রক্তচাপ কমাতে ৬ ফল

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২০, ০৫:১৩ পিএম রক্তচাপ কমাতে ৬ ফল

চিন্তামুক্ত কীভাবে থাকবেন, তা নিয়েও চিন্তার শেষ নেই। এ চিন্তার সাথেই বেড়ে যায় রক্তচাপ। যা নিয়ন্ত্রণে বেশ ধকল পোহাতে হয় রোগীদের। প্রায় ৯০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রেই এ রোগের নির্দিষ্ট কোনো কারণ জানা নেই। ডাক্তারের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ খেয়েও যেন লাগাম থাকছে না রক্তচাপে। তাই এর পাশাপাশি খাদ্যাভাসেও লাগাম টানার পরামর্শ দেন ডাক্তাররা।

বয়সের কোনো সীমবরেখা ছাড়াই এ রোগ বাসা বাঁধে মানবদেহে। তবে আক্রান্তের তালিকায় উর্দ্ধে রয়েছে বয়স্করাই।

অতিরিক্ত চিন্তা,অধিক ওজন,অলস জীবনযাত্রা,অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস,ডায়াবেটিস কিংবা বংশগত সূত্রও উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে বলে ধারণা করেন ডাক্তাররা। যা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে হৃৎপিণ্ড,কিডনি,মস্তিষ্ক ও চোখসহ ক্ষতি হতে পারে শরীরের বিভিন্ন অংশের।

তবে স্বাস্থ্যবিদরা জানিয়েছেন, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি ৬টি খাবারেও নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে এই ঘাতক রোগটি।

কলা
প্রতিদিন কলা খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে উচ্চ রক্তচাপ। কলায় থাকা উচ্চমাত্রার পটাসিয়াম ও অল্প মাত্রার সোডিয়াম শরীরের রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা, ভিটামিন এ, বি, সি এবং ক্যালসিয়াম, লৌহ ও পর্যাপ্ত খাদ্যশক্তি। অন্যান্য ফলের তুলনায় কলা দামে সস্তা। প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। তাই প্রতিদিন ২টি করে কলা খেতে পারেন।

ডাবের পানি
ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পটাশিয়াম। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। এছাড়াও রাইবোফ্লবিন, নিয়াসিন, থিয়ামিন ও পাইরিডোক্সিনের মতো উপকারী উপাদানও আছে। প্রতিদিন ডাবের পানি পান করলে শরীরের ভেতরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। রক্তচাপ কমানোর পাশাপাশি  শরীরের ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংসে এটি সহায়ক।

বেদানা
একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত, নিয়মিত কাঁচা বেদানা অথবা বেদানার রস খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এটি শরীরে রক্তের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও শরীরকে সচল ও সুস্থ রাখতে যে ভিটামিনগুলোর প্রয়োজন হয়, যেমন : ভিটামিন সি, ই, কে, ফলেট ও পটাসিয়ামসহ প্রায় সবকটিই মেলে এই ফলে। দীর্ঘকাল সুস্থ থাকতে খাদ্যাভ্যাসে এই ফলটিকে সঙ্গী করে নিতে পারেন।

সবুজ আপেল
নিয়মিত আপেল খান, ডাক্তার থেকে দূরে থাকুন। এমন পরামর্শ দেন অনেকে। নিয়মিত খাদ্য তালিকায় একটি সবুজ আপেল নিয়ন্ত্রণ করবে আপনার রক্তচাপ। হাই ফাইবার, সহজে হজম হওয়ার ক্ষমতা, প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভরপুর ফল। সুগার ও কার্বের পরিমাণও কম থাকে। অন্যদিকে প্রোটিন, পটাসিয়াম, আয়রন ও ভিটামিন-কে থাকে বেশি মাত্রায়। এছাড়াও আপেলের খোসার মধ্যে যে ফেনলিক উপাদান থাকে, তা রক্তনালিকার থেকে কোলেস্টস্টোরেল দূর করে। ফলে হার্টে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে।

মিষ্টি আলু
এই খাদ্যটি মিষ্টি হলেও প্রচুর পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকা জাদুর মতো। প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজ উপাদান যেমন ভিটামিন এ, সি, বি২, বি৬, ডি, ই এবং বায়োটিনের মতো ভিটামিনে সমৃদ্ধ থাকে মিষ্টি আলু। মিষ্টি হলেও রক্তে সুগারের মাত্রা না বাড়িয়ে বরং তা কমিয়ে রাখে। এতে প্রচুর পটাসিয়াম থাকে, যেটি শরীরের কোষে তরল ইলেকট্রোলাইটেসের ভারসাম্য বজায় রাখে। ‘যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় নিউট্রিশন ইনস্টিটিউটে’র এক গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে, মিষ্টি আলুতে থাকা ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ভারী ধাতুকে নষ্ট করে স্বাস্থ্য-ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।

অ্যাভোকাডো
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে পারে অ্যাভোকাডো। এ ফলটিতে যে পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকে তা শরীরের ক্লান্তি দূর করে ভালো ঘুমে সাহায্য করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। অ্যাভোকাডোর দ্রবণীয় ফাইবার রক্তের সুগার লেভেলকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে। ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে এবং ধমনী ফলকের ধীর বিকাশ ঘটাতে অ্যাভোকাডো খুবই উপকারী। অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দনও নিয়ন্ত্রণ করে এটি। প্রতিদিন একটি অ্যাভোক্যাডো উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমাতে পারে।