এলো ঈদ

জাগরণ প্রতিবেদক প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০২৩, ০১:০০ এএম এলো ঈদ

এক মাসের সিয়াম সাধনার পর মুসলিম সম্প্রদায় আজ ঈদুল ফিতর উদযাপন করবে। ঈদ ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাইকে এক কাতারে দাঁড় করায়। এটি কেবল আনন্দের বার্তাই নিয়ে আসে না, বরং এর মধ্য দিয়ে প্রসারিত হয় ইসলামে বর্ণিত সাম্যের জয়গান।

পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহর থেকে গ্রামে ছুটে গেছেন সাধারণ মানুষ। 

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই যেন ঈদের আনন্দ সমানভাবে উপভোগ করতে পারে সেজন্য দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়াতে সমাজের সচ্ছল ও বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। 

বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা ও সংযম পালনের পর অপার খুশি আর আনন্দের বারতা নিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর আমাদের মাঝে সমাগত। আমি দেশবাসীসহ সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানাই।’

রেওয়াজ অনুযায়ী এ বছরও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি। ১০ বছর দায়িত্ব পালনের পর এবার শেষবারের মতো বঙ্গভবনে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি।

বঙ্গভবনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘শনিবার সকাল ১০টায় বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি। এরপর সাড়ে ১০টা থেকে অন্যান্য অতিথির সঙ্গে দেখা হবে।’

এ বছর ১ হাজার ৫০০-এর অধিক ব্যক্তিকে বঙ্গভবনে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান হয়েছে এবং কোভিড টেস্ট ছাড়া সেখানে প্রবেশ করা যাবে না বলে তিনি জানান।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ভিডিও বার্তায় দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ঈদুল ফিতর উদযাপনকালে ঈদের আনন্দকে কাছের মানুষ এবং সমাজের দরিদ্র ও দুস্থ মানুষদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য আজ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঈদ মানেই আনন্দ। আসুন পরিবার, আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী এবং সমাজের সব গরিব, দুস্থ ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই এবং সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি।’

ঈদের দিন সকাল ১০টায় গণভবনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত তিন বছর ঈদের দিন প্রধানমন্ত্রীর কোনও আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি ছিল না। এ বছর আগের মতোই ঈদের দিন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, তিন বাহিনী প্রধান, কূটনীতিক, জ্যেষ্ঠ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি।

যে কেউ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে পারবেন, কোনও পাস লাগবে না। গণভবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিরাপত্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তল্লাশি করে প্রবেশের সুযোগ দেবেন।

মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ইসলাম ধর্মীয় পরিভাষায় এর অর্থ হলো পুরস্কারের দিবস। দীর্ঘ এক মাস রমজানে সংযমের পর মুসলমানরা এ দিনে আনন্দ করেন। হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী রমজান শেষ হলেই শুরু হয় শাওয়াল। উৎসব হিসেবে ঈদুল ফিতর পালন করা হয় এ মাসের প্রথম দিনে।

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে পাঁচটি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৭টায় প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে, সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। ঢাকায় প্রায় ১ হাজার ৪৬৮টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ঈদগাহ ও মসজিদ মিলিয়ে কোনও কোনও জায়গায় একাধিকবার ঈদের জামাত হবে। 

ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহে। হাইকোর্ট সংলগ্ন ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের জাতীয় ঈদগাহ মাঠে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি (নারী-পুরুষ) ঈদের জামাতে অংশ নিতে পারবেন। জাতীয় ঈদগাহের জামাতে রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, কূটনীতিকসহ অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং ঢাকাবাসী অংশ নেবেন। নারীদের নামাজের জন্য এখানে যেমন আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে, তেমনি বের হওয়ার জন্যও আলাদা গেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জাগরণ/জীবনযাপন/এসএসকে