• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৭, ২০২১, ১২:৩৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ২৭, ২০২১, ১২:৩৯ পিএম

লম্বা চুল : নবি (সঃ) এর সুন্নত

লম্বা চুল : নবি (সঃ) এর সুন্নত
ছবি- জাগরণ।

আমরা অনেকেই কোনো পুরুষ মানুষের মাথায় লম্বা চুল দেখলে অসন্তোষ প্রকাশ করি। স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক, অধ্যাপক, অধ্যক্ষ ছাত্রের মাথায় একটু লম্বা চুল দেখলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তারা ছাত্রদের লম্বা চুল কেটে আসতে বলেন। আবার অনেক সময় নিজেরাই কাচি দিয়ে ছাত্রের চুল কেটে দেন। আবার অনেক মাওলানা ও গ্রাম্য মাতুব্বর বাউলদের চুল-দাড়ি কেটে দিয়ে নাজেহাল করেন। প্রায়শ এমন খবর পত্রিকায় পাওয়া যায়। যেমন-লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার হামছাদী কাজির দিঘিরপাড় আলিয়া মাদ্রাসার ইংরেজি শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির কাচি দিয়ে দশম শ্রেণির ৬ ছাত্রের চুল কেটে দেন। (প্রথম আলো, ৮ অক্টোবর ২০২১)। সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন জোর করে ১৪ জন ছাত্রের চুল কাচি দিয়ে কেটে দেন। (প্রথম আলো, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১)। বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার জুড়ি মাঝপাড়া গ্রামের কিশোর বাউল মেহেদী হাসানকে রাতে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে গ্রাম্য মাতুব্বররা তার মাথা ন্যাড়া করে দেন। (প্রথম আলো, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১)।

২০১১ সালের এপ্রিল মাসে রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের চররামনগর গ্রামের লালন ভক্ত বাউল মোহাম্মদ ফকিরের বাড়িতে সাধুসঙ্গের মেলা বসে। উক্ত সাধুসঙ্গে দেশের নানা স্থান হতে বাউলরা এসে জমায়েত হন। মাওলানা মুফতি রিয়াজুল ইসলামের নেতৃত্বে স্থানীয় প্রভাবশালীরা সাধুসঙ্গে অংশগ্রহণকারী ২৮ জন বাউলের চুল-দাড়ি-গোঁফ কাচি দিয়ে জোর করে কেটে দিয়ে নাজেহাল করেন। (বিডিনিউজ ২৪ ডট কম, ৪ এপ্রিল ২০১১)। এ ঘটনা দেশে-বিদেশের গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায় এবং বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়। অনেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আছেন যারা তাদের এলাকার নাপিতদের নির্দেশ দেন কিভাবে চুল কাটতে হবে?

আমার প্রশ্ন হলো লম্বা চুল রাখা কি পাপ বা অন্যায় কিছু? চুল লম্বা বা ছোট রাখা যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার এবং ব্যক্তিগত অধিকার। আমি একজন শিক্ষক হিসেবে মনে করি, যে সকল শিক্ষক জোর করে ছাত্রদের চুল কাটেন, তারা শিক্ষক না হয়ে নাপিত হলে ভালো করতেন। শিক্ষক ক্লাসে যাবেন চক-ডাস্টার, কালি-কলম নিয়ে। তিনি কাচি নিয়ে ক্লাসে যান কিভাবে? এটা কি তার পেশার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ? তা-ও একজন শিক্ষক! মুফতি-মাওলানার হাতে থাকার কথা কিতাব, তার হাতে কাচি থাকে কিভাবে? শিক্ষক, মাওলানা, চেয়ারম্যান, মাতুব্বর সকলেই যদি কাচির ব্যবহার করেন, তাহলে নাপিত কী করে খাবে অথবা নাপিতের দরকার কি? আর তাদের চুল কাটার যদি এতই শখ হয়, তাহলে তারা সেলুন দিলেই পারেন!

যারা লম্বা চুল দেখলে অসন্তুষ্ট হন, ক্ষিপ্ত হন, তারা কি জানেন মহানবি হযরত মোহাম্মদ (সঃ) লম্বা চুল রাখতেন? হাদিস মতে জানতে পারি, তাঁর ছিল বাবরি চুল। তিনি চুলে বেনি বুনতেন। রাসুল (সঃ) যা করতেন, তা করা একজন মুসলমানের জন্য সুন্নত।  এখন দেখা যাক, রাসুলুল্লাহ (সঃ) কী ধরনের চুল রাখতেন?

হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন: রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর মাথার চুল কানের লতির নিচে এবং ঘাড়ের উপর পর্যন্ত দীর্ঘ ছিল। হাদিস নং ৪১৮৭, সুনান আবু দাউদ, ৫ম খণ্ড।

হযরত আনাস (রাঃ) বলেন: রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর মাথার চুল কানের লতি পর্যন্ত লম্বা ছিল। হাদিস নং ৪১৮৫, সুনান আবু দাউদ।

আল-আরাআ (রাঃ) বলেন: আমি কারুকার্যখচিত লাল চাঁদর পরিহিত রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর চেয়ে সুন্দর কোন বাবরি চুল ওয়ালাকে দেখিনি। মুহাম্মদের বর্ণনায় রয়েছে: তাঁর বাবরি চুল কাঁধ পর্যন্ত ছিল। শুবাহর বর্ণনায় রয়েছে: কানের লতি পর্যন্ত ছিল। হাদিস নং ৪১৮৩, সুনান আবু দাউদ।

আহমদ ইবন ইউনুস (রঃ) ---ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন: নবি (সঃ) তাঁর চুল ঝুলিয়ে রাখতেন এবং সিঁথি কাটতেন। হাদিস নং ৫৪৯২, বুখারি শরিফ, ৯ম খণ্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।

ইসহাক (রঃ), মুসা ইবন ইসমাইল (রঃ), আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত: নবি (সঃ) এর চুল কাঁধ পর্যন্ত দীর্ঘ হত। হাদিস নং ৫৪৮২, ৫৪৮৩, বুখারি শরিফ।

আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ) বলেন: আমি রাসুলুল্লাহ (সঃ) কে চুল জট করা অবস্থায় দেখেছি। হাদিস নং ৫৪৮৯, বুখারি শরিফ।

বারা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর মাথার কেশ কাঁধ স্পর্শ করত যা দু’কাঁধের মাঝামাঝি থেকে খানিক দূরে শোভা পেত। হাদিস নং ৫৮৯২, মুসলিম শরিফ, ৭ম খণ্ড, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার।

আবু ইসহাক (রঃ) ও বারা (রঃ) এর বরাত দিয়ে শুবাহ (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সঃ) ছিলেন মধ্যম আকৃতিবিশিষ্ট, দু’কাঁধের মাঝখানে কিছুটা দূর, লম্বা কেশধারী, যা কানের নিম্নাংশ পর্যন্ত লম্বিত। হাদিস নং ৫৮৯২, ৫৮৯১, মুসলিম শরিফ।

মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ (রঃ) --- বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আমি রাসুলুল্লাহ (সঃ) হতে অধিক সুন্দর ও সুপুরুষ আর কাউকে দেখিনি, বিশেষত যখন তিনি লাল কাপড় পরিধান করতেন, আর তাঁর মাথার চুল কাঁধ পর্যন্ত পড়ত। (হাদিস নং ৫০৬১, সুনানু নাসাঈ শরিফ, ৫ম খণ্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ)।

আবদুল হামিদ ইবন মুহাম্মদ (রঃ) --- বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আমি কোন লোককে এমন সুন্দর ও সুপুরুষ দেখিনি, যেরূপ দেখেছি রাসুলুল্লাহ (সঃ) কে। তাঁর চুল কাঁধের নিকটবর্তী থাকত। (হাদিস নং ৫০৬৩, সুনানু নাসাঈ শরিফ, ৫ম খণ্ড)।

হযরত মুহাম্মদ (সঃ) মাথায় বেণিও বাঁধতেন। উম্মে হানি বিনতে আবু তালিব (রাঃ) বলেন, একবার নবি করিম সঃ যখন মক্কায় আগমন করলেন, তখন তাঁর চারটি বেণি ছিল। (আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসির আদ-দামেশকী (রঃ), আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ষষ্ঠ খণ্ড, অনুবাদ ও প্রকাশনায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, জুন ২০০৪,  পৃ. ৩৯)।

মুজাহিদ (রাঃ) উম্মু হানির বরাত দিয়ে বলেন, নবি (সঃ) যখন (মদিনা থেকে) মক্কায় আগমন করেন, তখন তাঁর চুলে চারটি গুচ্ছ ছিল। হাদিস নং ৪১৯১, সুনান আবু দাউদ, ৫ম খণ্ড।

