• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২১, ০৪:৫৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২৩, ২০২১, ০৪:৫৪ পিএম

ধনীদের ক্লাবে নিষিদ্ধ পরীমনি

ধনীদের ক্লাবে নিষিদ্ধ পরীমনি

ঢাকার দুই ক্লাবে ঢালিউডের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পরিমনির বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন ক্লাবের সদস্যরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, পরীমনিকে বার ও ক্লাবগুলোতে নিষিদ্ধ করা হোক। শুধু ক্লাব সদস্যই নয়, ক্লাবগুলোর নিয়মিত অতিথিদের মধ্যে চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নায়ক, প্রযোজক, পরিচালক, কলাকুশলীরাও এমন দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করেছে। বার ও ক্লাবের সদস্যরা পরীমনির বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নিতে রীতিমতো চাপও প্রয়োগ করছিলেন। 

এরই প্রেক্ষিতে রাজধানীর বিভিন্ন সামাজিক ক্লাব ও বারে নিষিদ্ধ হচ্ছেন চলচ্চিত্র নায়িকা পরীমনি। ইতোমধ্যে ক্লাবগুলোর কর্তৃপক্ষের মধ্যে  পরীমনিকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নিষিদ্ধ হলে তিনি আর কখনোই ক্লাবে ঢুকতে পারবেন না। পরীমনি কিংবা এমন কাউকে ক্লাবে কোনো সদস্য নিয়ে গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট সদস্যের সদস্যপদ বাতিল করা হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা না এলেও মৌখিকভাবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রত্যেককে জানিয়ে দেয়া হবে।

ঢাকার একটি নামকরা ক্লাবের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পরীমনিকে ক্লাবের কোনো ফাংশনে অংশ নিতে নিষেধ করা হয়েছে। ক্লাবের কোনো সদস্য পরীমনিকে অতিথি হিসেবেও নিয়ে আসতে পারবেন না। সব সদস্যদের এ বিষয়ে নিষেধ করে দেয়া হয়েছে।

ক্লাব ও বারগুলোর এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক, শিল্পী ও প্রদর্শককরা। তারা বলছেন, ব্যক্তি বিশেষের দায়ভার কোনোভাবেই পুরো চলচ্চিত্র জগত নিতে পারে না।

গুলশান-১ এলাকায় অবস্থিত অল কমিউনিটি ক্লাব কর্তৃপক্ষ তাদের অভিযোগে জানিয়েছিল,গত ৮ জুন রাতে  পরীমনি তাদের ক্লাবে মদ খেয়ে মাতাল অবস্থায় অসদাচরণ ও ভাঙচুর করেছেন। ক্লাব বন্ধ হওয়ার পরও পরীমনি একজন সঙ্গীসহ জোর করে ক্লাবে ঢুকে বারে চলে যান। সেখানে মদ চেয়ে না পেলে চিৎকার-চেঁচামেচি করেন। ১৫ টি গ্লাস, ৯টি অ্যাশ ট্রে ও বেশ কয়েকটি প্লেট ভাঙেন তিনি। এক পর্যায়ে ৯৯৯-এ কল করে পুলিশ ডেকে মিথ্যা নালিশ করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি বুঝে পরীমনিকেই বকাঝকা করেছে।

শুধু তাই নয়; গণমাধ্যমে বোট ক্লাবের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ পায়। ফুটেজে দেখা যায়, ৯ জুন রাত ১২ টা ২২ মিনিটে ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে একটি কালো গাড়ি দাঁড়ায়। নামতে দেখা যায় পরীমণি, জিমি ও অমিকে। কিছুক্ষণ পর গাড়ি থেকে বের হন বনিও। ক্লাবের রিসিপশনেও অমির সঙ্গে পরীমনিসহ অন্যদের ঢুকেতে দেখা যায়। সেখানে আগে থেকেই ছিলেন নাসির ইউ আহমেদ।

পরীমণি ক্লাবে ঢুকেই বারের সামনে চেয়ারে বসে তার সঙ্গীদের নিয়ে মদ পান করছেন। এই সময় দূর থেকে বোট ক্লাবের পরিচালনা পরিষদের সদস্য নাসির ইউ মাহমুদ তাকে মদ পান করতে বারণ করেন। তখন পরীমণি একটি বোতল নিতে চাইলে নাসির ইউ মাহমুদ বলেন, আপনি কোনো বিদেশি মদ নিতে পারবেন না। এখানেও তাকে নিবৃত করার চেষ্টা করেন পরিচালনা পরিষদের সদস্য। 

জানা গেছে, পরীমনি মদপানে বাধা পেয়েই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এরপর ক্ষুব্ধ পরীমনি ক্লাবে ভাঙচুর চালান। গ্লাস, প্লেট ভাঙেন এবং নাসির ইউ মাহমুদের দিকে বোতল ছুড়ে মারেন। এক পর্যায়ে নাসির মাহমুদ ক্ষুব্ধ হয়ে পরীমণিকে চড় মেরে বসেন। পরবর্তীতে পরীমণিও সংবাদ সম্মেলনে চড় মারার বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। অনেকেই বলছেন, চড় মারার ক্ষোভ থেকেই ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা করেছেন পরীমনি। 

এদিকে গুলশান অল কমিউনিটি ক্লাবে পরীমনির ভাঙচুরের সিসিটিভির ফুটেজ পরীক্ষা করে সত্যতা পেয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। এখন পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে বোট ক্লাবের ভিডিও ফুটেজগুলো। প্রয়োজনে পরীমনি ও তার সঙ্গীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে পুলিশ।