যুদ্ধাপরাধ

পুতিনের গ্রেফতারি পরোয়ানা

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২৩, ১২:১২ এএম পুতিনের গ্রেফতারি পরোয়ানা
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ● ফাইল ফটো

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। 

আইসিসির অভিযোগ, ইউক্রেন থেকে শিশুদের বেআইনিভাবে রাশিয়ায় নির্বাসনসহ যুদ্ধাপরাধের জন্য পুতিন দায়ি। 

শিশুদের জোর করে ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দফতরের শিশু অধিকার বিষয়ক কমিশনার মারিয়া আলেক্সেভনা লোভা-বেলোভার বিরুদ্ধে এ পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) জাতিসংঘের সহযোগিতায় তৈরি করা একটি তদন্তে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ইউক্রেনে বিস্তৃত মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে রাশিয়া, যার মধ্যে রয়েছে জোরপূর্ব শিশুদের দেশান্তরিত করা। 

এ প্রতিবেদন প্রকাশের একদিন পরই রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।

শুক্রবার (১৭ মার্চ) নেদারল্যান্ডের হেগ ভিত্তিক এ আদালত এক বিবৃতিতে বলেছে, জোর করে ইউক্রনের শিশুদের নিয়ে যাওয়া এবং রাশিয়ার নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের অঞ্চলগুলো থেকে জোর করে শিশুদের রাশিয়ার নিয়ে যাওয়ার মতো যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে পুতিনের বিরুদ্ধে।

আদালত আরও বলেছে, এই রাশিয়ান নেতাকে শিশুদের নির্বাসিত না করতে বলেও তারা ব্যর্থ হয়েছেন।

বিবিসি জানায়, তবে পুতিন এবং লভোভা-বেলোভার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও, আইসিসির সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করার কোনো ক্ষমতা নেই। শুধুমাত্র সেই দেশগুলোর মধ্যেই এখতিয়ার প্রয়োগ করতে পারে যারা আদালত স্থাপনের চুক্তিতে সই করেছে।

কিন্তু রাশিয়া সেই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী নয়- তাই এটির বাস্তবায়নের সম্ভাবনা কম।

সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, আমাদের দেশের জন্য আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের ওই আদেশে অর্থহীন, এমনকি আইনি দৃষ্টিকোন থেকেও ওই আদেশ কোনো অর্থ বহন করে না। রাশিয়া রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়, আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতেরও অংশীদার নয়। ফলে ওই আদালতের আদেশ মানার কোনো দায়ও আমাদের নেই।

আইসিসির ওই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ইউক্রেইনের প্রসিকিউটর জেনারেল আন্দ্রেই কস্তিন বলেছেন, এটা কেবল ইউক্রেইনের জন্য নয়, পুরো আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামোর জন্যই একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত।

আইসিসি’র কৌসুলি করিম খান একবছর আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ, মানবতা-বিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যা নিয়ে তদন্ত শুরু করেন।

তিনি বলেন, ইউক্রেইনে চারবার সফরকালে তিনি শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ এবং বেসামরিক অবকাঠামোকে হামলার নিশানা করার অভিযোগ খতিয়ে দেখেছেন।

গতমাসে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া তাদের নিয়ন্ত্রিত ক্রাইমিয়া উপদ্বীপে বিভিন্ন স্থানে অন্তত ছয় হাজার শিশুকে আটকে রেখেছে।

প্রতিবেদনে এমন অন্তত ৪৩টি শিবির ও অন্য স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়েছে যেখানে ইউক্রেনের শিশুদের আটকে রাখা হয়েছে। গতবছর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে ব্যাপক পরিসরে ধারাবাহিক নেটওয়ার্কের অংশ হিসাবে একাজ করে এসেছে; বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

গতবছর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর সেখানে মানবাধিকার লঙ্গন ও ব্যাপক যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ করে আসছে ইউক্রেন ও তাদের পশ্চিমা মিত্ররা। তবে মস্কো বরাবরই সে অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। বিবিসি, রয়টার্স ও সিএনএন।

জাগরণ/আন্তর্জাতিক/এমএ