তামান্নার বাড়িতে প্রধানমন্ত্রীর ভালোবাসা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২২, ০১:৩৫ পিএম তামান্নার বাড়িতে প্রধানমন্ত্রীর ভালোবাসা

যশোরের ঝিকরগাছার জন্ম প্রতিবন্ধি অদম্য তামান্নার বাড়িতে  প্রধানমন্ত্রীর ভালোবাসা পৌঁছে দিতে ফুল, মিষ্টি ও নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে হাজির হলেন সাতক্ষীরা ৪ আসনের সংসদ সদস্য এস,এম,  জগলুল হায়দার। সংগ্রামী মেধাবী তামান্নাকে মিষ্টি মুখ করান এবং  পরিবারের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা জন্য দোয়া চান।   

জন্মগতভাবে দু হাত আর এক পা না থাকায় শারীরকি প্রতিবন্ধি হওয়ায় পিতা রওশন আলীকে স্কুলে স্কুলে ঘুরতে হয়েছে, সেই তামান্না আক্তার নূরা এক পায়ে ভর করে চড়েছে সফলতার এভারেস্টে। এক পায়ে লিখে এইচএসসি পরীক্ষাসহ বিগত সকল পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি।

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টায় তামান্নার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ভিডিও কল দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইসময় তামান্না কলটি রিসিভ করতে পারেননি। এরপর ৩টা ৩৬ মিনিটে তামান্নার একই নম্বরে এসএমএস লেখেন প্রধানমন্ত্রী। 

তিনি লিখেন, তুমি খুব সুন্দর দেখতে। আমি তোমাকে ফোন করেছিলাম। তোমার পড়াশোনা করতে যা দরকার আমি করবো। তোমার পরিবারে কে কে আছনে? তামান্না ওই এসএমএসের রিপ্লে না করায় তিন মিনিট পরে প্রধানমন্ত্রী আরেকটি এসএমএস  দেন। 

তখন তিনি লিখেন, তুমি নূর, মানে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তোমাকে এক ঐশ্বরিক জ্যোতি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তামান্না অফলাইনে থাকায় পরের মেসেজটাও দেখতে পায়নি।

সর্বশেষ, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে তামান্নার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ফোন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোটবোন শেখ রেহানা। তখন তামান্না ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বলে ওঠেন, আমি লন্ডন থেকে শেখ রেহানা বলছি, আমি কি তামান্না নূরার সঙ্গে কথা বলছি। তখন আবেগে কেঁদে ফেলে নূরা। কান্না থামাতে বলে শেখ রেহানা বলনে, কাঁদে না। টানা ভালো রেজাল্ট করায় তোমাকে অভিন্দন। তোমার সংগ্রামের কথা শুনেছি। তুমি খুব সাহসী। তুমি এসিয়ে যাও। আমরা দু বোন বেঁচে থাকা পর্যন্ত তোমাকে সহযোগতিা করে যাবো। যারা সাহস রেখে চলে তারা কখনো হেরে যায় না।

ওই সময় শেখ রেহানা জানান, তার বোন শেখ হাসিনার ফোন কলের বিষয়টি। 

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ফের রাত ৮ টার দিকে প্রধানমন্ত্রী ফোন করে তামান্না নূরার খোঁজ খবর নেন। তিনি তামান্নাকে আশ্বস্ত করে বলেন, তোমার পাশে আমি আছি তুমি এগিয়ে যাও। যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

প্রধানমন্ত্রীর ফোন পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন তামান্না ও তার পরিবার। কথা বলার ভাষা হারিয়ে শুধুই কাঁদেন। 

নুরার বাবা রওশন আলী জানান প্রধানমন্ত্রীর ফোন পাওয়ার পর আমরা কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমার জন্ম প্রতিবন্ধি মেয়ের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী নিয়েছেন এটা আমার জন্য বড় পাওনা। 

এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার অদম্য তামান্নার বাড়িতে প্রধানমন্ত্রীর ভালোবাসা পৌঁছে দিতে হাজির হন সংসদ সদস্য জগলুল হায়দার। তিনি তামান্নার হাতে নগদ ৫০ হাজার টাকা উপহার দেন।  

জাগরণ/আরকে