নবি করিম (সঃ) এর কান পর্যন্ত বাবরি চুল ছিল এবং তাতে মেহেদির ছাপ ছিল। ইবনে কাসিরের উক্ত গ্রন্থ, পৃ. ৪০। রাসুলুল্লাহ (সঃ) প্রথম দিকে সিঁথিবিহীন চুল আঁচড়াতেন। পরবর্তীকালে সিঁথি কাটতেন। তিনি মাথার মধ্যখান বরাবর সিঁথি কাটতেন। ইবনে কাসিরের উক্ত গ্রন্থ, পৃ. ৩৮। এখন কেউ যদি মাথার মাঝ বরাবর সিঁথি কাটে, তাহলে তাকে সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়। লম্বা চুল, কাঁধ বরাবর চুল, বাবরি চুল রাখলে সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়, নানা কটু কথা শুনতে হয়, জোর করে তার চুল কেটে দেওয়া হয়। যে ধর্মের নামে এ সব করা হয়, অথচ সে ধর্মের প্রবর্তকই এ রকম চুল রাখতেন যা ওপরে বর্ণিত হয়েছে। শুধু রাসুলুল্লাহ (সঃ) নন, তাঁর সাহাবিরাও লম্বা চুল রাখতেন। যেমন-

যায়িদ (রাঃ) (৫৮১-৬২৯) ছিলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর সাহাবি এবং পালিত পুত্র। ৬২৯ সালে তিনি মুতার যুদ্ধে শহিদ হন। তাঁর মাথায় দুইটি চুলের গুচ্ছ বা ঝুঁটি ছিল। (হাদিস নং ৫০৬৪ ও ৫০৬৫, সুনানু নাসাঈ শরিফ, ৫ম খণ্ড)।

মুগিরা ইবন শুবাহ (রাঃ) ছিলেন বিচক্ষণ, পণ্ডিত ও রাসুলুল্লাহ সঃ এর সাহাবি। তিনি হুদায়বিয়ার সন্ধির প্রাক্কালে খোলা তরবারি নিয়ে রাসুল (সঃ) এর প্রহরায় নিযুক্ত ছিলেন। মুগিরা (রাঃ) তাঁর চুলে চারটি সিঁথি করে চারটি ঝুঁটি বাঁধতেন। (আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসির আদ-দামেশকী (রঃ), আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, অষ্টম খণ্ড, অনুবাদ ও প্রকাশনায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, জুন ২০০৪, পৃ. ১০২)।

আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ) ছিলেন উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রাঃ) এর সহোদর ভাই। তাঁর পিতা খলিফা উমর রাঃ ও খলিফা উসমান (রাঃ) তাঁকে বিচারক হিসেবে নিযুক্ত করতে চেয়েছিলেন, কিন্ত তিনি রাজি হননি। তাঁর মাথায় ছিল দু’কাঁধ পর্যন্ত ঝুলানো বাবরি চুল। আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসির আদ-দামেশকী (রঃ), আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, নবম খণ্ড, অনুবাদ ও প্রকাশনায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, জুন ২০০৪,  পৃ. ১৬)।

আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রাঃ) এর মাথায়ও ঝুঁটি চুল ছিল। হাদিসের এক বর্ণনায় তার প্রমাণ মিলে। ইবন আব্বাস রাঃ বলেন: এক রাতে রাসুলুল্লাহ (সঃ) সালাত আদায় করছিলেন। আমি তাঁর বাম পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন তিনি আমার চুলের ঝুঁটি ধরে আমাকে তাঁর ডান পাশে নিয়ে দাঁড় করালেন। (হাদিস নং ৫৪৯৪, বুখারি শরিফ)।

প্রখ্যাত সাহাবি আনাস ইবন মালিক (রাঃ) এর মাথায় ঝুঁটি চুল ছিল। তিনি বলেন, আমার মাথায় চুলের গুচ্ছ ছিল। আমার মা আমাকে বলতেন, তোমার চুল কাটবে না, কেননা রাসুলুল্লাহ (সঃ) তা টানতেন ও স্পর্শ করতেন। (হাদিস নং ৪১৯৬, সুনান আবু দাউদ, ৫ম খণ্ড)।

