সাতক্ষীরার ৫৮১ মণ্ডপে চলছে দুর্গা পূজার প্রস্তুতি 

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২১, ০১:৩৭ পিএম সাতক্ষীরার ৫৮১ মণ্ডপে চলছে দুর্গা পূজার প্রস্তুতি 

এবার সাতক্ষীরা জেলায় ৫৮১টি পূজা মণ্ডপে  শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী রোববার মহাপঞ্চমীতে সায়ংকালে দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘শারদীয় দুর্গোৎসব’। এই পুণ্যলগ্নে শাশ্বত কল্যাণ ও শান্তির বার্তা নিয়ে গিরিনন্দিনী জগদম্বা আসছেন শিশির সিক্ত ধরনীর বুকে। সাতক্ষীরাসহ চারিদিক সেজেছে বর্ণিল সাজে, সর্বত্র ধ্বনিত হচ্ছে মা আনন্দময়ী মহামায়ার আগমনী বার্তা।

সাতক্ষীরা জেলার সব মন্দিরে চলছে দুর্গোৎসব শুরুর প্রস্তুতি। ভাস্কররা ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমার সৌন্দর্য বর্ধন ও দুর্গোৎসবকে পরিপূর্ণভাবে সাজাতে। তবে অধিকাংশ মন্দিরে দুর্গাদেবীর আগমন উপলক্ষে ইতোমধ্যে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। কোথায়ও কাজ চলছে রং তুলির আঁচড় লাগানোর।

মহামারী করোনাকালে স্বাস্থ্য বিধি মেনে পূজার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সাতক্ষীরা স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে ধর্মীয় রীতি অনুসরণ করে পূজার সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। মণ্ডপে মণ্ডপে ধুপ আর ধুনো সুগন্ধি সুবাতাশ ছড়াবে চারিদিকে। ঢাক, ঢোল, কাঁশড়, বাঁশি, শঙ্কধ্বনিী আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হবে ‘শারদীয় দুর্গোৎসব’।

হিন্দু, মুসলিম, বৈদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষ আনন্দে একাকার হয়ে যাবে। এটি যেন বাঙ্গালীর এক মিলন মেলা, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা জগতিক সকল পাপ থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে মায়ের কাছে আরাধনা করবেন। দেবীর কাছে সঠিক পথের দিক কামনা করবেন, আগামী ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে দেবীকে বিদায় জানানো হবে।

সাতক্ষীরা সদর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শ্রী গৌর চন্দ্র দত্ত বলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১০৮টি পূজা মণ্ডপে শ্রীশ্রী শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। 

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝিটকি গ্রামের প্রতিমা ভাস্কর শ্রী অজয় কুমার পাল বলেন, এবছর দুর্গা প্রতিমা তৈরীর কাজের চাপ গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি। তাই দিন রাত পরিশ্রম করে মা দুর্গার প্রতিমা তৈরি করছি। এখন প্রতিমার রঙের কাজ চলছে। ২/৩ দিনের মধ্যে সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্যাংদহ গ্রামের মৃৎশিল্পি মধু দাস বলেন, কাজের অনেক চাপ থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হবে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পলাশপোল সার্বজনীন পূজা ম-পের সভাপতি শ্রী শম্ভু কুমার দে বলেন, মানুষের মনে করোনার ভয় থাকায় আনন্দ ছিল না। কিন্তু এবার মা মহামায়ার কৃপায় করোনা কমে যাওয়ায় সবার মনে অনেকটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। তাই এবার মানুষ দুগাপূজায় মেতে ওঠেছে। পূজা ভালোভাবে কাটবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

কলারোয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্রী সিদ্ধেশ্বর চক্রবর্তী জানান, এবছর কলারোয়া উপজেলা ব্যাপী ৪৪টি সার্বজনীন দুর্গাপূজা অনুষ্টিত হবে। এবার কয়েকটি মণ্ডপে অতিরিক্ত আকর্ষণ থাকায় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড় থাকতে পারে।

সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে ব্যাপক প্রস্ততি গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে পূজা মণ্ডপে পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও ভিডিপির পাশাপাশি থাকবে সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ও আইনশৃংখলা বাহিনী সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় থাকবে। পূজা মন্ডপ এলাকায় কোন বিশৃংখলা সৃষ্টি করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, জেলাব্যাপী শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সকল ধরনের প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। যেকোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে সর্বদা সজাগ রয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী।

জাগরণ/এমআর