তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র এবং যমুনার বিস্তৃত চরের জমিতে ফসল উৎপাদন বাড়ানোর সুযোগ আছে। যাতে জাতীয় অর্থনীতি যোগ হতে পারে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ড সরকারের সহায়তায় পরিচালিত প্রকল্পের গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য।
চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও ফসল উৎপাদন বাড়াতে ২০১২ সালে প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেয় পল্লী উন্নয়ন একাডেমি এবং সুইস কনটাক্ট। চর উন্নয়ন ও গবেষণা কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়নে ১০ জেলার ২ লাখ ৭ হাজার একর চরের জমিতে মরিচ, পাট, ধান ও ভুট্টার ফলন বেড়েছে ৪ গুণ পর্যন্ত।
মেকিং মার্কেটস ওয়ার্ক ফর দ্য চরস প্রকল্পের আওতায় চাষিদের আধুনিক চাষ পদ্ধতির প্রশিক্ষণ, উন্নত বীজ ও ঋণ সুবিধা দেয়ায় ফসল উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। এতে ১২ লাখ পরিবারের জীবনমান উন্নয়নের সঙ্গে আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে ৮০ লাখ মানুষের।
চাষীরা বলছেন, আগে আমরা এক একরে ১০ থেকে ১৫ মণ পাট উৎপাদন হতো। ওই একই একরে এখন ৩০ থেকে ৩৫ মণ পাট উৎপাদন হয়।
চাষীদের আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ শেখানো, ভালো বিজ সরবরাহ, কৃষকের সুবিধার পাশাপাশি উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার ফলে এখনকার অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারে।
১০ বছর আগের তুলনায় একরে ধান উৎপাদন বেড়েছে ১৮ মণ, মরিচ ১৫ মণ আর পাট উৎপাদন বেড়েছে ৯ মণ পর্যন্ত। তবে, চরাঞ্চলে এখনও পড়ে আছে অনেক জমি, কর্মহীন আছেন অনেকেই। ফসল উৎপাদন আরও বাড়ানোর পাশাপাশি ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরির সুযোগ দেখছেন বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির কর্মকর্তারা।
একাডেমির মহাপরিচালক খুরশীদ ইকবাল রেজভী বলেন, 'আমাদের যে লক্ষ্য ছিলো সেটা আমরা এরই মধ্যে অর্জন করতে পেরেছি। এর আলোকে এটা আমরা চরের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাইছি।'
বগুড়া, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিটরহাট, রংপুর, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, টাঙ্গাইল ও পাবনার চরাঞ্চলে প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ হবে আগামী বছরে ডিসেম্বরে।
জাগরণ/চরেরকৃষি/এসএসকে