লামাখালে জিও ব্যাগ স্থাপনে রক্ষা পেল ১২শ পরিবার 

বান্দরবান প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২২, ১১:৪৯ এএম লামাখালে জিও ব্যাগ স্থাপনে রক্ষা পেল ১২শ পরিবার 

বান্দরবানের লামা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকা রুপসীপাড়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে চলেছে লামা নামের একটি খাল। ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ের সব পানি এ খাল হয়ে মাতামুহুরী নদীতে পড়ে। বিগত বর্ষা মৌসুম গুলোতে প্রবল বর্ষণের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পানির স্রোতের টানে খালের অংহ্লাপাড়াস্থ ইব্রাহিম লিড়ার পাড়ার ১৪-১৫টি পরিবারের বসতবাড়ী খালে বিলিন হয়ে যায়। গেল বর্ষা মৌসুমে এ ভাঙ্গন চরম আকার ধারণ করে। এতে একটি মসজিদ ও বাজারসহ প্রায় ১২০০ পরিবার ভাঙনের মুখে পড়ে। 

এ বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। তিনি বান্দরবান পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) কর্মকর্তাদেরকে জরুরী ভিত্তিতে প্রকল্প গ্রহণ করে ভাঙন রোধে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ স্থাপনের নির্দেশ দেন। একই সময় মাতামুহুরী নদীর শীলেরতুয়া মার্মা পাড়ার ভাঙন রোধেও জিও ব্যাগ স্থাপনের নির্দেশ দেন মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। 

বাপাউবো সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্য মন্ত্রীর নির্দেশের পর বান্দরবান পানি উন্নয়ন বোর্ড ২৫ লক্ষ ৫৯ হাজার ৪৪৯ টাকার ব্যয়ে উপজেলা রুপসীপাড়া ইউনিয়নের লামা খালের ইব্রাহিম লিড়ার পাড়া এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে জিও স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পের কাজে নিযুক্ত ঠিকাদার মেসার্স গ্লোবাল এন্টারপ্রাইজ মালিক ওয়াকগ্যা মার্মা ৪০০ মিটার লম্বা লামাখালের পাড় ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ স্থাপন কাজ গত বছরের ২ জুন শুরু করলে ডিসেম্বর মাসে এ কাজ শেষ হয়। একই সময় শীলেরতুয়া মার্মা পাড়ায়ও ২০০ মিটার জিও ব্যাগ স্থাপনের কাজ শুরু করে শেষ করে ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র সচিব ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জামাল প্রকল্পের কাজ সরেজমিন পরিদর্শন করেন।

গত কয়েক বছরে প্রবল স্রোতের টানে ইব্রাহিম লিড়ার পাড়ার ফরিদ আহমদ সওদাগর, নুর মোহাম্মদ, ইব্রাহিম লিড়ার, সাধন কুমার বড়ুয়া ও হাসি মিয়াসহ ১৪-১৫টি বসবাড়ী খালে বিলিন হয়ে গেছে বলে জানান স্থানীয় মাষ্টার আবদুর শুক্কুর। তিনি বলেন, বর্তমানে জিও ব্যগ স্থাপনের কারণে ভাঙন রোধ হয়েছে একটি মসজিদ, বাজার, অসংখ্য ঘরবাড়ী ও ফসলি জমি। 

এদিকে শীলেরতুয়া মার্মার বাসিন্দা মংপ্রু মার্মা জানান জিও ব্যাগ স্থাপনের ফলে পাড়ার প্রায় ১২০০ পরিবার ভাঙন থেকে রক্ষা পেল। এ জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপিকে পাড়াবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
 
এ বিষয়ে রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছাচিংপ্রু মার্মা জানায়, এই ইউনিয়নের ইব্রাহিম লিড়ার পাড়া এলাকার ভাঙন রোধে প্রকল্পটি ছিল একটি স্বপ্ন। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে পাড়ার প্রায় ১২শত পরিবার এখন নিরাপদে রয়েছে। যাহা গত কয়েক কয়েক বছরেও স্বপ্ন ছিলো মাত্র। তাই আমি পার্বত্য মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। 

বাপাউবো’র বান্দরবান জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী অরূপ চক্রবর্তী বলেন, বাপাউবো কর্তৃক নদীর পাড় ভাঙন রোধে জরুরী ভিত্তিতে রুপসীপাড়া ইউনিয়নের অংহ্লা পাড়া ও লামা পৌরসভার শিলেরতুয়া মার্মা পাড়ায় জিও ব্যাগ স্থাপনের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এত শত শত পরিবারের বসতবাড়ী ভাঙন রোধ হবে। ভবিষ্যতে পৌর এলাকায় আরও কয়েকটি প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। 

দৈনিক জাগরণে/আরকে