• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০১৯, ০৮:২৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৩, ২০১৯, ০৮:৪৫ পিএম

পাহাড়ে বৈসাবির আদ্যোপান্ত

পাহাড়ে বৈসাবির আদ্যোপান্ত
ফুল অর্পণে ব্যস্ত পাহাড়ি-আদিবাসী কন্যারা -সংগৃহীত

বাঙালিদের চিরায়ত উৎসব ‘নববর্ষ’। বর্ষবরণ উৎসবে আমরা যেমন সমতলের বাসিন্দারা নানা আয়োজনে মেতে উঠি, উৎসব করি তেমনি দেশের পাহাড়ি-আদিবাসীরা উৎসবে উৎসবে ভরিয়ে দেন পাহাড়ি জীবনের অলিগলি। তারাও তাদের মতো করে নববর্ষ উদযাপন করেন। 

দেশের একটি বিশাল অংশজুড়ে রয়েছে আদিবাসীদের বাস। মোট  ৩১টি আদিবাসী গোষ্ঠী বসবাস করছেন বাংলাদেশ। তারমধ্যে শুধু চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলাতেই ১১টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস। তাদের বলা হয় ‘পাহাড়ি-আদিবাসী’।

বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চলেও আদিবাসীদের বসবাস রয়েছে। উত্তরবঙ্গের বরেন্দ্র অঞ্চলেও রয়েছে আদিবাসী।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আদিবাসীরা যুগ যুগ ধরে বংশ-পরম্পরায় বসবাস করে আসছেন। তাদের জীবনধারা, সংস্কৃতি ও আচার আচরণেও রয়েছে ভিন্নতা। তবুও সেসব উৎসবকে ঘিরে তাদের আগ্রহের অন্ত নেই। আদিবাসীদের উৎসবের বিশেষত্ব হচ্ছে- আদিবাসীরা অনেক শিক্ষিত হলেও তাদের সনাতনী উৎসব রীতিকে বর্জন বা ছাড়েনি, ছাড়েনি সংস্কৃতিকেও। পোশাক-আশাক-উৎসব মিলে তাদের জীবন -বৈচিত্র্য এখনও লক্ষ্য করার মতো।

বাঙালি সমাজে প্রচলিত কথা আছে, বারো মাসে তের পার্বণের দেশ বাংলাদেশ। এই প্রচলিত কথাটি প্রচল রয়েছে আদিবাসী সমাজেও। বিশেষত ফসলের সঙ্গে আদিবাসী উৎসব কঠিনভাবে যুক্ত। তাই ফসলকেন্দ্রিক এই উৎসব প্রবণতা আদিবাসী সমাজে লেগেই থাকে। বছরের প্রায় সবসময়ই আদিবাসী সম্প্রদায়ের কোন না কোনো পূজা-পার্বণকেন্দ্রিক উৎসব লেগেই থাকে। তবে সমতলে অধিবাসীদের একাধিক বড় উৎসব থাকলেও পাহাড়ি-আদিবাসীদের সবচেয়ে বড় উৎসব পহেলা বৈশাখ। 

তাদেরও উৎসব ঠিক বাঙালিদের মতোই। বাঙালিরা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পহেলা বৈশাখে একত্রিত হয়। আদিবাসীরাও তাই। মানুষের মধ্যে উৎসবের সাযুজ্যতার বড় প্রমাণ হচ্ছে পহেলা বৈশাখ। তবে আদিবাসীদের পহেলা বৈশাখের একেক সম্প্রদায়ের একেকটি নাম।
 

পার্বত্য চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজারের প্রধান তিনটি আদিবাসীদের পহেলা বৈশাখের উৎসবের নামগুলোকে মিলিয়ে একটা আলাদা নাম দেয়া হয়েছে। নামটা বৈশাখের সাথে মেলানো। সমতলে বাসিন্দা বলি ‘বৈশাখি’ আর পাহাড়ি-আদিবাসীরা বলেন ‘বৈসাবি’। ‘বৈসাবি’ নাম রাখার ব্যাপারে পার্বত্য অঞ্চলের একাধিক পাহাড়ি আদিবাসী গোষ্ঠীর উৎসবের নামের আদ্যাক্ষর দিয়ে বৈসাবির নামকরণ করা হয়েছে। তঞ্চংগা আর ত্রিপুরাদের বৈসু, মারমাদের সাংগ্রাই আর চাকমাদের বিঝু। তিনটার প্রথম অক্ষর মিলিয়ে ‘বৈসাবি’।

