‘মরিয়ম মান্নানের মা অপহরণের ঘটনা সাজানো’

খুলনা প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩, ০৫:৪৮ পিএম ‘মরিয়ম মান্নানের মা অপহরণের ঘটনা সাজানো’
ছবি ● সংগৃহীত

২০১৮ সালের জুলাই। নুরুল হক নুরুর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ‘কোটা আন্দোলন’ তখন তুঙ্গে। ওই সময় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে কোটা সংস্কারের আন্দোলনকারীদের কর্মসূচিতে গিয়ে ছাত্রলীগের হামলা এবং যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মরিয়ম মান্নান। সেই সময় তিনি দেশের মানুষের ব্যাপক সমর্থন এবং সহানুভূতি পেয়েছিলেন। চার বছর পর আবারও দেশের আলোচিত চরিত্র হয়ে যান সেই মরিয়ম মান্নান।

এবার আর আন্দোলন নয়, জমি নিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে বিরোধের জেরে নিজের মায়ের অপহরণ নাটক সাজিয়ে গোটা দেশের মানুষকে বোকা বানিয়েছিলেন মরিয়ম মান্নান নামের এই তরুণী। সাধারণ মানুষ তার পক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছিল। পুলিশ প্রশাসন পড়ে গিয়েছিল বেকায়দায়। এর মাঝে ময়মনসিংহের ফুলপুরে এক নারীর অর্ধগলিত লাশকে নিজের মা দাবি করে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলেন মরিয়ম মান্নান। কিন্তু তিনি হয়তো ভাবতেও পারেন নি, দ্রুতই পুলিশ আত্মগোপনে থাকা তার মাকে খুঁজে বের করবে!

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে খুলনা পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন খুলনা পিবিআই–এর পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টিই ছিল সাজনো নাটক। আর এই নাটকের মাস্টার মাইন্ড ছিলেন মরিয়ম মান্নান। পুলিশ সুপার বলেন, রহিমা বেগম স্বেচ্ছায় ২৮ দিন আত্মগোপনে ছিলেন। মরিয়ম মান্নান সবকিছু জানতেন এমনকী তার মা নিখোঁজ হওয়ার পর তাকে টাকাও পাঠিয়েছেন। তাদের খপ্পরে পড়ে নিরাপরাধ প্রতিবেশীদের জেলে যেতে হয়েছে। এখনও তাদের নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে হয়।

নিজের মাকে আত্মগোপনে পাঠিয়ে মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার সামনে মরিয়ম মান্নানের কান্না দেশবাসীকে ছুঁয়ে গিয়েছিল। এখন দেশবাসীর কাছে তিনি একজন ‘প্রতারক’ ছাড়া কিছুই নন। খুলনা পিবিআই–এর পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান আরও বলেছেন, ‘এটা চার্জশিট নয়, এটা হলো পুলিশ প্রতিবেদন। চার্জশিট হয় সাধারণ আসামিদের বিরুদ্ধে। কিন্তু এখানে আসামিদের কোনও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় নি। আদালত চাইলে মরিয়ম মান্নানদের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা করে চার্জশিট দেয়া যাবে।’

জাগরণ/অপরাধ/এসএসকে