• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২১, ১২:৫০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১০, ২০২১, ০১:২৫ পিএম

‘‍‍মসজিদগুলোতে ইসলামের সঠিক জ্ঞানচর্চা হবে‍‍’

‘‍‍মসজিদগুলোতে ইসলামের সঠিক জ্ঞানচর্চা হবে‍‍’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে ইসলামের বদনাম করছে একটি গোষ্ঠী, যা এ ধর্মের পবিত্রতা নষ্ট করছে। ধর্ম ব্যবহার করে কাউকে সন্ত্রাসবাদ করতে দেওয়া হবে না। আমি বিশ্বের যেখানেই গেছি, এ বিষয়ে কথা উঠলে সব ফোরামে বলেছি, মুষ্টিমেয় লোকের কর্মকাণ্ডে ধর্মকে দোষারোপ করা যায় না।”

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সারা দেশে নির্মাণাধীন ৫৬০ মডেল মসজিদের মধ্যে কাজ সমাপ্ত হওয়া ৫০টি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী দেশে ইসলাম প্রসারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “লেবাসের ইসলাম নয়, আমরা বিশ্বাস করি ইনসাফের ইসলামে।”

দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় নির্মাণকাজ চলছে ৫৬০টি দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের। এগুলোর ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা, যার পুরোটাই খরচ দেবে সরকার।

তিন ক্যাটাগরিতে নির্মিত হচ্ছে এ মসজিদগুলো। সেখানে থাকছে গবেষণা কেন্দ্র, পাঠাগার, হজযাত্রীদের নিবন্ধন, অটিজম কর্নার ও ই-কর্নার। বিদেশি পর্যটকদের জন্য়ও থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা।

মসজিদের উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা সারা দেশে ৫৬০ মডেল মসজিদ নির্মাণ করছি। এর মধ্যে ৫০টি আজ উদ্বোধন করছি। এই মসজিদ থেকে মানুষ যেন ইসলামের মূল কথাটা শিখতে পারে, জানতে পারে।”

“আজকে আমি সত্যি খুব আনন্দিত। মডেল মসজিদগুলোতে ইসলামের সঠিক জ্ঞানচর্চা হবে। জ্ঞান-বিজ্ঞানচর্চায় মুসলমানরা আবারও এগিয়ে যাবে। এ মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ইসলামের সঠিক বাণী প্রচার করবে। সেই সঙ্গে ভূমিকা রাখবে জঙ্গিবাদ নিরসনে। মাদক, নারী নির্যাতনসহ সব ধরনের ব্যভিচার থেকে যুবসমাজকে বিরত রাখতেও এগুলো ভূমিকা রাখবে।”

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা চাই, যেন ইসলাম সম্পর্কে সবাই সচেতন হয়। ইসলাম ধর্ম নারীদের অধিকার দিয়েছে। পিতার ও স্বামীর সম্পদে নারীর অধিকার দিয়েছে। এই মসজিদেও নারী-পুরুষের নামাজের ব্যবস্থা আছে। এর মাধ্যমে ধর্মীয় দৃষ্টিতে বাল্যবিয়ে, নারী-শিশুদের নির্যাতন ও মাদকের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করতে হবে। এগুলো রোধে সামাজিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।”

হজযাত্রীদের সুবিধা দিতে সরকার কাজ করে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা ক্ষমতায় এসে হজযাত্রীদের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে ব্যবস্থা করেছি। যখনই আমি হজে যাই আমাদের হজযাত্রীদের খোঁজখবর নিয়েছি। সৌদি আরবের সরকারের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধানও করি। এখন আর হজযাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয় না। ঢাকা বিমানবন্দরের আশকোনা হজ ক্যাম্পেই ইমিগ্রেশনসহ নানা কার্যক্রম শেষ করার সুযোগ রেখেছি। জেদ্দায় নেমে যাতে সমস্যায় না পড়ে, সেখানেও হজ অফিস করে দিয়েছি।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “মুসলিমরাই জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সভ্যতায় এগিয়ে ছিল। সবকিছুতে মুসলিমরা ছিল পথপ্রদর্শক। তারা কেন আজ পিছিয়ে থাকবে? মুসলিমদের মধ্যে সঠিক ইসলামের জ্ঞান অর্জনে সহায়তা ও তাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য জানতে এই মডেল মসজিদ ও ইসলামিক কালচারাল সেন্টার। এখানে তারা মূল কথাটা জানতে ও শিখতে পারবে।”

এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ দেন। এছাড়া ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন থেকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এবং খুলনা জেলা সদর, রংপুরের বদরগঞ্জ ও সিলেটের সুরমা উপজেলা সদর থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তারা যোগ দেন।

এদিকে নির্মিত মসজিদের বিস্তারিত তুলে ধরে ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, “মুসলিম বিশ্বের এই প্রথম কোনো দেশের সরকারপ্রধান একসঙ্গে ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণ করছে। কোনো মুসলিম শাসক বা সরকারপ্রধান একসঙ্গে এতগুলো মসজিদ নির্মাণ করেননি এর আগে। এটি একটি অনন্য এবং যুগান্তকারী ঘটনা।”

আরও পড়ুন