পছন্দ না হওয়ায় ভেঙে ফেললো প্রধানমন্ত্রীর ঘর

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১, ১২:২০ পিএম পছন্দ না হওয়ায় ভেঙে ফেললো প্রধানমন্ত্রীর ঘর

কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ ইউনিয়নের বর্ষাপাড়া গ্রামে ইসমাইল বিশ্বাস (৩৫) পেশায় একজন ভ্যান চালক। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে একটি ঝুঁপড়ি ঘরের মধ্যে বসবাস করছেন। একটু বৃষ্টি হলেই ঘরটি হয়ে ওঠে ব্যবহারের অনুপযোগী। অনুদানের একটি ঘরের জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে তিনি ঘুরেছেন। কিন্তু একটি ঘরের ব্যবস্থা কেউ তাকে করে দেয়নি বাধ্য হয়ে এই ঝুঁপড়ি ঘরেই সে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। ইসমাইল বিশ্বাস বর্ষাপাড়া গ্রামের নুর ইসলাম বিশ্বাসের ছেলে। 

অপরদিকে, একই গ্রামের মৃত রাঙ্গা মিয়া বিশ্বাসের ছেলে ওবায়দুল বিশ্বাস পেয়েছেন মুজিববর্ষের একটি ঘর। এই ঘরটি তার পছন্দ না হওয়ায় সম্প্রতি তিনি ভেঙে ফেলেছেন। তবে তার বাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করার মতো বড় একটি টিন-কাঠের ঘর রয়েছে। আর্থিক ভাবেও ওবায়দুল বিশ্বাস একজন স্বচ্ছল ব্যক্তি। এই ব্যক্তি কি ভাবে মুজিববর্ষের ঘর পেলো এমন প্রশ্ন এখন এলাকাবাসীর মুখে মুখে। 

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে স্থানীয় ইউপি সদস্য লায়েকুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, ওবায়দুল বিশ্বাস আমাদের এলাকায় একজন স্বচ্ছল ব্যক্তি। সে কোন ভাবেই মুজিববর্ষের ঘর পেতে পারে না। তার চেয়ে অনেক দরিদ্র ব্যক্তি আমাদের এলাকায় রয়েছে। তাদের না দিয়ে ওবায়দুল বিশ্বাসকে ঘর দেওয়াটা কোন ভাবেই উচিত হয়নি। তবে আমি শুনেছি স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে এই ঘরটি এনেছেন। ঘর নির্মাণের পরে তার পছন্দ না হওয়ায় তিনি ঘরটি ভেঙে ফেলেছেন । 

টাকা দিয়ে ঘর পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ওবায়দুল বিশ্বাস বলেন, হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ডের সভাপতি কামরুল বিশ্বাস আমাকে ভালোবেসে এই ঘরটি দিয়েছেন। এই ঘর আনতে আমার কোন টাকা লাগেনি। ঘরটি নির্মাণের পরে আমার পছন্দ না হওয়ায় আমি ভেঙে ফেলেছি। 

তবে ওবায়দুল বিশ্বাসের স্ত্রী লাইলী বেগম ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ঘর পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমার স্বামী ৫০হাজার টাকা দিয়ে ঘরটি এনেছেন । তবে কাকে টাকা দিয়েছেন তাহা আমার জানা নেই। 

হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ডের সভাপতি কামরুল বিশ্বাস বলেন, এই ঘরটি আমি দেইনি। ঘরটি হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান খান দিয়েছেন। 

হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান খান বলেন, হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ডের সভাপতি কামরুল বিশ্বাসের সুপারিশে আমরা মুজিববর্ষের ঘর পাওয়ার জন্য ওবায়দুল বিশ্বাসের নামটি নির্বাচন করেছিলাম। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, যেহেতু মুজিবর্ষের ঘরগুলো সরকারি অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়েছে। তাই এই ঘরগুলো ইচ্ছা হলেই ভেঙে ফেলা যায় না। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

জাগরণ/এমআর