা দিয়ে দেবো না। সবাই স্বীকার করছেন তিনি অসুস্থ। এটা স্পষ্ট করার কিছু নেই। একটা বাস্তবতা, তাকে যে মুক্তি দেয়া হয়েছে সেই আবেদনের মধ্যে প্রথমে থেকে যে কথাটা কনস্ট্যান্ট ছিল, কনসিসট্যান্ট ছিল সেটা হলো তিনি অসুস্থ, গুরুতর অসুস্থ। সেই পরিপ্রেক্ষিতে রাজনীতি করার প্রশ্ন তো অবান্তর! সে জন্য দুই শর্তে তার দণ্ডাদেশ স্থগিত করে তাকে মুক্ত করা হয়েছে।’

তবে কিছুদিন আগে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণে বাধা নেই বলে আইনমন্ত্রী মত জানালেও, বিপরীত বক্তব্য আসে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছ থেকে। এনিয়ে সে সময় রাজনীতির মাঠে ভালো চচ্চাও হয়। 

এই দফায় খালেদার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ শেষ হবার কথা ২৪ মার্চ। তার আগেই সপ্তমবারের মত তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়লো। তিন বছর আগে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমনের শুরু থেকেই নির্বাহী আদেশে কারাগারে না থেকে বাসায় অবস্থানের সুবিধা পান বিএনপি চেয়ারপার্সন। 

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুদকের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজায় কারাজীবন শুরু করেছিলেন খালেদা জিয়া। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজার রায় হয়। তার বিরুদ্ধে আরও ৩৪টি মামলা রয়েছে।

৭৫ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার আগে থেকে আর্থারাইটিস, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন। বিদেশে তাঁর উন্নত চিকিৎসার জন্য আবেদন করা হলেও অনুমতি মেলেনি।

জাগরণ/রাজনীতি/এসএসকে