• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২১, ২০২১, ১০:২৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২১, ২০২১, ১০:৪৮ এএম

অপচিকিৎসায় প্রাণ গেল বিধবার

অপচিকিৎসায় প্রাণ গেল বিধবার

নেত্রকোনায় অপচিকিৎসায় প্রাণ গেল শেফালি বেগম (৩৭) নামের এক বিধবা নারীর। বৃহস্পতিবার (২০ মে) খালিয়াজুরী উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। 

শেফালি বেগম ওই উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের পাঁচহাট গ্রামের বাসিন্দা ও চার সন্তানের জননী ছিলেন। 

অভিযুক্ত চিকিৎসকের নাম মানিক মিয়া। তিনি পার্শ্ববর্তী মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের কাতলা গ্রামের আমির উদ্দিন তালুকদারের ছেলে।

শেফালি বেগমের মেয়ে তৃষা আক্তার (১৯) জানান, দুই বছর আগে তার মা বাঁ স্তনের ব্যথার চিকিৎসা করাতে স্থানীয় চিকিৎসক মানিক মিয়ার কাছে যান। পরে ওই চিকিৎসক বুকে স্তন ক্যানসার হয়েছে বলে ২০ হাজার টাকা নিয়ে ব্লেড দিয়ে শেফালি বেগমের ওই স্তনের অর্ধেক অংশ কেটে ফেলেন। কাটা অংশে কিছুদিনের মধ্যেই পচন ধরে। অভাবের কারণে এর জন্য উন্নত চিকিৎসা করাতে পারেননি শেফালি বেগম। পরে স্থানীয় ও জেলা প্রশাসন শেফালি বেগমের পাশে দাঁড়ায়। খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম নিজে উদ্যোগ নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থেকে তাকে অপারেশনও করান। সেখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন শেফালি বেগম।

এদিকে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আকবর আলী মুনসীর নির্দেশে ভুয়া চিকিৎসক মানিককে আটক করা হয়। মামলা দিয়ে তাকে পাঠানো হয় কারাগারে।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পর কিছুদিন যেতে না যেতেই তার স্তনে আবারও পচন শুরু হয়। ইউএনও আরিফুল ইসলামের সহযোগিতায় চলতে থাকে নতুন করে চিকিৎসা। তবে সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায়ই হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ বন্ধ থাকায় তার চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটে। অবশেষে বৃহস্পতিবার (২০ মে) ভোরে তিনি মারা যান।

খালিয়াজুরী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম মাহমুদুল হক জানিয়েছেন, ভুয়া চিকিৎসায় শেফালির স্তন কাটার ঘটনায় মানিক মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। মামলা দিয়ে তাকে আদালতেও পাঠানো হয়। পরে তিনি জামিন পান। 

ইউএনও আরিফুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি জানার পর থেকেই উপজেলা প্রশাসন ও ব্যক্তি উদ্যোগে আমরা শেফালির পাশে দাঁড়াই। গত এই দুই বছরে আমরা তার পেছনে খাবার-দাবার ও আনুষঙ্গিক খরচ করেছি কয়েক লক্ষাধিক টাকা। তার থাকার ভালো কোনো ঘরও ছিল না। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে আমরা একটি আধা পাকা ঘর নির্মাণ করে দিয়েছি। আমরা চেষ্টা করেছি তাকে ভালোভাবে বাঁচিয়ে রাখার। কিন্তু আমরা পারলাম না তাকে বাঁচাতে।”