ময়মনসিংহে অপহৃত স্কুলছাত্রী উদ্ধার 

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২২, ০৪:৫৬ পিএম ময়মনসিংহে অপহৃত স্কুলছাত্রী উদ্ধার 

ময়মনসিংহে অপহ্নত স্কুলছাত্রী উর্মি আক্তার (১৪) কে উদ্ধার করেছে পিবিআই। 

সোমবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে পিবিআই, ময়মনসিংহ এক প্রেস বিজ্ঞতিতে এ তথ্য জানায়।

বিজ্ঞতিতে জানানো হয়, রবিবার (১০ এপ্রিল) বিকাল অনুমান পাঁচটায় সময় ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানাধীন সিডস্টোর এলাকাস্থ জনৈক নজরুল ইসলামের ভাড়া বাসা হতে বিবাদী তুহিনের হেফাজতে থাকা অপহৃত ভিকটিম স্কুলছাত্রী উর্মি আক্তার (১৪) কে উদ্ধার করা হয়।

বিজ্ঞতিতে আরো জানানো হয় ভিকটিম উর্মি আক্তার (১৪), পিতা-উজ্জল মিয়া, সাং-কালাদহ, থানা-ফুলবাড়ীয়া, জেলা-ময়মনসিংহ একই থানাধীন আছিম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী। বিবাদী তুহিন (১৯), পিতা-আ: সামাদ, সাং-কালাদহ পূর্বপাড়া, থানা-ফুলবাড়ীয়া, জেলা-ময়মনসিংহ ভিকটিম উর্মি আক্তারের প্রতিবেশী। 

কোভিড-১৯ মহামারীর কারনে ভিকটিমের স্কুল বন্ধ থাকার কারনে ভিকটিম বেশির ভাগ সময় বাড়িতে থাকত। বিবাদী তুহিন ভিকটিমের প্রতিবেশী হওয়ায় বিভিন্ন সময় আসা যাওয়ার পথে রাস্তা ঘাটে ভিকটিম উর্মি আক্তারকে একা পেলে প্রেমের প্রস্তাবসহ কু-প্রস্তাব দিত। উক্ত প্রস্তাবে ভিকটিম উর্মি আক্তার রাজী না হয়ে বিষয়টি তার বাবা ও আত্মীয়স্বজনদের জানায়। ভিকটিম উর্মি আক্তারের পিতা উজ্জল মিয়া ভিকটিম উর্মি আক্তারের মান সম্মানের কথা চিন্তা করে বিবাদী তুহিনের বাড়িতে যেয়ে তার বড়ভাই ও চাচাদের নিকট ঘটনাটি জানালে তারা ভিকটিমের পিতাকে আশস্ত করে যে, বিবাদী তুহিন আর ভিকটিম উর্মি আক্তারকে বিরক্ত করবে না। 

পরবর্তীতে কোভিড-১৯ সংক্রমন কমলে স্কুল খোলা হলে ভিকটিম উর্মি আক্তার স্কুলে যাওয়া ও প্রাইভেট শিক্ষকের নিকট আসা যাওয়া শুরু করে। এর এক পর্যায়ে গত ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর বিকাল অনুমান ৪ ঘটিকার সময় ভিকটিম উর্মি আক্তার তার সঙ্গী অন্তরা আক্তারসহ পাটিরা বাজারে ইদ্রিস আলী মাস্টারের নিকট হতে প্রাইভেট পড়ে বাড়িতে আসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে একই তারিখ বিকাল অনুমান সাড়ে ৪ ঘটিকার সময় পাটিরা হাই স্কুলের উত্তর পার্শ্বে রাস্তায় পৌছা মাত্রই পূর্ব হতে ওৎ পেতে থাকা বিবাদী তুহিন ও তার সহযোগিরা ভিকটিম উর্মি আক্তারের পথরোধ করে দাঁড়ায়। তখন বিবাদী তুহিন জোর পূর্বক পাজাকোলে করে ভিকটিম উর্মি আক্তারকে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নেয় এবং বিবাদী শাহিন (২৫) মোটর সাইকেল চালিয়ে দক্ষিণ দিকে চলে যায়। তখন ভিকটিমের সঙ্গী অন্তরার ডাক-চিৎকারে আশেপাশের লোকজনসহ সাক্ষীগণ দ্রুত ঘটনাস্থলে এগিয়ে এসে ভিকটিম উর্মি আক্তারকে বিবাদীদের কবল হতে উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। উক্ত ঘটনায় সংবাদ পেয়ে ভিকটিমের পিতা বিবাদী তুহিনের বাড়িতে যেয়ে তার চাচা ও ভাইয়ের নিকট বিষয়টি জানালে তারা ভিকটিমের পিতাকে অপমান করে তাদের বাড়ি হতে বের করে দেয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের পিতা উজ্জল মিয়া স্থানীয়ভাবে ভিকটিম উর্মি আক্তারকে উদ্ধারের অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে বিজ্ঞ আদালতে বাদী হয়ে বিবাদী তুহিন, তার বড়ভাই ও ২ চাচাসহ ১ প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে ফুলবাড়ীয়া থানায় আদালতে দায়ের করেন।
 
অ্যাডিশনাল আইজিপি পিবিআই হেডকোয়ার্টার্স, ধানমন্ডি, ঢাকা বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই ময়মনসিংহ ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার, গৌতম কুমার বিশ্বাস এর সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) খাজেম মাহমুদ মামলাটি তদন্ত করেন। 

পুলিশ সুপার, গৌতম কুমার বিশ্বাস এর দিক নির্দেশনায় ও তত্ত্বাবধানে তদন্তকারী কর্মকর্তা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভিকটিমের অবস্থান শনাক্ত পূর্বক রবিবার (১০ এপ্রিল) বিকাল অনুমান ৫ টার সময় ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানাধীন সিডস্টোর এলাকাস্থ জনৈক নজরুল ইসলাম এর ভাড়া বাসা হতে বিবাদী তুহিন এর হেফাজতে থাকা অপহৃত ভিকটিম স্কুলছাত্রী উর্মি আক্তারকে উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলার পিবিআই এর এসপি গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্রী অপহরণের ঘটনা। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআই ময়মনসিংহ জেলাকে প্রদান করা হলে পিবিআই কর্তৃক অত্র মামলার ভিকটিম উর্মি আক্তারকে উদ্ধারের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। 

পরে সোমবার (১১) উদ্ধারকৃত ভিকটিম উর্মি আক্তার (১৪) কে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হলে সে স্বেচ্ছায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে জবানবন্দি প্রদান করে।

জাগরণ/আরকে