• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২১, ০৬:৫১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৪, ২০২১, ০৯:৩২ পিএম

ঈদেও নিস্তব্ধ পর্যটনকেন্দ্র

ঈদেও নিস্তব্ধ পর্যটনকেন্দ্র

ঈদ মানেই আনন্দযাত্রা। মুখরিত পর্যটনকেন্দ্র। খুশির খোঁজে ছোটাছুটি। এসবই যেন সংস্কৃতি। কিন্তু সব থমকে দিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস। ঈদের ছুটিতেও নীরব-নিস্তব্ধ রয়েছে পর্যটনকেন্দ্রগুলো।

রাঙামাটির ঝুলন্ত ব্রিজ, প্রকৃতির ভূ-স্বর্গখ্যাত সাজেক ভ্যালী, পুলিশ পলওয়েল পার্ক, আরণ্যক পিকনিক স্পট, ডিসি বাংলোসহ সবকটি পর্যটনকেন্দ্র যখন পর্যটকের ভিড়ে জমজমাট থাকার কথা, তখন সেখানে নেই মানুষের দেখা। কেবল বিশাল শূন্যতা পাহারা দিচ্ছে পর্যটনকেন্দ্রগুলো। করোনার কারণে রাঙামাটি জেলার পর্যটন স্পটগুলো গত ৩১ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে।

এদিকে, পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় মারাত্মক অর্থ সংকটে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। আয় রোজগার না থাকায় অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম কষ্টে দিন কাটচ্ছেন।

বাঘাইছড়ির সাজেকের শান্তিছায়া ও মেঘের পালকি রিসোর্টের মালিক মো. সাহাবুদ্দিন এ প্রতিবেদককে বলেন, করোনায় গত ঈদের সময়ে এবং এবার ঈদে আমাদের ব্যবসা বন্ধ। এই ঈদের মৌসুমে সাজেকে প্রতিদিন শত শত জীপ, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল নিয়ে হাজারো টুরিস্ট সাজেক বেড়াতে আসতেন। এতে আমাদের দৈনিক গড়ে ৫০ হাজার টাকার মতো ব্যবসা হতো।  কিন্তু এখন কিছুই নেই।

সাজেক ইউপি সচিব বিশ্বজিৎ চক্রবর্ত্তী বলেন, প্রতিবছর ঈদের দিন থেকে শুরু করে  সাজেকে সপ্তাহব্যাপী টুরিস্টরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাজেকে আসেন । কিন্তু গত বছর থেকে করোনার কারণে সরকারি নির্দেশনা মেনে পর্যটন স্পটগুলো  বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে কোনো টুরিস্ট সাজেক ভ্রমণ করতে পারছেন না। এতে সাজেকের ব্যবসায়ীরা প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজার এলাকার হোটেল মতিমহলের স্বত্ত্বাধিকারী শফিউল আজম বলেন, গত দেড়মাস ধরে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। করোনার কারনে পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় রাঙামাটিতে কোনো টুরিস্ট আসছে না। এর ফলে প্রায় দুইমাস ধরে কয়েক লক্ষ টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে।

লকডাউনে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে স্থানীয় টেক্সটাইল ব্যবসায়ীরাও।

এই মৌসুমে মাসের পর মাস ব্যবসা বন্ধ থাকায় মাথায় হাত পড়েছে তাদের। একইভাবে করোনায় ভাটা পড়েছে রাঙামাটির  হোটেল-মোটেল ব্যবসা। ফের ব্যবসা দাঁড় করাবেন কিভাবে তা নিয়ে চিন্তিত ব্যবসায়ীরা। সে অপেক্ষায় দিন গুনছেন তারা।

রাঙামাটি শহরের তবলছড়ি এলাকার স্থানীয় টেক্সটাইল কাপড় ব্যবসায়ী অনুপম ত্রিপুরা বলেন, প্রতিবছর ঈদে রাঙামাটিতে অনেক পর্যটক ঘুরতে আসে। এতে আমাদের অনেক বেচাকেনা হয়। কিন্তু দুইবছর ধরে ঈদের মৌসুমে আমাদের ব্যবসা নেই বললে চলে।

রাঙামাটি পর্যটন নৌ-ঘাট’র ম্যানেজার রমজান আলী বলেন, কারোনার কারনে পর্যটন নৌ-ঘাটের সকল নৌযান শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। গতবার  কারোনাকালীন লকডাউনের সময় সরকারি কিছু অনুদান পেলেও এবার কোনো সহায়তা পায়নি।

তিনি বলেন, পর্যটন ঘাটের বেশ কয়েকজন বোট চালক মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি আবাসিক হোটেল বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন সেলিম বলেন,  প্রায় দুই মাস ধরে রাঙামাটির সব হোটেল মোটেল ও টুরিস্ট বোট বন্ধ রয়েছে। এতে আমাদের অনেক কর্মচারিকে বাধ্যতামূলক ছুটি দিতে হয়েছে। গত বছর করেনাকালীন সময়ে সরকারিভাবে বেশ কিছু সহায়তা পেলেও এবার এখনো কোনোকিছু পাইনি। পর্যটন ব্যবসা বন্ধ থাকায় কয়েকশ কোটির টাকার ক্ষতি হচ্ছে।

রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তাপস রঞ্জন ঘোষ বলেন, করোনার মহামারীর কারনে রাঙামাটির পুলিশ পলওয়েল পার্কসহ সব পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। কোনো পর্যটক টুরিস্ট স্পটগুলোতে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন সজাগ রয়েছে।