• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২১, ১০:৪২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৫, ২০২১, ১০:৪২ পিএম

ভিক্ষের টাকায় ভালোবাসার নজির স্থাপন

ভিক্ষের টাকায় ভালোবাসার নজির স্থাপন

অভাবের তাড়নায় ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নিয়েছেন, কিন্তু নেই ভালোবাসার কমতি। আগেও ভালোবাসার পরীক্ষা দিয়েছেন। এবার করলেন নজির স্থাপন। হ্যাঁ হালিমা-আকাশ দম্পতির ভালোবাসা দেখে উচ্ছ্বসিত বরিশাল নদীবন্দরর সবাই।

খেয়ে, না খেয়ে টাকা জমিয়ে একে অপরকে কিনে দিয়েছেন নতুন পোষাক। তাতে সেজেই করলেন ঈদ উদযাপন।

ঈদের দিন নতুন পোশাক পরে দু’জনে অপক্ষোয় ছিলেন দুপুরের খাবারের। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উদ্যোগে শুক্রবার (১৪ মে) নদীবন্দরে মুরগির রোস্ট ও পোলাওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা খেয়ে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার পাতারহাটের মেয়ে হালিমা ও তার স্বামী আকাশের হাত ধরে হাসিমাখা মুখে চোখে চশমা হাঁকিয়ে পায়ে হেঁটে গোটা নগর ঘুরতে বেরিয়ে পড়লেন। তবে, এর আগে গোটা দুপুরজুড়েই নতুন পোশাকে এই দম্পতির ঈদ উদযাপনের আনন্দ আলোড়ন সৃষ্টি করে গোটা নদীবন্দর এলাকায়। 

শারীরিক প্রতিবন্ধী আকাশ স্বাভাবিকভাবে কথা না বলতে পারলেও আজকের এই ঈদের দিনে নতুন পোশাকে তার আনন্দের কোনো কমতি ছিলো না। 

তার স্ত্রী হালিমা বলেন, ভিক্ষার টাহা জোমাইয়া দুইজন দুইজনের জামা কিইন্যা দিছি। আকাশ মোরে ঈদে থ্রি-পিস কিইন্যা দিছে আর মুই পাঞ্জাবি কিইন্যা দিছি আকাশে। যা গায় দিয়া ঘুরতে বাইর হইছি। আজকে পায়ে হাইট্টাই পুরা শহর ঘুরমু। তিনি  বলেন, আকাশের বাবা-মা কেউ নেই, আর তার (হালিমার) মা থেকেও নেই। একসময় আমি বরিশাল নদীবন্দরে ডিম বিক্রির কাজ করতাম। তিন বছর আগে আকাশ আর প্রেমে পড়েন এবং আমার কাছাকাছি ঘুরতেন। এরপর আমাকে (হালিমাকে) যে ভালোবাসে তার প্রমাণ দিতে একবার আকাশ অটোরিকশার চাকার নিচেও মাথা দিয়েছিলেন। এরপর ঘাটের লোকজনই আমাদের বিয়ে দেয়। বিয়ের পর আমি কিছু না করলেও আকাশ ভিক্ষা করেন। যা দিয়ে তাদের দু’জনের পেট চলে যায়। 

হালিমা বলেন, সত্য কইতে আকাশ মোরে অনেক ভালো পায়। মোগো কোনো বাড়িঘর নাই, হ্যার লইগ্যা লঞ্চঘাডেই মোরা থাকতাছি। রমজানে সাংবাদিকরা প্রত্যেক রাইতে খাওন দেছে, যা খাইয়্যা দিন কাডাইছি। হ্যার লইগ্যা রোজায় কিছু রান্না না হরলেও এমনে দিনের বেলা এহানেই কোনো জায়গায় খাওন রান্দি। আবার টাহা থাকলে কোনো দিনে হোটেল দিয়া কিইন্যাও খাই, কোনো দিন কেই খাওন দেয়।  তিনি বলেন, বিয়ার তিন বছরে দুইড্যা বাচ্চা হইছিলো। কিন্তু দুইডাই জন্মের কয়দিন পর ঠাণ্ডা লাইগ্যা মইরা গ্যাছে। কিন্তু আকাশ মোরে এত ভালো পায় যে, ঝগড়াঝাডি হইলেও মোরে ছাইড়্যা যায় ন।’