বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে (জুলাই-জুন) শেষ পর্যন্ত রেকর্ড ৪১ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে। যদিও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চূড়ান্ত হিসাবে প্রায় ১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরে শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) ও আয়কর বিভাগে সব মিলিয়ে প্রায় ২ লাখ ৫৯ হাজার ৯০০ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। যেখানে এনবিআরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা। আর মূল লক্ষ্য ছিল ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআরের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে পাওয়া চূড়ান্ত হিসাব থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) অনলাইনে অনুষ্ঠিত সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের কাছে এসব তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়েছে। বৈঠকে শুল্ক-কর ফাঁকি ঠেকাতে আরও বেশি কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি।
এনবিআরের তথ্যানুসারে, ২০২০-২১ অর্থবছর শেষে ৩ লাখ ১ হাজার কোটি টাকার সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চূড়ান্ত হিসাবে আদায় হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৫৯ হাজার ৯০০ কোটি টাকা কোটি টাকা। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ঘাটতি প্রায় ৪১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। গত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার মূল লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পিছিয়ে ৭০ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
এনবিআরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরের ১২ মাসে (জুলাই-জুন) আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক খাতে প্রতিষ্ঠানটির আদায় যথাক্রমে ৮৫ হাজার ৩৯১ কোটি, ৯৭ হাজার ৫০৯ কোটি এবং প্রায় ৭৭ হাজার কোটি টাকা। যেখানে সদ্য সমাপ্ত সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক খাতে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৭ হাজার কোটি, ভ্যাট থেকে ১ লাখ ১০ হাজার এবং শুল্ক খাত থেকে ৯৪ হাজার কোটি টাকা।
প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক হলেও করোনা প্রাদুর্ভাবে সৃষ্ট প্রতিকূল পরিবেশে রাজস্ব আহরণে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ বিষয়ে এনবিআরের আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস এ তিন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা বিধিনিষেধে সবকিছুতেই ধাক্কা লেগেছে। এর মধ্যেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগসহ বেশকিছু পদক্ষেপ রাজস্ব প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। যেখানে এনবিআর গত পাঁচ বছরে গড়ে ১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে রাজস্ব আদায় হয়, সেখানে মহামারির মধ্যেও প্রায় ১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এটাকে বড় ধরনের সাফল্য বলা যায়।
চলতি ২০২১-২২ বাজেট ঘোষণার আগে এনবিআর ২৯ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা কমানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করেছিল, যা অনুমোদিত হয়। ফলে নতুন লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৩ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা।
২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে ১ লাখ ২৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা, আয়কর ও ভ্রমণ কর থেকে ১ লাখ ৫ হাজার ৪৭৫ কোটি এবং আমদানি শুল্ক থেকে ৯৫ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়।
জাগরণ/এসকেএইচ