• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৪, ১২:৩৬ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ৭, ২০২৪, ১২:৩৬ এএম

ভোট উৎসব আজ

ভোট উৎসব আজ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট আজ। প্রায় ১২ কোটি ভোটার নিজেদের রায়ে বেছে নেবেন নিজে নিজ এলাকার জনপ্রতিনিধিদের। রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোট গ্রহণ চলবে।

দেশজুড়ে নেয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

আগামী পাঁচ বছরের জন্য দেশের আইনসভায় কারা হবেন জনপ্রতিনিধি, সেই লক্ষ্যে অনুষ্ঠেয় ভোট সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে নির্বাচন কমিশন।

নওগাঁ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল ইসলাম মারা যাওয়ায় ওই আসনের নির্বাচন স্থগিত করেছে ইসি। ফলে ৩শ’ আসনের মধ্যে ২৯৯ আসনে ভোট হবে।

শনিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল দেশবাসীকে নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, কোনো অনিয়ম হলে প্রয়োজনে ভোট বন্ধ করা হবে।  

তিনি এমন এক সময়ে এই হুশিয়ারি দিলেন যখন বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর ভোট ঠেকানোর ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনে আছে। এর মধ্যেই আবারও যাত্রীবাহী ট্রেনে নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। বেনাপেলো এক্সপ্রেসে ট্রেনে আগুন দেয়ার ঘটনায় প্রাণ ঝরছে নিরীহ চার মানুষের, যাদের মধ্যে আছে নারী শিশুও।

গত ১৫ নভেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৮ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয় সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। ওই দিন থেকেই আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হয়। প্রচার শেষ হয় ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টায়।

এবারের নির্বাচনে ১৮ দিন প্রচারের সময় পেয়েছেন প্রার্থীরা। এবারের নির্বাচনে ২৮টি দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে ১৯৭০ প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে দলীয় প্রার্থী ১৫৩৪ জন আর স্বতন্ত্র ৪৩৬ জন।

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী ২৬৬ জন, জাতীয় পার্টির ২৬৫, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ১৩৫ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ৬৬ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ১৩ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের ১০ জন প্রার্থী রয়েছেন। নির্বাচনে নারী প্রার্থী হিসেবে রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯০ জন। আর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অন্যান্য মিলে ৭৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

২৯৯ সংসদীয় আসনে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ২৪টি। এসব কেন্দ্রে ভোটকক্ষ দুই লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি। মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৮৯ হাজার ২৮৯ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৯ হাজার ৭৪১ ও নারী ভোটারের সংখ্যা ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৮ হাজার ৬৯৯। এছাড়া সারাদেশে এবার তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ৮৪৯ জন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন স্থানীয় ২০ হাজার ৭৭৩ জন পর্যবেক্ষক। প্রায় দুই শতাধিক বিদেশি পর্যবেক্ষক থাকছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এবারই প্রথমবারের মতো ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হচ্ছে। শুধু দুর্গম অঞ্চলের দুই হাজার ৯৬৪টি কেন্দ্রে ব্যালট পাঠানো হয়েছে ভোটের আগের দিন।

ব্যালট পেপার বাদে শনিবার সকাল থেকেই ঢাকার আসনগুলোর ভোট কেন্দ্রে পাঠানো হয় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র, জামানত বই, রশিদ বই, আচরণ বিধিমালা, প্রতীকের পোস্টারসহ বিভিন্ন ধরনের ফরমসহ প্রায় ২০ রকমের সরঞ্জামাদি।

রাজধানীর ১৫টি পয়েন্ট থেকে বিতরণ করা হয় ঢাকার ১৫টি আসনে ভোটের সরঞ্জাম। প্রিজাইডিং অফিসারের নেতৃত্বে পুলিশ, আনসার একটি করে টিম পরিবহনসহ কেন্দ্রগুলোতে এসব সরঞ্জাম নিয়ে যান। তারা ভোটকেন্দ্র প্রস্তুত করে সেখানেই রাতে অবস্থান করবেন।

সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য স্থাপনায় মোট ৪২ হাজার ২৪টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ভোটকক্ষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি।

ভোটের নিরাপত্তা রক্ষায় মাঠ পর্যায়ে পুলিশ, র‌্যাব, আনসার-ভিডিপি, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৮ লাখ  সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ঢাকায় শুক্রবার মধ্যরাত থেকে মোটরসাইকেল এবং শনিবার মধ্যরাত থেকে আরো কিছু যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পুলিশ।

ভোট গ্রহণের কাজে ৮ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত থাকবেন। স্ট্যান্ডবাই থাকবেন এক লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী। তিন হাজার ম্যাজিস্ট্রেট ও বিচারক মাঠে থাকছেন। তারা যে কোনো অপরাধে তাৎক্ষণিক শাস্তি দিতে পারবেন।

এবার ভোটে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে ৬৬ জন দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে দুইজন বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জন জেলা প্রশাসক।

জাগরণ/দ্বাদশজাতীয়সংসদনির্বাচন/এসএসকে/এমএ