সোনাগাজীতে বৈধতা পেল ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা 

ফেনী প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২২, ০৩:২৫ পিএম সোনাগাজীতে বৈধতা পেল ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা 

সোনাগাজী প্রতিনিধি
সোনাগাজী পৌর এলাকায় অবৈধ অটোরিক্সা চলাচলের বৈধতা দিলেন মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন। যানজটে নাকাল পৌরবাসীসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের চাপে বুধবার (৯ মার্চ) ব্যাটারি চালিত সব যানবাহনের বন্ধ ঘোষণা দিলেও পরে শ্রমিকদের আন্দেলনের মুখে পুনরায় অবৈধ অটোরিক্সা চলাচলের বৈধতা দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) সকালে চালক ও মালিকরা পৌর শহরের জিরো পয়েন্টে জড়ো হয়ে অটোরিক্সা চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে। 

অটোরিক্সা চালক সমিতির সভাপতি মো. শাহাজাহানের সভাপতিত্বে ও সদস্য নুর করিমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মো. মানিক মিয়া, নুরনবী, মো. রিপন, বেলায়েত হোসেন, মো. মিস্টার, মো. রুবেল, নুর ইসলাম, মো. রনি ও জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

তারা দাবি করেন, সোনাগাজী উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা চালিয়ে কয়েক হাজার পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছে। সাধারণ মানুষ স্বল্প খরচে বাসা-বাড়িতে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারছে এবং পণ্য পরিবহন করছে। তাদের প্রশ্ন অটোরিক্সাগুলো যদি অবৈধ হয় তাহলে প্রকাশ্যে বাজারে বিক্রি হয় কি করে? আগে বাজারে বিক্রি বন্ধ করুন, তারপর আমাদের পেটে লাথি মারুন। 

তারা দীর্ঘক্ষন পৌরসভার জিরো পয়েন্টে অবস্থানের পর দুপুরে মেয়র খোকন ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাদের দাবি মেনে নিয়ে ব্যাটারি চালিত অবৈধ অটোরিক্সা চলাচলের উপর পূর্বের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এসময় তিনি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে শৃঙ্খলার সাথে রিক্সা চালাতে হবে। যত্রতত্র পার্কিং না করে যান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক ও চালক বলেন, কিছুদিন বন্ধ থাকার পর গত কয়েকদিন ধরে প্রতিমাসে ৩০০ টাকা হারে চাঁদা দাবি করেন পৌরসভার কয়েকজন কর্মচারী। এ নিয়ে স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে মেয়র অটোরিক্সা চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেন। আমরা তার কাছে গেলে তিনি পত্রিকার সংবাদের প্রতিবাদ করা ছাড়া অটোরিক্সা চালানোর সুযোগ দেয়া হবেনা বলে জানায়। পরে আগ্রহ ও ইচ্ছা না থাকলেও বাধ্য হয়ে আমরা মানববন্ধনের আয়োজন করি।

তবে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকনের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

জানা গেছে, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন গত বছর এক আইনজীবীর রিটের প্রেক্ষিতে দেশে ব্যাটারি চালিত প্রায় ৪০ লাখ যানবহন চলাচল বন্ধের আদেশ দেন। অভিযোগ রয়েছে আদালতের আদেশের পরও সোনাগাজীর পৌর মেয়র প্রতিটি অটোরিক্সার ৭০০ টাকার বিনিময়ে পৌরসভায় চলাচলের লাইসেন্স প্রদান করেছেন। প্রতিটি ব্যাটারি চালিত যানবহনের পিছনে তার স্বাক্ষরিত লাইসেন্স সাটানো দেখা যায়। মাত্র ১৫ হাজার ভোটার অধ্যুষিত ক্ষুদ্র পৌরসভায় তিনি প্রায় ১১ হাজার ব্যাটারি চালিত যানবহনের লাইসেন্স প্রদান করেন। বিপুল সংখ্যক ব্যাটারি চালিত যানবাহনের কারনে দিনরাত পৌর এলাকার প্রধান সড়কে যানজট লেগেই থাকে। যত দিন যাচ্ছে অটোরিক্সার পরিমান ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর কারনে এক প্রকার ঝুঁকির মধ্যে রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে পথচারীদের। এটা এখন রোধ করা না হলে রাস্তাঘাট চলাচলের অযোগ্য হয়ে যাবে।

সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএম জহিরুল হায়াত জানান, অবৈধ ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চলাচলের অনুমোদনের বিষয়ে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বা মেয়র আমাকে কিছুই অবগত করেননি। তিনি কি ভাবে অনুমোদন দিচ্ছেন তা আমার জানা নেই।

জাগরণ/আরকে