আদিবাসীদের একটি অংশ বর্মীপঞ্জি অর্থাৎ বার্মা বা মিয়ানমারের বছরের হিসাব মেনে চলে। তবে বেশিরভাগ আদিবাসী অবশ্য বাংলা বর্ষপঞ্জি মতে নববর্ষ পালন করে। 

এখন জেনে নেয়া যাক কয়েকটি আদিবাসী সম্প্রদায়ের নবর্ষের উৎসবের ইতিহাস ও ঐতিহ্য— 

● চাকমাদের বিঝু
পার্বত্য চট্টগ্রামে ১১টি আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাস। এসব সম্প্রদায়ের মধ্যে চাকমারা সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি আর বান্দরবানের পার্বত্য অঞ্চলে চাকমাদের বসবাস। চাকমারা প্রায় সবাই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। আর তাদের প্রধান সামাজিক উৎসব ‘বিঝু’। বছরের প্রথম এই দিনে তারা মাছ-মাংসসহ নানা রকম খাবার রান্না করেন। কারণ চাকমাদের বিশ্বাস, বছরের প্রথম দিনে ভালো ভালো খাবার-দাবার খেলে সারা বছর আর কোনও অভাব-অনটন থাকে না। তাদের বিশ্বাস নববর্ষের দিন ভালো কাটালে ব্যক্তিজীবন ও পারিবারিক জীবনেও সমৃদ্ধি আসে। অনেকে এই দিনে পূজা করেন। দিনের শেষে ছেলে-মেয়েরা বয়স্কদের প্রণাম করে আশীর্বাদ নেয়। এদিন মেয়েরা তাদের বাপ-দাদাদের যত্ন করে গোসল করান। এভাবেই চাকমারা নববর্ষ পালন করেন। বাংলা বর্ষপঞ্জি মতে বছরের শেষ দুইদিন ও নববর্ষের প্রথম দিন তাদের এই বিঝু উৎসব হয়। অর্থাৎ চৈত্রের ২৯ ও ৩০ আর বৈশাখের ১ তারিখ। উৎসবের প্রথম দিন অর্থাৎ ২৯ চৈত্র ফুল বিঝু আর দ্বিতীয় দিন ৩০ চৈত্র মূল বিঝু। তবে তাদের আসল উৎসব হয় পহেলা বৈশাখে। চাকমা ভাষায় এদিনটার নাম ‘গর্যাপর্যা দিন’। মানে গড়াগড়ি খাওয়ার দিন।

● মারমাদের সাংগ্রাইং পোয়ে
মারমাদের বর্ষবরণ উৎসবের নাম সাংগ্রাইং পোয়ে। মারমাদের ইতিহাস অন্যান্যদের চেয়ে একটু আলাদা। বহু বছর আগে ওরা মায়ানমারের পেগুরাজ্য থেকে এসে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস শুরু করে। তারপর পার্বত্য চট্টগ্রামে এসে বসতি স্থাপন করেছে। মনে-প্রাণে তারা বার্মার পেগু রাজ্যের নিয়ম-কানুন মেনে চলেন। পূর্বপুরুষদের বিশ্বাস থেকে তারা সরে আসেনি। তারা বর্মীপঞ্জি, অনুযায়ী জীবন-যাপন করেন। পহেলা বৈশাখে তারা পালন করে সাংগ্রাই উৎসব সাংগ্রাই উৎসবের সময় চারদিনের হলেও মারমাদের মধ্যে সপ্তাহজুড়েই থাকে উৎসবের আমেজ। উৎসবের প্রথম দিনকে মারমারা ‘সাংগ্রাইং অ্যাক্রো’ বলে। সাংগ্রাইংয়ে মূলত মারমারা চারদিকে পবিত্রতার রেশ, ভালো লাগার রেশ ছড়িয়ে দেয়। এদিন মারমা কিশোরীরা খুব ভোরে উঠে ফুল দিয়ে ঘর সাজায়। আর গৃহিণীরা ঘর-দোর চকচকে রাখতে ঘরের সব জিনিসপত্র ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করেন। ধর্মপ্রাণ মারমারা এদিন মন্দিরগুলো পানি দিয়ে ধুয়ে-মুছে রাখেন। বয়স্করা এদিন বৌদ্ধমন্দিরে গিয়ে নির্জলা উপোস করেন। তারপর বোমাং রাজার নেতৃত্বে শোভাযাত্রা বের করা হয় এবং পূজা-অর্চনা করে দিন কাটান তারা।

