• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০১৮, ০৮:৫০ পিএম

ফেরিওয়ালি রানীর জীবনযুদ্ধ

ফেরিওয়ালি রানীর জীবনযুদ্ধ

 

শেফালী রানী। বয়স ৬০ এর কোটা পেরিয়েছে। শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলী ইউপির রহবল (গেন্দারদহ) গ্রামের ছোট একটা কুঁড়েঘরে তার বসবাস। পাঁচ কন্যা সন্তানের জননী তিনি। স্বামী গোবেশ্বর রায় মারা গেছেন প্রায় এক যুগ আগে।
 
স্বামী মারা যাবার পর পাঁচ মেয়েকে নিয়ে শেফালী রানীর দুশ্চিন্তার শেষ ছিল না। কিন্তু মোটেও ভেঙ্গে পড়েননি তিনি। সংসারের বোঝা মাথায় নিয়ে নিজেই নেমে পড়েন জীবনযুদ্ধে।

ধার করা দুই হাজার টাকা দিয়ে ভ্যান ও ৩’শ টাকা পুঁজি দিয়ে ফেরি ব্যবসা শুরু করেন তিনি। সেই ১২ বছর ধরে তিনি এলাকায় ফেরিওয়ালি রানী বলে পরিচিত। 

ফেরি করে তিনি মুড়ি মাখা, আচার, বাদাম, বুট বিক্রি করেন গ্রামে গ্রামে। নিজেই ভ্যান চালিয়ে এ ব্যবসা করে একে একে চার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন তিনি। কষ্টার্জিত টাকা পয়সা খরচ করে মেয়েদের বিয়ে দিলেও সেই মেয়ে-জামাইও তার খোঁজখবর রাখেনা। ১২ বছর বয়সী আরেক মেয়েকে নিয়ে তিনি আছেন মহা দুশ্চিন্তায়।

শেফালী রানী আক্ষেপ করে বলেন, ‘দুক্কু লিয়ে জরমো হছে বাবা। স্বমী মরার পর থ্যাকে বাদাম বেচিচ্ছি। অসুখের জ্বালায় আর ভ্যানও চলাবার পাইনে। হামি লিজে করে খায় বাবা, কারো কাছে হাত পাতাইনে।’
 
ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কোন কার্ড বা সহায়তা পেয়েছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘কেউ খোঁজ ল্যায়না বাবা। চিয়েরমেন ভোটের আগে কাট করে দিবের চ্যালেও আর দ্যায়নি।’
 
দেউলী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বলেন, ‘তার কষ্টের কথা আমিও জানি। এবার তার নামে একটা বয়স্কভাতার কার্ড করে দেব।’ 

শিবগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী উন্নয়ন ফোরামের জেলা সভাপতি বিউটি বেগম বলেন, ‘আমরা শেফালী রানীর বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে তার পাশে দাঁড়াবো।’

এনএ/আরআই