বোর্ডের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, আফগানিস্তান ছাড়ছেন সিমন্স  

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ২০, ২০১৯, ১১:৩৫ এএম বোর্ডের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, আফগানিস্তান ছাড়ছেন সিমন্স  

বিশ্বকাপের পর আফগানিস্তানের প্রধান কোচের দায়িত্বে ইস্তফা দিতে যাচ্ছেন ফিল সিমন্স। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে এই সাবেক  ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ওপেনারকে দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড  (এসিবি)। সিমন্সের প্রধান দায়িত্ব ছিল আফগানিস্তানকে বিশ্বকাপে যেতে সহায়তা করা। সে লক্ষ্য অর্জিত হওয়ায় নিজের আফগান অধ্যায় এখানেই শেষ করতে চাইছেন এই ক্যারিবিয়ান।

সিমন্সের সাথে এসিবির চুক্তি ছিল মূলত ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্তই। আফগানিস্তানকে তিনি গত দেড় বছরে দারুণ এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন। তার অধীনেই ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে আইসিসি ট্রফিতে (আইসিসি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রশিদ-নবীদের আফগানিস্তা। এসিবিও তাই হেড কোচ সিমন্সের উপর আস্থা রেখে তার সাথে চুক্তি নবায়নে আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে এসিবির প্রস্তাবে না করে দিয়েছেন সিমন্স। 

জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সিমন্স বলেন, 'আমি নতুন চুক্তির ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করেই  এসিবিকে আমার অনাগ্রহ জানিয়ে দিয়েছি। জুলাইয়ের ১৫ তারিখে তাদের সাথে আমার চুক্তি শেষ হচ্ছে, তারপর আমি অন্য কোথাও যাবো বলে ভেবেছি।' 

সিমন্স আরও বলেন, 'আমি আসল ১৮ মাসের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলাম এবং আমার মনে হয় এই সময়ের মধ্যেই আমি অনেক কাজ করে ফেলেছি। এখন আমার জন্য সময় এসেছে অন্য কোথাও যাওয়ার। আমাকে এসিবি যখন নিয়োগ দেয়, তখন তাদের লক্ষ্য ছিল বিশ্বকাপে উত্তীর্ণ হওয়া। আমি যখন কোনো দায়িত্ব কাঁধে নেই, সবসময়ই আমার লক্ষ্য থাকে যে অবস্থায় দলকে পেয়েছি তার থেকে ভালো অবস্থানে যেন তাদের রেখে যেতে পারি। আমরা যেভাবে অনুশীলন করি, যেভাবে খেলাটা নিয়ে চিন্তা করি, যেভাবে অন্য দলগুলোকে মূল্যায়ন করি, সব ক্ষেত্রেই যেন উন্নতির ছাপ লক্ষ্য করা যায়। এই সব ক্ষেত্রেই উন্নতি করতে আমি খেলোয়াড়দের সাহায্য করেছি।'   

এমন একটা সময় সিমন্স আফগানিস্তানের প্রধান কোচ হিসেবে আর চুক্তি না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন, যখন এসিবি দলের অধিনায়ক পরিবর্তনের ব্যাপারে বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচিত হচ্ছে। আসগর আফগানের ৪ বছরের সফল অধিনায়কত্বের অবসান ঘটিয়া আফগানিস্তান তাদের ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব  দিয়েছে গুলবাদিন নাইবকে। টেস্ট ও টি-টুয়েন্টি দলের অধিনায়ক করা হয়েছে যথাক্রমে রহমত শাহ ও রশিদ খানকে। আফগানিস্তান ক্রিকেট দলের সবচেয়ে বড় দুই তারকা রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবী টুইট করে বোর্ডের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন। আসগর আফগানের প্রতি পূর্ণ সমর্থনও দিয়েছেন এ দু'জন। নবীর মতে, অধিনায়কত্ব পরিবর্তনের জন্য এটা একেবারেই সঠিক সময় নয়, দলে ভারসাম্য বজায় রাখার ব্যাপারে সাবেক অধিনায়ক আসগরের প্রশংসাও করেন তিনি। অন্যদিকে আফগানিস্তান ওয়ানডে দলের সহ-অধিনায়ক বোর্ডের এ সিদ্ধান্তকে দায়িত্বজ্ঞানহীন ও পক্ষপাতিত্বমূলক বলে উল্লেখ করেন। 

সিমন্সও বললেন, আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড কিংবা তাদের নির্বাচক কমিটি- কেউই অধিনায়ক পরিবর্তনের ব্যাপারে তার সাথে পরামর্শ করে নি, এমনকি জানানোরও প্রয়োজন বোধ করেনি! তিনি বলেন, 'আমি জানতামই না এমন কিছু হতে চলেছে। এটা ছিল শুধু এসিবি ও তাদের নির্বাচকদের সিদ্ধান্ত। আমি এটা কিভাবে গ্রহণ করতে পারি? এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের এখতিয়ার আমার নেই। তাই যা হয়েছে তা মেনে নিয়েই আমাকে এগিয়ে যেতে হবে এবং  নিশ্চিত করতে হবে যেন  অধিনায়ক পরিবর্তনের ফলাফল দলের বিশ্বকাপ প্রস্তুতিকে বাধাগ্রস্ত না করে।'

এমএইচএস