‘সাংগ্রাইং’ শব্দের অর্থ অবতরণের দিন। মানে ঈশ্বরের সত্তা এদিন অবতরণ করেন। মারমাদের উৎসব শুরু হয় মূলত গোয়াইন বুদ্ধমূর্তিকে গোসল করানোর মধ্য দিয়ে। মারমা সমাজে এদিনে সবাই অতীতের সব দুঃখ-ভেদাভেদ ভুলে যায়। কারো প্রতি অনুযোগ রাগ-বিদ্বেষ ভুলে উৎসবে মেতে ওঠে। সব বয়সী মানুষ ঘরে ঘরে ঘুরে সবাইকে শুভেচ্ছা জানায়। আর রাতের বেলা তরুণ-তরুণী আর কিশোর-কিশোরীরা পিঠা বানানো শুরু করে। এটাও তাদের কাছে এক ধরনের রীতি।

মারমাদের উৎসবের প্রাণ হলো পানি ছোঁড়াছুঁড়ির উৎসব। সাংগ্রাইং অ্যাক্রেই বা পূর্ণতার দিনে এই মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের আয়োজন করা হয়। কিন্তু গোয়াইন বৌদ্ধমূর্তিকে গোসল করানোর পরই শুরু হয় এই উৎসব। এই উৎসবকে মারমা ভাষায় বলে ‘মইতা রিলং পোয়ে’। পুরনো বছরের সমস্ত কালিমা ধুয়ে ফেলে অপরজনকে মৈত্রী বা বন্ধুত্বপূর্ণ শুভেচ্ছা জানাতেই তারা একজন আরেকজনের গায়ে পানি ছুঁড়ে ভিজিয়ে দেয়। এভাবে সবাই পুরোনো বছরের সব কালিমা ধুয়ে নতুন করে নতুন বছর শুরু করে। উৎসবের শেষ দিনকে ‘সাংগ্রাইং অ্যাথা’ বা প্রস্থান বলা হয়। বিদায় বললেও উৎসব কিন্তু সেদিনই শেষ হয় না। তারপরও আরও বেশ কিছুদিন ধরে আনন্দ উৎসব করে যায় মারমা সম্প্রদায়ের মানুষরা।

● ত্রিপুরাদের বৈসু
ত্রিপুরা পাহাড়ের একটি আদিবাসী গোষ্ঠী। ত্রিপুরাদের আদিনিবাস কিন্তু ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। ওরাও চাকমাদের মতোই চৈত্রের শেষ দুইদিন ও নববর্ষের প্রথম দিন- এ তিন দিন বৈসু উদযাপন করে। ত্রিপুরাদের বর্ষবরণ উৎসবের নাম বৈসুভিম। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান- তিনটি পার্বত্য জেলাতেই ত্রিপুরারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাস করে। তবে খাগড়াছড়িতেই তাদের জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি। উৎসবের প্রথম দিনকে তারা বলে হারিবৈসু, দ্বিতীয় দিনকে বৈসুম্মা আর পহেলা বৈশাখের দিনটিকে বলে বৈসুভিম। পুরোনো বছরের গ্লানি, জরা আর হতাশা ঝেরে ফেলে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়ার মধ্য দিয়ে নতুন প্রাপ্তির প্রত্যাশায় মঙ্গল কামনা ও আশীর্বাদ নেওয়ার দিন হচ্ছে বৈসুভিম। কিশোরীরা এদিন কলসি কাঁখে নিয়ে বড়দের খুঁজে খুঁজে গোসল করায় ও আশীর্বাদ নেয়। তরুণ-তরুণীরা রঙ খেলায় মেতে ওঠে। একজন আরেকজনকে রঙ ছিটিয়ে রঙিন করে দিয়ে গোসল করে আবারও আনন্দে মেতে ওঠে। এভাবে চলে বর্ষবরণের উৎসব।

● তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু
তঞ্চঙ্গ্যাদের বর্ষবরণ অনেকটা চাকমাদের মতোই। বান্দরবান ও রাঙামাটির পার্বত্য অঞ্চলে তঞ্চঙ্গ্যারা বাস করে। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মিল থাকায় অনেকে বলেন তঞ্চঙ্গ্যারা চাকমাদেরই আরেকটি অংশ। কিন্তু নৃতাত্ত্বিকভাবে এটা ভ্রান্ত। তঞ্চঙ্গ্যারা একটি আলাদা জনগোষ্ঠী। তাদের ভাষায় বাংলা আর অসমীয় ভাষায় অনেক মিল আছে। তাই তাদের ভাষাকে বাংলার অনেক কাছাকাছি মনে হয়।

