প্রধানমন্ত্রীকে জাফরুল্লাহ

মেজরের ‘বাঁশির ফুঁ’তেই সবাই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: মার্চ ৮, ২০২০, ০৪:১৯ পিএম মেজরের ‘বাঁশির ফুঁ’তেই সবাই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল
মানববন্ধনে ডা. জাফরুল্লাহ - ফাইল ছবি

একাত্তরে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, আপনি একটা ভুল কথা বলেছেন যে, কোনো মেজরের বাঁশির ফুঁতে দেশ স্বাধীন হয়নি। সেসময় (মুক্তিযুদ্ধকালীন) সেই বাঁশির ফুঁটাই  গুরুত্বপূর্ণ ছিল। 

তিনি বলেন, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ যেমন সবাইকে আকর্ষিত করেছিল তেমনই সেই সময়ে দেশবাসী কোনো মেজরের ‘বাঁশির ফুঁ’র জন্যই অপেক্ষা করছিল। সেই ‘বাঁশির ফুঁ’তেই বাংলার মানুষ সেদিন যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ৭ মার্চ ও ২৭ মার্চের ঘোষণার মধ্যে খুব বেশি ফারাক নেই।

শনিবার (৭ মার্চ) বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলে দেয়া হয়েছিল মন্তব্য করে বলেন, ‘এমনভাবে বিকৃত ইতিহাস তৈরি করা হলো যে, কোনো এক মেজর এক বাঁশির ফুঁ দিল আর অমনি যুদ্ধ হয়ে গেল আর দেশ স্বাধীন হয়ে গেল। অথচ সে নিজেই চাকরি করত সরকারের অধীনে এবং চারশ টাকা বেতন পেত। তাকেই বানানোর চেষ্টা হয়েছিল স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে।’

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রোববার (৪ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও অযৌক্তিকভাবে বিদ্যুৎ ও পানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে ডা. জাফরুল্লাহ এসব কথা বলেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ভারতে আজ সব জায়গায় হত্যাযজ্ঞ চলছে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলছে। এর মূল হোতা হচ্ছেন নরখাদক নরেন্দ্র মোদী। তাকে কোনোক্রমেই বাংলাদেশে আসতে দেয়া উচিত হবে না। ভারতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে, কোনো বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়নি। তাই মোদী বাংলাদেশে এলে তার সঙ্গে করোনাভাইরাস আসতে পারে। এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকা দরকার।

বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ১১ তারিখ আপনাদের আন্দোলন যুক্তিসঙ্গত। তার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে নরেন্দ্র মোদী আসার বিরুদ্ধে আপনারা কথা বলুন। তাহলে দেখবেন জনগণ আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

তিনি দাবি করেন, ৭  মার্চের ভাষণ এক ব্যক্তির নয়- সেই ভাষণ তৈরি করেছিলেন কামাল হোসেন, তাজউদ্দিন আহমেদ, নজরুল ইসলাম, এরা সবাই মিলে। সবচেয়ে বড় অবদান ছিল সিরাজুল আলম খানের। যিনি ওই ভাষণে যোগ করেছিলেন- ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ কথা। সেই কথাটা শেখ মুজিবের মুখ দিয়ে বের হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ আজ সিরাজুল আলম খানের কথা বলে না।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী, কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার ও কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ। 

টিএস/ এফসি