রাজীব কুমারকে গ্রেফতার নয়, জেরা হবে শিলংয়ে

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৯, ০৪:৫৩ পিএম রাজীব কুমারকে গ্রেফতার নয়, জেরা হবে শিলংয়ে
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার -ছবি : সংগৃহীত

 

দু-বছর ধরে বারবার সমন পাঠানো সত্ত্বেও তিনি তদন্তের মুখোমুখি হননি। অবশেষে মঙ্গলবার ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে- চিতফান্ড কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্তে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে হবে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে। কলকাতা বা দিল্লি নয়, তাকে জেরা করা হবে মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে। তবে আদালত একইসঙ্গে জানিয়ে দিয়েছে, পুলিশ কমিশনারকে গ্রেফতার করা যাবে না।

সিবিআইয়ের করা এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২০ ফেব্রুয়ারি। এর আগেই রাজিবকে জেরা করতে হবে। সূত্রের খবর, বুধবারের মধ্যে রাজীবের কাছে নোটিশ পাঠিয়ে সিবিআই জানিয়ে দেবে, শিলংয়ের কোথায়, কবে তাকে যেতে হবে। কমিশনারকে জেরা করার জন্য ৯ সদস্যের দল তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। তাদের এক মুখপাত্র জানান, যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত জেরা চলবে। তারপরেও তারা সন্তুষ্ট না হলে ২০ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন তা আদালতকে জানানো হবে।

গত রোববার রাজীব কুমারের বাড়িতে তাকে জেরা করতে গিয়ে পুলিশি হেনস্থার স্বীকার হাতে হয়েছে বলে আদালতে অভিযোগ জানিয়েছিল সিবিআই। আদালত বলেছে, এই নিয়ে পুলিশ কমিশনার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যসচিব ও ডিজি-কে ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হলফনামা দিতে হবে। তাদের উত্তরে সন্তুষ্ট না হলে ২০ ফেব্রুয়ারি তাদের সশরীরে আদালতে হাজিরা দিতে হবে।

মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সর্বোচ্চ আদালতের রায় জানার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপি নেতৃত্ব দু-পক্ষই নিজেদের জয় বলে দাবি করেছেন। মমতা বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইয়ের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে। তাকে গ্রেফতার করতেও বারণ করে দিয়েছে। এটা আমাদের নৈতিক জয়। গণতন্ত্র ও সবিধানের জয়। অন্যদিকে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের দাবি, কমিশনারকে এবার দেখা করতেই হবে। তাই এটা সিবিআয়ের জয়। মমতা এটাকে তাদের নৈতিক জয় বললেও ধর্না (অবস্থান ধর্মঘট) তুলবেন কি না তা স্পষ্ট করেননি।

গত রোববার সিবিআই অফিসাররা জেরা করার জন্য রাজিব কুমারের বাড়ি গেলে কলকাতার রাজপথে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে যায়। এর প্রতিবাদে সেই রাতেই কলকাতার হৃদপিণ্ড ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তার কথায়, সত্যাগ্রহ। তার এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছেন দেশের প্রায় সব বিরোধী দল। বস্তুত, লোকসভা ভোটের আগে মোদী-বিরোধী যে বিরোধী মঞ্চ তৈরির চেষ্টা চলছে, মমতার এই ধর্নামঞ্চ তাকেই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। এই সংঘাতকে সামনে রেখে কার্যত বিরোধী ঐক্যের বার্তা দিতে চাইছেন মমতা – মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আপাতত ঠিক আছে, এই ধর্না চলবে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।  কিন্তু আজ সুপ্রিম কোর্ট রায় ঘোষণা করায় তার সত্যাগ্রহ চলবে কি না, তা জানাননি মুখ্যমন্ত্রী।

এফসি