আওয়ামী লীগের বর্ণাঢ্য কর্মসূচি

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস কাল

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ১৬, ২০১৯, ০৫:৪৮ পিএম শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস কাল
বঙ্গবন্ধুকন্যা, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

কাল ১৭ মে (শুক্রবার)। বঙ্গবন্ধুকন্যা, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩৯তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘ প্রবাস জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালের এই দিনে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।

সেই দিন সারা দেশ থেকে আসা লাখো মানুষ তাকে স্বাগত জানান, জনগনের ভালোবাসায় সিক্ত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

দলীয় প্রধানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনে নানা কর্মসূচি দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলো।

শেখ হাসিনার সুন্দর জীবন ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দেশব্যাপী (ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌর, থানা, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে) দোয়া, মিলাদ মাহফিলসহ  ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে বিশেষ প্রার্থনা, বিজয় র‌্যালি ও আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালন করা হবে বলে আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে।

দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোসহ সকল স্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক-শুভানুধ্যায়ী ও দেশের সর্বস্তরের জনগণকে দিসবটি যথাযোগ্য মর্য়াদায় পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। সে সময় বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

বিদেশে অবস্থানকালে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে শেখ হাসিনা দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে একই বছরের এই দিনে তৎকালীন সামরিক সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশে ফেরেন তিনি। শেখ হাসিনার সেই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে তার নিরবচ্ছিন্ন দীর্ঘ সংগ্রাম শুরু হয়। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সামরিক শাসক ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে তিনি সংগ্রাম করে গিয়েছেন। জেল-জুলম, অত্যাচার কোনোকিছুকেই ভয় পান নি। স্বৈরাচারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেছেন বারবার। দিনটি ছিল রোববার। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে তাকে একনজর দেখার জন্য কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শেরেবাংলা নগর পর্যন্ত লাখো মানুষের ঢল নামে।

সেদিনের মেঘের গর্জন, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ প্রকৃতি যেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার বদলা নেয়ার লক্ষ্যে গর্জে উঠেছিল আর অবিরাম মুষলধারে ভারি বর্ষণে যেন ধুয়ে-মুছে যাচ্ছিল বাংলার মাটিতে পিতৃহত্যার জমাট বাঁধা পাপ আর কলঙ্কের চিহ্ন। সে দিন ঝড়-বাদল আর জনতার আনন্দাশ্রুতে অবগাহন করে শেরেবাংলা নগরে লাখ লাখ জনতার সংবর্ধনার জবাবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘‘সব হারিয়ে আপনাদের মাঝে এসেছি, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই। আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ছোট ভাই রাসেলসহ সবাইকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি, আমি আপনাদের মাঝেই তাদের ফিরে পেতে চাই। আপনাদের নিয়েই আমি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তা বাস্তবায়ন করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই, বাঙালি জাতির আর্থ-সামাজিক তথা সার্বিক মুক্তি ছিনিয়ে আনতে চাই।’’

পরবর্তী সময়ে তার দৃঢ় নেতৃত্বের সুবাদে আওয়ামী লীগ চারবারের মত রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, সততা, মেধা, দক্ষতা ও গুণাবলিতে সম-সাময়িক বিশ্বের অন্যতম সেরা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা সূচিত হয়েছে তাতে দেশ সারা বিশ্বে নতুনরূপে পরিচিত হয়েছে। এ জন্য বলা যেতে পারে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রূপকার বাঙালির আশা-আকাঙ্খার বিশ্বস্ত ঠিকানা, বাঙালির বিশ্বজয়ের স্বপ্ন-সারথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূর-দৃষ্টি, বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ মহাকাশে। সমুদ্র বিজয়, সীমান্ত বিজয়ের পর মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ- বাংলাদেশ যেন নতুন বিস্ময় বিশ্বে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান।

জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। তারই নেতৃত্বে ক্রমাগত প্রবৃদ্ধি অর্জনসহ মাথাপিছু আয় বাড়ছে, কমছে দারিদ্র্যের হার।

দেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করতে তিনি ‘ভিশন-২০২১’ ও ‘ভিশন-২০৪১’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে শেখ হাসিনার এসব যুগান্তকারী কর্মসূচি বাংলার ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে থাকবে।

কর্মসূচি 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩৯তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকালে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন বলে গণভবন সূত্রে জানা গেছে।

বিকাল ৩ টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এমপি। আলোচনায় অংশ নেবেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিক ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ।

এছাড়া আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করবে।

শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ডাক বিভাগ স্মারক ডাক টিকিট অবমুক্ত করবে বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কাল ১৭ মে (শুক্রবার) আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এক বিবৃতিতে দেশ ও জাতির কল্যাণে, গণতন্ত্রের উন্নয়নে ও আধুনিক উন্নত সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ায় অসামান্য অবদান রাখার জন্যে শেখ হাসিনার সুন্দর জীবন ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দেশব্যাপী (ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌর, থানা, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে) দোয়া, মিলাদ মাহফিলসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা, বিজয় র‌্যালি ও আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এ দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসমূহের সকল স্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক-শুভানুধ্যায়ী ও দেশের সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এএইচএস/এসএমএম