বাইশে শ্রাবণ উপলক্ষে রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার স্মরণানুষ্ঠান

‘প্রাণে তোমার পরশখানি দিয়ো’

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৩, ১১:৪১ পিএম ‘প্রাণে তোমার পরশখানি দিয়ো’
সমবেশ সঙ্গীত পরিবেশন করছেন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা শিল্পীরা ● জাগরণ

মাওলা আলি ।।

শান্তিনিকেতনে বসে ১৯১৪ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লেখেন ‘শুধু তোমার বাণী নয় গো,/ হে বন্ধু,হে প্রিয়/ মাঝে মাঝে প্রাণে তোমার পরশখানি দিয়ো’। দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও ইন্দিরা দেবীর স্মরলিপিতে সাহানা রাগে ও ঝাঁপতালে রচিত পূজা পর্যায়ে এই গানের প্রতিপাদ্য করে শুরু হয়েছে দুই দিনের ‘রবীন্দ্র স্মরণানুষ্ঠান’।

বাইশে শ্রাবণ রবীন্দ্র প্রয়াণ বার্ষিকী। এই উপলক্ষে দুই দিনের স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা। রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস (ইউল্যাব)-এর রিসার্চ বিল্ডিং মিলনায়তনে এই স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

শুক্রবার শ্রাবণের বর্ষণমুখর সন্ধ্যায় জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা’ ও ‘আগুনের পরশমণি’ গানের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় গানে গানে স্মরণানুষ্ঠান। সংস্থার সাধারণ সম্পাদক পীযুষ বড়ুয়ার নেতৃত্বে এতে অংশ নেন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার শিল্পীরা। ছিলেন আমন্ত্রিত শিল্পীরাও।

প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী ও সংস্থার সভাপতি তপন মাহমুদ সুদূর অস্ট্রেলিয়া অবস্থান করছেন। সেখান থেকে ভার্চুয়ালি বলেন, ‘প্রতি বছর কবিগুরুকে তারই রচিত গান ও কথামালা দিয়ে স্মরণ করা হয়। এবারও তার ব্যতয় হয়নি। রবীন্দ্রনাথেরই রচিত বর্ষা বিষয়ক গানের পাশাপাশি প্রেম, পূজা ও প্রকৃতি পর্যায়ে গান ও কবিতা দিয়ে সাজানো হয়েছে এই স্মরণানুষ্ঠান।

সংস্থার সাধারণ সম্পাদক পীযূষ বড়ুয়া বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথের গান আবহমান কালের বাঙালি সংস্কৃতির মূল ধারাকে বিকশিত ও সমৃদ্ধ করেছে। রবীন্দ্রসংগীত হয়ে উঠেছে আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি বিকাশের অবলম্বন। তার সৃষ্টিকর্ম নিয়ে চর্চার মাধ্যমেই আমরা অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে লড়তে পারবো।’

সংস্থার অর্ধশতাধিক শিল্পী ছাড়াও দেশের খ্যাতিমান বেশ কয়েকজন শিল্পী এই আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন। প্রথম দিনে অংশ নেন ২৩ জন শিল্পী। প্রথম দিনে খন্দকার খায়রুজ্জামান কাইয়ুম গেয়ে শোনান ‘আজি শরততপনে’, তানজীনা তমা গাইলেন ‘মরণ রে তুঁহুঁ মম শ্যাম সমান’, আজিজুর রহমান তুহিনের কণ্ঠে শোনা গেলো ‘আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু’। রাকিবা খান লুবা গাইলেন ‘মেঘ বলেছে যাব যাব’, সুস্মিতা মণ্ডল ‘এই করেছ ভালো নিঠুর হে’, শিমু দে গাইলেন. ‘আমার প্রাণের পরে চলে গেলো’, প্রজ্ঞা লাবনী ‘মধ্যদিনের বিজন বাতায়নে’. সুমাইয়া ফারাহ খান ‘দীর্ঘ জীবনের পথ’, আক্তারুজ্জামান সবুজ গাইলেন ‘সুরের গুরু দাও গো’, নাসরিন আক্তারের কণ্ঠে শোনা গেলো ‘আজ কিছুতে যায় না মনের ভার’. বীণা দত্ত গাইলেন ‘আমার হিয়ার মাঝে’, নকুল চন্দ্র দাস ‘দাঁড়াও আমার আঁখির আগে’, বর্ষা রাহা গাইলেন ‘বিশ্বসাথে যোগে’, পরেশ চন্দ্র ভৌমিক ‘আমি শ্রাবণ আকাশে’, পারভীন আক্তার ‘ডাকব না ডাকব না অমন করে’, সাজ্জাদ হোসেন ‘কেন চোখের জলে’, আবদুর রশীদের কণ্ঠে শোনা গেলো ‘মরণের মুখে রেখে’, সঞ্জীব সূত্রধর গাইলেন ‘পেয়েছি ছুটি, বিদায় দেহো ভাই’, মাহযাবীন শাওলী গাইলেন ‘তুমি কি কেবলই ছবি’, ড. মাশফিদা আক্তার ‘ওই মালতী লতা দোলে’ এবং বিলু সিদ্দিকী গাইলেন ‘না চাহিলে যারে পাওয়া যায়’।

প্রথম দিনের আয়োজনের সমাপ্তি হয় আজিজুর রহমান তুহিনের পরিকল্পনা রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুভাবনা নিয়ে গীতিলেখ্য ‘তবুও অনন্ত জাগে’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।

এর আগে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্থার সহসভাপতি কাজল মুখার্জী। উপস্থাপনা করেন রাবিতা সাবাহ। সহযোগিতায় ছিলেন সীমা সরকার, কনক খান, অনিকেত আচার্য্য, ছন্দা রায় সহ আরও অনেকে।

স্মরণানুষ্ঠানের দ্বিতীয় ও সমাপনী দিনে শনিবার গাইবেন-স্মৃতি কনা পাল, অভিজিৎ দে, সুমনা দাস, জান্নাতুন নাইম পিংকী, পূরবী রায়, সুষ্মিতা দাস, শিল্পী সাহা, জয়শ্রী রায়, গায়ত্রী আচার্য, লিটন চন্দ্র বৈদ্য, সুচিত্রা চক্রবর্তী, মৃদুল চক্রবর্তী, সর্বাণী চক্রবর্তী, হুমায়রা মোর্শেদ, অলি রায় ভৌমিক, ফারজানা ইয়াসমিন লুনা, উত্তম সাহা, মনীষা কুন্ডু, সাজিদা সোনিয়া খান ইতি. সাবরিনা রহমান, শেখর কুমার কর্মকার, রমা বাঁড়ৈ. কাকলি গোস্বামী, তনুশ্রী দীপক। থাকবে একক আবৃত্তি পরিবেশনা। আর এতে অংশ নেবেন মজুমদার বিপ্লব।

দ্বিতীয় দিন ও সমাপনী আয়োজন শুরু হবে একই ভেন্যুতে সন্ধ্যা ৬টায়। আয়োজনটি সবার জন্য উন্মুক্ত।

জাগরণ/সংস্কৃতি/এমএ