‘দানব ভিসির কাছে জীবনের কোনও মূল্য নেই’

সিলেট প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২২, ০৫:৫৪ পিএম ‘দানব ভিসির কাছে জীবনের কোনও মূল্য নেই’
শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর পর গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন ড. জাফর ইকবাল

শাবির শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর পর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, ‌দানব ভিসির কাছে তোমাদের জীবনের কোনও মূল্য নেই। দানবের জন্য তোমাদের জীবন বিসর্জন দেওয়ার কোনও মানে নেই। দানব শুধু নিজের স্বার্থকে প্রধান্য দিয়েছেন।

নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টা ২২ মিনিটে ১৬৩ ঘণ্টা পর আমরণ অনশন ভাঙলেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ শিক্ষার্থী। আন্দোলনের ১৩তম ও অনশনের ৮ম দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ড. ইয়াসমিন হক শিক্ষার্থীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান।

অনশন ভাঙানোর পর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‌দানব ভিসির কাছে তোমাদের জীবনের কোনও মূল্য নেই। দানবের জন্য তোমাদের জীবন বিসর্জন দেওয়ার কোনও মানে নেই। দানব শুধু নিজের স্বার্থকে প্রধান্য দিয়েছেন। তোমাদের আন্দোলনের কারণে নিশ্চিত থেকো দেশের বিশ্ববিদ্যালয়, ভিসি সিস্টেমটা ঠিক হবে। তোমরা ৩৪ জন ভিসির ঘুম হারাম করে দিয়েছো। আমাকে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে তোমাদের দাবি মানা হবে। দুটি মামলা তুলে নেওয়া হবে। আর সে কারণেই আমরা এসেছি। তারা না বললেও আমরা আসতাম, কিন্তু তোমাদের অনশন ভাঙতে বলতাম না। আর যদি আমাকে দেওয়া কথা তারা না রাখে তাহলে মনে করবো আমার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শুনে ভিসি অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদের সমালোচনা করেন ড. জাফর ইকবাল। 

এ সময় শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন পুরো দেশে আলোড়ন তুলেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তোমরা ইতিহাস গড়েছো। তোমাদের মাধ্যমে যে বার্তা গিয়েছে, তাতে ভবিষ্যতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগের আগে একবার অন্তত ভাবা হবে। তোমাদের সঙ্গে দেশের সব তরুণ আছে। আমি ধরে নিয়েছিলাম, অনশনের এখানে মেডিক্যাল টিম আছে। তারা সার্বক্ষণিক দেখভাল করছে। কিন্তু এখানে এসে দেখলাম, কোনও ডাক্তার নেই। ডাক্তাররা ছিলেন, কিন্তু তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে এখান থেকে সরিয়ে দিয়েছে। আমি এসব ঘটনা দায়িত্বশীলদের বলবো। এখানে অনশনকারীদের অবস্থা যখন এত খারাপ, তাহলে অসুস্থ ২০ জনের কী অবস্থা। আমি শঙ্কিত। এটা চরম অমানবিকতা।

গত ১৭ জানুয়ারি থেকে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৯ জানুয়ারি) থেকে একই স্থানে অনশন শুরু করেন ২৪ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে কয়েকজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল ভর্তি হন। বাসবভনের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেওয়ায় ১৭ জানুয়ারি থেকেই কার্যত অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন ভিসি ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।