ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে স্বর্ণের বৈশ্বিক চাহিদা

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২১, ০৩:৪৫ পিএম ঘুরে  দাঁড়াতে শুরু করেছে স্বর্ণের বৈশ্বিক চাহিদা
ফাইল ফটো।

করোনা মহামারীর প্রভাবে সারা বিশ্বে যে সংকট দেখা দিয়েছে তা থেকে মুক্তি পায়নি বৈশ্বিক স্বর্ণের বাজারও। গত বছর মূল্যবান ধাতুটির বৈশ্বিক চাহিদা কমে ১১ বছরের সর্বনিম্নে নেমে যায়। তবে এ বছর চাহিদা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে স্বর্ণের চাহিদা বেড়েছে ৯ শতাংশ। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (ডব্লিউজিসি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীদের কাছে চাহিদা কমলেও বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) স্বর্ণে বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়েছে। পণ্য খাতে ভোক্তা বিনিয়োগ স্বর্ণের চাহিদাকে ৯৫৫ দশমিক ১ টনে উন্নীত করেছে। এ বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় চাহিদা বাড়লেও গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় চাহিদা অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে এ বছরের প্রথমার্ধে স্বর্ণের বৈশ্বিক চাহিদা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

ডব্লিউজিসি সম্প্রতি ‘গোল্ড ডিমান্ড ট্রেন্ড’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, চাহিদার উল্লম্ফনে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে স্বর্ণের দাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি আউন্স স্বর্ণের গড় দাম দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮১৭ ডলার ৪০ সেন্টে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল-জুন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বেড়েছে স্বর্ণালংকারের চাহিদা। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় স্বর্ণালংকারের চাহিদা ৬০ শতাংশ বেড়ে ৩৯০ দশমিক ৭ টনে উন্নীত হয়েছে। প্রযুক্তি খাতে মূল্যবান ধাতুটির চাহিদা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ শতাংশ বেড়ে ৮০ টনে পৌঁছেছে।

ডব্লিউজিসির ঊর্ধ্বতন বাজার বিশ্লেষক লুইস স্ট্রিট বলেন, মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধার অব্যাহত আছে। ফলে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে স্বর্ণের বৈশ্বিক চাহিদা। এক্ষেত্রে স্বর্ণালংকারের বার্ষিক চাহিদা জোরালোভাবে বাড়ছে।

এদিকে ঊর্ধ্বমুখী চাহিদায় সাড়া দিয়ে বেড়েছে স্বর্ণের বৈশ্বিক সরবরাহও। গত বছর মহামারী প্রতিরোধে গৃহীত নানা বিধিনিষেধের কারণে বাধাগ্রস্ত হয় স্বর্ণের বৈশ্বিক সরবরাহ। তবে চলতি বছর এ-সংক্রান্ত বাধা কমেছে। বিধিনিষেধ শিথিল হতে শুরু করায় এক বছরের ব্যবধানে মূল্যবান ধাতুটির সরবরাহ ১৩ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ১৭২ টনে দাঁড়িয়েছে। কাউন্সিল জানায়, এপ্রিল-জুনের মধ্যে ভোক্তাদের মাঝে স্বর্ণ ক্রয়ের প্রবণতা ছিল ইতিবাচক।

ডব্লিউজিসির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, অপ্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মাঝে স্বর্ণমুদ্রা ও বার ক্রয়ের ক্ষেত্রে আগ্রাসী মনোভাব দেখা গেছে। টানা চার প্রন্তিক এসব পণ্য ক্রয়ের পরিমাণ বেড়েছে। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ২৪৩ দশমিক ৮ টনেরও বেশি স্বর্ণমুদ্রা ও বার কেনা হয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে ক্রয়ের পরিমাণ বেড়েছে ৫৬ শতাংশ।

কাউন্সিল জানায়, দেশে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকেও স্বর্ণ ক্রয় অব্যাহত রেখেছে। এটি মূল্যবান ধাতুটির বৈশ্বিক মজুদ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

এদিকে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে স্বর্ণের বৈশ্বিক চাহিদা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ডব্লিউজিসি। পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ সময় স্বর্ণালংকারের চাহিদা ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টনের মধ্যে থাকবে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি। তবে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে স্বর্ণ খাতে বিনিয়োগ হ্রাসের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ডব্লিউজিসি।

    

জাগরণ/এসকেএইচ