● প্রবাসী আয় আরও বাড়ার আশা অর্থনীতিবিদদের
● কার্যকর হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদক্ষেপ
● ২০১৯-২০ বাজেটে থাকছে প্রণোদনা
চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে অনন্য উচ্চতায় বাংলাদেশ। নতুন রেকর্ড হয়েছে প্রবাসী আয়ে। দেশে প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা ১৬০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে ২১ জুন (শুক্রবার) পর্যন্ত ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা ১ হাজার ৬০৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। প্রবাসী আয়ের এ পরিমাণ অতীতের যেকোনও বছরের চেয়ে বেশি। চলতি অর্থবছর শেষ হতে আরও কয়েকদিন বাকি রয়েছে। রেমিট্যান্স আহরণের প্রবাহ অব্যাহত থাকলে ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষে রেমিট্যান্স সাড়ে ১৬০০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে
বলে আশা করা হচ্ছে।
২০১৮ সালে ব্যাংকিং চ্যানেলে এক হাজার ৫৫৭ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০৪ কোটি ডলার বা প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি। ২০১৭ সালে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৩৫৩ কোটি ডলার। এর আগের বছর ২০১৬ সালে এসেছিল ১ হাজার ৩৬১ কোটি ডলার। ২০১৫ সালে এক হাজার ৫৩১ কোটি ডলার। ২০১৪ সালে রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৪৯২ কোটি ডলার।
সূত্র জানায়, পবিত্র ঈদুল ফিতর কেন্দ্র করে গত মাসে অর্থাৎ মে মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত মে মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৭৫ কোটি ৫৭ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে পঠিয়েছিলেন। যা একক মাস হিসেবে এ যাবৎকালে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। গত চার বছরের মধ্যে দেশে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছে। এ সময় রেমিটেন্স এসেছিল এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসীদের রেমিটেন্স পাঠানোর পরিমাণ ছিল এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার। সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছরের এক হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।
২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট রেমিট্যান্স পাঠানোর ওপর প্রবাসী বাংলাদেশিদের ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ এক হাজার টাকা রেমিট্যান্স পাঠালে প্রবাসীরা প্রণোদনা হিসেবে ২০ টাকা পাবেন। এ জন্য বাজেটে একটি তহবিলও বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, গত কয়েক বছরে ব্যাংকিং চ্যানেল বহির্ভূত অবৈধভাবে মোবাইল ব্যাংকিং হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা বেড়ে যায়। ফলে নেতিবাচক প্রভাব পরে প্রবাসী আয়ে। তাই মোবাইলে হুন্ডি বন্ধ ও ব্যাংকিং চ্যানেল রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করতে নানা উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যার ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি হুন্ডি বন্ধে কঠোর হওয়াতে বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। আর প্রস্তাবিত বাজেটে প্রবাসীদের টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রণোদনার কারণে আগামীতে প্রবাসী আয়ে আরও নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হবে বলে জানান তারা।
এআই/এসএমএম