তঞ্চঙ্গ্যাদের নববর্ষের উৎসব হয় অনেকটা চাকমাদের মতোই। পহেলা বৈশাখের দিনকেও তারা চাকমাদের মতোই গর্যাপর্যা দিন বলে। আর তারাও উৎসব করে ওই তিন দিন ধরেই। নববর্ষের দুইদিন আগেই মেয়েরা বন থেকে ফুল সংগ্রহ করে সেই ফুল দিয়ে ঘর সাজায়। আর উৎসব উপলক্ষে হরেক রকমের পিঠাও বানানো হয়। গৃহিণীরা তাদের বাড়ি-ঘর ও ঘরের রাজ্যের জিনিসপত্র পরিষ্কার করে ঝকঝকে তকতকে করে রাখেন। পরদিন ভোরে সবাই গোসল করে নতুন জামা-কাপড় পরে খুব আনন্দ-উৎসব করেন। ঘরে ঘরে রান্না হয় ঐতিহ্যবাহী খাবার। তৈরি হয় বহু রকমের পিঠা। রাতে ‘ঘিলা’ নামের এক খেলায় মেতে ওঠে সবাই। আর সেই সঙ্গে গ্রামে গ্রামে বসে নিজস্ব ভাষার লোক গানের আসর।

● ম্রো বা মুরংদের চাক্রান বা চাংক্রান
ম্রো বা মুরংরা সবগুলো পার্বত্য জেলায় বাস করে না। তাদের বাস শুধু বান্দরবানে। ওখানে তারা বাস করছেন বহুকাল আগে থেকে থেকে। তারা আবার আরাকানি পঞ্জিকা মানেন। তাই তারা ম্রাইমাব্দ অনুযায়ী চাক্রান উদযাপন করে। তবে তারাও তিনদিন ব্যাপী বাংলা নববর্ষ পালন করে। বর্ষবরণের এই উৎসবকে  তারা বলে ‘চাক্রান’ বা ‘চাংক্রান’। ‘চাক্রান চিং’ বা ‘পিয়োনী’র আগের দিন 

মেয়েরা বন থেকে ফুল সংগ্রহ করে খোঁপায় ফুল গুঁজে রাখেন সাঁওতাল রীতির মতোই। কিন্তু তারা আরাকানি পঞ্জিকাকে অনুসরণ করেন। তার মানে তাদের সাথে সাঁওতালদের কোন মিল নেই। ঘর-দোরের পাশাপাশি তারাও তাদের বৌদ্ধমন্দিরগুলো ফুল দিয়ে সাজান। রাতে ধুম পড়ে পিঠা বানানোর। এদিন ওরা বাঁশি বাজিয়ে ‘পুষ্প নৃত্য’ করতে করতে মন্দির প্রদক্ষিণ করে। ম্রো সমাজে আবার লাঠি খেলা খুবই জনপ্রিয়। চাংক্রানের মূল দিনে তারা এই খেলাও খুব খেলে। চাংক্রানের শেষ দিনে ম্রো সম্প্রদায় উপাসনা করে। সারাদিন ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে শেষ হয় তাদের এই উৎসব।

মৈত্রীর স্মারক
পাহাড়ে আগে যাওয়া যতো দুর্গম ছিলও, এখন অতোটা দুর্গম নেই। এখন পাহাড়ের উৎসব দেখতে সারাদেশ থেকে উৎসবপ্রিয় মানুষ যায়। তাছাড়া আদিবাসীরা এখন দেশের সব পাবলিক বা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, চাকরিতে সহজেই যোগ দিচ্ছেন। ফলে পাহাড়িদের বাঙালি বন্ধুরাও এ উৎসবে সামিল হন। উৎসবে অতিথিদের তার বরণ করেন শ্রদ্ধা ভক্তির সাথে। এভাবে উৎসবের মধ্য দিয়ে পাহাড়ি-আদিবাসী বাঙালির ভ্রাতৃত্ববোধ আরও গতিশীল হবে বলে আমরা মনে করে। কারণ আদিবাসী বাঙালি উৎসবে ভিন্নতা নেই। এটাই হতে পারে মৈত্রীর স্মারক।

ছবি : সংগৃহীত

ডিজি/এসএমএম