মুচলেকা দিয়ে বাড়ী ফিরেন ৫ শতাধিক মানুষ

নরসিংদী প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২২, ১১:৫৯ এএম মুচলেকা দিয়ে বাড়ী ফিরেন ৫ শতাধিক মানুষ

নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের খোদাদিলা গ্রামের প্রায় ৫শতাধিক মানুষকে মুচলেকা দিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরতে হয়েছে। ঝগড়া নয় ,শান্তি চাই এই মর্মে মুচলেকা দিয়ে নিজ নিজ বাড়িতে উঠছে ।

বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তারা নিজ বাড়িতে ফেরে। দীর্ঘদিন পর বাড়িতে ফিরতে পেরে খুশি গ্রামবাসী।

চরাঞ্চলের এই গ্রামে দুপক্ষের ঝগড়ায় পরাজিত হয়ে দীর্ঘদিন বাড়ি ছাড়া হয়ে আত্মীয়-স্বজন কিংবা অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছিল এই গ্রামের প্রায় ৫শতাধিক মানুষ। বৃহস্পতিবার গ্রামের মাতব্বরদের কাছে আর কোনদিন ঝগড়া বিবাদে জড়িত হবে না মর্মে মুচলেকা দিয়ে গ্রামে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তারা।

আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দিপু ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আসাদুল্লাহ’র মধ্যে ক্ষমতা ও ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিক নিয়ে বিরোধীতা চলে আসছে। এরই জেড়ধরে ইউনিয়নের নেকজানপুর গ্রামে দুই ইউপি মেম্বার প্রার্থীদের কর্মীসমর্থকদের মধ্যে নির্বাচনপূর্ব সহিংসতায় ৩ জন নিহত হয়। এঘটনায় ৫৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে স্বপন নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। 

ইউনিয়নের এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্ধীর বিরোধীতার মধ্য দিয়েই নির্বাচন সম্পন্ন হয়। তাদের এই বিরোধীতায় স্থানীয় বিএনপির নেতৃস্থানীয় নেতাকর্মীরা টিকে থাকতে স্থানীয় বিএনপি নেতা কাইয়ুম এর নেতৃত্বে বিএনপির কর্মী সমর্থকরা এড. আসাদুল্লাহর সাথে হাত মেলায়। এর ফলে এড. আসাদুল্লাহর পক্ষ শক্তিশালী হওয়ায় দেলোয়ার হোসেন দিপুর লোকজনকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়। প্রায় দেড় মাস বাড়িঘর ছেড়ে মানবেতর জীবন-যাপন করে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াতে থাকে গ্রামের এই ৫ শতাধিক শিশু থেকে শুরু করে করে সকল বয়সের নারী পুরুষ।

এ অবস্থার অবসান ঘটাতে গ্রামের মাতব্বররা উদ্যোগী হন। গ্রামবাসীদের মধ্যে ঝগড়া ও প্রতিহিংসা পরিহার করে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি সৃষ্টির লক্ষ্যে মাতব্বরদের কাছে মুচলেকার মাধ্যমে খোদাদিলা গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষকে তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনে।

যারা বাড়িতে এসেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হাজী হাসেন আলী, শহিদ মিয়া, নজর পাগলা, হালিম, হানিফা প্রমুখ। গ্রামের মাতব্বর ও শীর্ষস্থানীয় নেতাদের এ মহতী উদ্যোগের ফলে গ্রামের সকলে ঝগড়া-বিবাদ ভুলে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গ্রামের উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে এলাকার সাধারন জনগন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
দৈনিক জাগরণ/আরকে