রাসুলুল্লাহ (সঃ) তিন ধরনের চুল রাখতেন। যথা- ১. ওয়াফরা, ২. জুম্মা ও ৩. লিম্মা। কানের লতি পর্যন্ত চুল রাখাকে বলে ওয়াফরা। তার চেয়ে আরেকটু লম্বা বা ঘাড় পর্যন্ত পৌঁছলে জাম্মা বলে এবং যা কাঁধ স্পর্শ করে বা কাঁধকে ঢেকে ফেলে তা হচ্ছে লিম্মা। তবে হজ ও ওমরার সময় রাসুলুল্লাহ (সঃ) মাথা মুড়িয়ে ফেলতেন। (মুসলিম শরিফ, ৭ম খণ্ড, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, ডিসেম্বর ২০০৩, পৃ. ৪০৬-৪০৭)।

হযরত ইসা (আঃ) এর মাথার চুল লম্বা ছিল। (হাদিস নং ৫৪৮১, বুখারি শরিফ)।

সামরিক শাসক আউয়ুব খান (শাসনকাল ১৯৫৮-১৯৬৯) ছিলেন চুল কাটার উদ্যোক্তা। সামরিক শাসকেরা জোর করে ক্ষমতায় এসে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার জন্য, মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করার জন্য চটজলদি কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ১৯৫৮ মালে সেনা প্রধান আইয়ুব খান ক্ষমতা গ্রহণ করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কর্মসূচি ঘোষণা করেন। শুরু হলো কচুরি-পানা, ঝোপঝাড় পরিষ্কার করার অভিযান। সে সঙ্গে সামরিক বাহিনী শুরু করে কার চুল লম্বা তা কাটার তাণ্ডবলীলা। সামরিক বাহিনীর চুল ছোট। তাই তারা বলল, চুল ছোট রাখতে হবে। এরপর যত সামরিক সরকার এসেছে, তারাও একই কাজ করেছে। তাদের কাণ্ড দেখে গ্রাম্য মাতুব্বর, মাওলানা, চেয়ারম্যান-মেম্বররা উৎসাহ পায়। তাই মাঝে-মধ্যে তারা জোর করে চুল কেটে তাদের পেশি শক্তি জাহির করে।

কে কিভাবে চুল রাখবে বা চুল কাটবে না- তা তার নিজস্ব ব্যাপার। এ ব্যাপারে অন্যের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। কুরআনে চুল রাখা বা কাটার ব্যাপারে কোন নির্দেশনা নেই। তবে বাবরি চুল বা কাঁধ পর্যন্ত চুল রাখা খারাপ নয়, বরং সুন্দর দেখায়। চুল ঘাড় বা কাঁধ ছাপিয়ে লম্বা হলেই কেটে ফেলতে হবে এমন নির্দেশনা মুসলিম শাস্ত্রে নেই। তবে বাইবেলে লম্বা চুল রাখতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। যেমন- Doth not even nature itself teach you, that, if a man have long hair, it is a shame unto him? 11:14, First Corinthians, New Testament, Bible.  ( অর্থ: স্বাভাবিক বিবেচনায় বলা যায়, পুরুষ মানুষ লম্বা চুল রাখলে তাতে তার সম্মান থাকে না)। কিন্তু যিশুখ্রিস্টের (ইসা আঃ) চিত্র, ছবি ও ভাস্কর্য এর দিকে তাকালে লম্বা চুল দেখতে পাওয়া যায়। হাদিসেও বর্ণিত আছে ইসা (আঃ) এর লম্বা চুল ছিল যা ওপরে উল্লেখিত হয়েছে। মুসলিম শাস্ত্রে লম্বা চুল রাখতে নিষেধ করা হয়নি। বরং নবি করিম (সঃ) ও তাঁর সাহাবিগণ লম্বা চুল রাখতেন, তা তথ্য প্রমাণসহকারে উল্লেখিত হয়েছে। যারা ইসলাম ধর্মের দোহাই দিয়ে অন্যের লম্বা চুল কেটে দেন, তারা কি ইসলাম ও নবি (সঃ) সম্মত কাজ করেন? তবে একেবারে ছোট চুল বা অনেক লম্বা চুল ভালো দেখায় না। বাবরি চুলই সুন্দর দেখায়। তাই বাবরি চুল রাখা শরিয়তসম্মত বিধান। বাবরি চুল তিন ধরনের। ১. ওয়াফরা (কানের লতি পর্যন্ত), ২. জুম্মা (কান ও ঘাড় মাঝ বরাবর) এবং ৩. লিম্মা (কাঁধ পর্যন্ত)।

 

লেখক•সহযোগী অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর।

 

দ্রষ্টব্যঃ প্রকাশিত লেখাটি লেখকের একান্ত নিজস্ব মতামত এবং এর দায়-​দায়িত্বও লেখকের একান্ত নিজস্ব।