• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০১৯, ০৯:৫৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৩, ২০১৯, ০৯:৫৬ পিএম

বিনামূল্যে ডেঙ্গু চিকিৎসার দাবি বিএনপির 

বিনামূল্যে ডেঙ্গু চিকিৎসার দাবি বিএনপির 
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ডেঙ্গু রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতলে প্রয়োজনীয় ভুর্তকি প্রদানের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে দলটি ঘোষণা করেছে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সহযোগিতায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা কেন্দ্র স্থাপন  করে অনলাইনে ডেঙ্গু রোগীদেরকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেবেন। 

ডেঙ্গু রোগীর ব্যাপকতার কারণে হাসপাতালগুলোতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় মহানগরীর কমিউনিটি সেন্টারগুলো চিকিৎসার কাজে ব্যবহারের দাবিও জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

শনিবার (০৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির এ দাবি ও দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানান।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আমরা দাবি করছি সরকারকে ডেঙ্গু চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ভুর্তকি দিতে হবে এবং ডেঙ্গু জ্বর আক্রান্তদের জন্য বিনামূল্যে এই পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

তিনি বলেন, সরকার এতো টাকা খরচ করতে পারে বিভিন্ন সেক্টরে। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে কোটি কোটি টাকা জমা হয়। সেটা দেখা যায় বিভিন্ন ব্যক্তির জন্য চলে যায়, তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের জন্য। কিন্তু সমাজ ও রাষ্ট্রের মানুষ যখন বিপদে পড়েছে তখন তাদের জন্য এই অর্থ (ত্রাণ তহবিলের) ব্যবহার করাটা অত্যন্ত জরুরি বলে আমরা মনে করি এবং সরকারের উচিত হবে এ বিষয়ে আরও ফান্ড যোগাড় করে সেখানে বিনামূল্যে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। 

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে বৈঠকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর সহযোগিতায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা কেন্দ্র স্থাপন করবেন। সেখানে থেকে অনলাইনে ডেঙ্গু রোগীদেরকে তারা পরামর্শ দেবেন।
তিনি বলেন, গতকাল আমার একটা বক্তব্যে কনফিউশন তৈরি হয়েছে। জরুরি অবস্থার বিষয়টি। আসলে এটি ওইভাবে আমি ঠিক বলতে চাইনি। আমি যেটা বলতে চেয়েছি তাহলো আপদকালীন জরুরি ব্যবস্থা। ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি আরও বলেন,  অর্থাৎ ডেঙ্গু একটা বড় রকমের সমস্যা তৈরি হয়েছে। যেটা মোকাবিলায় আমি আপদকালীন জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলে জরুরি অবস্থার কথাটা বলেছিলাম। আসলে এটার মিনিংটা হচ্ছে, বড় আপদ বলে আপদকালীন জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমি কথাটা বলেছিলাম।

ফখরুল বলেন, ডেঙ্গু সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিদেশ যাওয়া এবং সিটি করপোরেশনের মেয়রদের বক্তব্যসমূহ মিলিয়ে এটা একটা লেজে গোবরে তৈরি করে ফেলেছে সরকার। তারা এই সমস্যা সমাধান করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এটা এখন এতো বড় আকার ধারণ করেছে যে, এটা এখন ৬৪ জেলায় চলে গেছে। এটা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে ব্যবস্থা দরকার ছিলো সে ব্যবস্থা সরকার নিতে পারেনি। অর্থাৎ মশা মারার জন্য যে ওষুধ যেটা তারা আনতে পারেনি এবং এতো অল্প সময়ের মধ্যে আমদানি করার সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।

উত্তরায় মশার উপদ্রুপের কথা বলতে গিয়ে ফখরুল বলেন, আমি যে বাসায় থাকি তার পাশেই একটা বড় পাকা ড্রেন আছে যা আজ  পর্যন্ত আমি দেখিনি পরিষ্কার করা হয়েছে। আর মশার ওষুধ যারা দেয় তাদেরকে গত দেড় মাস আমি দেখিনি। ঢাকা শহরে এই ব্যাপারটা সবাই জানে।

তিনি বলেন, আমরা গতকাল একটি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানে দেখেছি যে, নিজে নিজের উদ্যোগে চিকিৎসা নিচ্ছে। এখানে সরকার একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো যে, তারা সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিনামূল্যে পরীক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো এটা এতো অপ্রতুল যে, কেউ সুবিধা পাচ্ছে না। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ৫০০ টাকা নির্ধারণ করেছিলো পরীক্ষার জন্য, সেটা কিন্তু তিনটা পরীক্ষা করতে হয়। ফলে ১৫শ টাকা এমনি এসে যায়।

দেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ফখরুল বলেন, বন্যা পরবর্তী দুর্গতদের মধ্যে কেন্দ্রীয় ত্রাণ কমিটির নেতৃত্বে ড্যাব দুর্গত এলাকায় ওষুধ-পত্র বিতরণ ও চিকিৎসা সেবা দেবে বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে কৃষকদের কৃষি পূর্ণবাসনের জন্য দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিতে কৃষক দল ও এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ থাকবেন বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।

‘নির্বাচন কমিশনের স্মার্ট কার্ড প্রসঙ্গে’ মির্জা ফখরুল বলেন,  আমরা দেখেছি যে, নির্বাচন কমিশনের স্মার্ট কার্ডের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি। এটাকে বিশ্বব্যাংক কালো তালিকাভুক্ত করেছে দুর্নীতির কারণে। এই বিষয়টা জাতির কাছে একেবারে অস্পষ্ট। এখন পর্যন্ত স্পষ্ট কোনো কিছু জাতি জানে না। আমরা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছ থেকে একটা পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা দাবি করছি।

‘খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির সংবাদ সঠিক নয়’ কয়েকটি গণমাধ্যমে খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তি নিয়ে সৌদি আরব যাচ্ছে- এই রকম সংবাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন,  আমি এ সম্পর্কে কিছুই বলতে পারবো না, এই সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আসলে প্যারোলের ব্যাপারে আমরা এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করিনি, কোথাও কোনো চিঠিও দেইনি, আমরা কোথাও কোনো কথাও বলিনি। সুতরাং এটার প্রশ্নই উঠতে পারে না আমাদের দিক থেকে, আওয়ার পার্টি পয়েন্ট অব ভিউ। এটা সম্ভবত ওই যে সৃজনশীলতা আপনাদের সাংবাদিকদের সেখান থেকে বোধহয় এসেছে আর কী।

বিএনপি মহাসচিব জানান, ঈদের পর খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন আরও বেগবান করার জন্য বিভাগীয় সমাবেশগুলো দ্রুত শুরু করা হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে লন্ডন থেকে স্কাইপির মাধ্যমে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুক্ত ছিলেন।

বৈঠকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া  ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন,  ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।

টিএস/বিএস 
 

আরও পড়ুন